যাত্রীশূন্য: সোমবার, দুপুর ২টো ২৫ মিনিটের খড়্গপুর-হাওড়া লোকালের মহিলা কামরা। ছবি: দেবরাজ ঘোষ
গত দু’দিনের তুলনায় সোমবার খড়্গপুর-হাওড়া শাখায় লোকাল ট্রেন চলাচল অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে। তবে এ দিন হাওড়াগামী ট্রেন কার্যত ফাঁকাই ছিল। দুর্ভোগ এড়াতে অনেকেই আর ট্রেনের পথ মাড়াননি।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে অবরোধ-বিক্ষোভের জেরেই শুক্রবার থেকে বিপর্যস্ত হয়েছে ট্রেন চলাচল। বিভিন্ন স্টেশনে চলেছে ভাঙচুরও। সোমবার সপ্তাহ শুরুর দিনেও খড়্গপুর-হাওড়া শাখায় ট্রেন যাত্রীদের চোখেমুখে ছিল আতঙ্ক। ওই শাখার ট্রেনগুলিতে যাত্রীদের ভিড়ও ছিল না। দিনের ব্যস্ত সময়েও কার্যত ফাঁকা চলেছে লোকাল ট্রেনগুলি। গত শুক্র ও শনিবার অবরোধ-বিক্ষোভে এই শাখার একাধিক স্টেশনে উত্তেজনা ছড়ায়। উলুবেড়িয়ায় ট্রেন লক্ষ করে ছোড়া হয় পাথর। জখম হন যাত্রীরা। সাঁকরাইলে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় প্যানেল। আগুন লাগানো হয় টিকিট কাউন্টার থেকে কেবিন রুমে। ভেঙে যায় সিগন্যাল পোস্ট থেকে রেলগেট।
এই পরিস্থিতিতে স্বয়ংক্রিয় নয়, হস্তচালিত পদ্ধতিতে এই শাখার কয়েকটি অংশে চালানো হচ্ছে ট্রেন। ফলে, বিপদের আশঙ্কা করছেন রেলযাত্রীরা। আতঙ্কিত যাত্রীরা খুব প্রয়োজন না হলে ট্রেনে যাতায়াত করছেন না। কমছে টিকিটের চাহিদা। লোকসানের বহর গুনছে রেল-কর্তৃপক্ষ। খড়্গপুর রেলের সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার আদিত্য চৌধুরী বলেন, “এখনও কয়েকটি অংশে লাইনে সমস্যা রয়েছে। আমরা ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা চালাচ্ছি। তবে গত দু’দিনের মতো সোমবারও স্বাভাবিক দিনের তুলনায় টিকিট বিক্রি অনেক কম হয়েছে।”
এ দিন সপ্তাহের প্রথম কাজের দিন অবশ্য ট্রেনে ভিড়ের আশা ছিল। লোকাল ট্রেন চালানোর চেষ্টাও করেছেন রেল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ভিড় নেই। এ দিন মেদিনীপুর-খড়্গপুর-হাওড়া ডেইলি প্যাসেঞ্জার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক জয় দত্ত বলেন, “মানুষের মনে একটা আতঙ্ক কাজ করছে। সকালে ব্যস্ত সময়ে ট্রেন চলেছে স্বাভাবিক। আমি নিজেও অফিসে পৌঁছতে একটি লোকাল ট্রেনে হাওড়ায় এলাম। কিন্তু ট্রেন ফাঁকা ছিল।”
আতঙ্কিত ভিন্ রাজ্যের যাত্রীরাও। ছত্তীসগঢ়ের রাইপুরের বাসিন্দা শত্রুঘ্নপ্রসাদ দুবে বলেন, “আমরা খড়্গপুর এসেছি সকালে। এখান থেকে গুয়াহাটিতে ঘুরতে যাওয়ার কথা ছিল। এখন শুনছি ট্রেনটি বাতিল। হাওড়া লাইনে নাকি গোলমাল হচ্ছে। তাই ভয়ে আর হাওড়ার দিকে যাচ্ছি না। ভাবছি গাড়ি ভাড়া করে দিঘা ঘুরে রাইপুরে ফিরে যাব।” হাওড়ার বাসিন্দা সল্টলেকের একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী স্বপন বৈদ্যের আবার বক্তব্য, “খড়্গপুর আইআইটিতে প্রশিক্ষণ নিতে এসেছিলাম। আসার সময় সমস্যা হয়নি। ফেরার পথে বিপদ হবে কি না জানি না।”
রৌরকেল্লা এনআইটির গবেষক পড়ুয়া প্রিয়াঙ্কা দাস বলেন, “গুয়াহাটিতে জরুরি সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা। যেতেই হবে। খড়্গপুরে এসে শুনলাম গুয়াহাটি যাওয়ার ট্রেন নেই। কোনরকমে ট্রেনে হাওড়া পৌঁছে বিমানে গুয়াহাটি যাব বলে ঠিক করেছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy