এই পতঙ্গ ঘিরেই পঙ্গপালের আতঙ্ক খড়্গপুর গ্রামীণে। নিজস্ব চিত্র
পাঁচটি রাজ্যের কৃষকদের আতঙ্কিত করেছে কয়েক কোটি পতঙ্গের ঝাঁক। এ বার পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুর গ্রামীণে এক ধরনের পতঙ্গ দেখে পঙ্গপালের আতঙ্ক ছড়াল। তবে অভয় দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
বুধবার খড়্গপুর ১ ব্লকের ভেটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ঘটনা। এ দিন সকাল থেকেই এলাকার শাল গাছের পাতায় ঝাঁকে-ঝাঁকে এক ধরনের পতঙ্গ দেখতে পান গ্রামবাসীরা। ঘটনাটি লোকমুখে ছড়াতে থাকে। নতুন ধরনের পতঙ্গের ছবি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় আতঙ্ক বাড়ে। বিষয়টি সরেজমিন দেখতে যান কৃষি দফতরের কর্তারা। ভেটিয়ায় গিয়েছিলেন জেলার কৃষি কর্মাধ্যক্ষ রমা গিরি, ব্লকের সহ-কৃষি অধিকর্তা পল্লব সাঁতরা, ভেটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য রোশন লামা প্রমুখ। গ্রামবাসীদের দাবি, এই পতঙ্গ আসলে পঙ্গপাল। এই পতঙ্গের আগমনে আসন্ন আমন চাষের মরসুমে বড়সড় ক্ষতি হবে বলে দাবি স্থানীয় চাষিদের। স্থানীয় সারসা গ্রামের চাষি পরিবারের সদস্য শ্যামল দাস বলেন, “এত বছর এখানে এমন পতঙ্গ দেখা যায়নি। এ বার টিভিতে যে পঙ্গপাল দেখেছি এটাও ঠিক সে ধরনের পঙ্গপাল বলেই মনে হচ্ছে। শুধু আকারে ছোট। সামনে আমন চাষের মরসুম। এমন সময়ে পঙ্গপাল হানা দিলে সব শেষ হয়ে যাবে। কৃষি দফতর দ্রুত পদক্ষেপ করুক।”
এদিন অবাধে সবুজ শালপাতা খেয়েছে পতঙ্গগুলো। বাসিন্দারা পতঙ্গের ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে দিতেই ভাইরাল হয়ে যায়। এ দিন ভেটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য রোশন লামা বলেন, “এই পতঙ্গ দেখে পঙ্গপাল বলেই মনে হচ্ছে। চাষিরা স্বাভাবিক ভাবে আতঙ্কিত। আমরা ব্লকে জানিয়েছিলাম। জেলার কৃষি কর্মাধ্যক্ষ ও কৃষি আধিকারিকেরা আসেন। ওঁদের ব্যবস্থা নিতে বলেছি।” পতঙ্গগুলো দেখে ব্লকের সহ-কৃষি অধিকর্তা পল্লব সাঁতরা বলেন, ‘‘যে পঙ্গপাল নিয়ে দেশ জুড়ে চর্চা হচ্ছে এটা সেই প্রজাতির পঙ্গপাল বলে মনে হচ্ছে না। আমাদের ধারণা বাজার চলতি কীটনাশকেই এই পতঙ্গগুলোর মোকাবিলা করা যাবে।” জেলার কৃষি কর্মাধ্যক্ষ রমা গিরি বলেন, ‘‘এখনই এগুলোকে পঙ্গপাল বলা ঠিক হবে না। এই পতঙ্গটি গঙ্গাফড়িংয়ের মতো দেখতে। তবে পাতা খেয়ে নিচ্ছে। ফলে চাষেও ক্ষতির সম্ভাবনা থাকছে। তাছাড়া এলাকায় আগে যেহেতু এমন পতঙ্গ দেখা যায়নি তাই আমরা নমুনা নিয়ে যাচ্ছি। নমুনা পরীক্ষার পরে কী ভাবে এর মোকাবিলা করা হবে তা ভাবা হবে।”
পতঙ্গের ছবি পাঠানো হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ জীববৈচিত্র পর্ষদের চেয়ারম্যান অশোক স্যান্যালের কাছে। তিনি বলেন, ‘‘এই পতঙ্গগুলো পঙ্গপাল নয়। এক ধরনের ফড়িং। বর্ষার জল পেয়ে এদের ডিম ফুটেছে। দেখতে পাওয়া পতঙ্গগুলো পূর্ণবয়স্কও নয়। সংখ্যায় প্রচুর হওয়ায় এই পতঙ্গ এখন পোলট্রি মুরগির খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়। চাষিদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy