বুধবার বড়দিনে ঝাড়গ্রামের জঙ্গলমহল জ়ুলজিক্যাল পার্কে দর্শকদের ভিড়। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।
সীমানাবর্তী বান্দোয়ানের জঙ্গলে ঘুরে বেড়াচ্ছে বাঘিনি জ়িনত। তার নাগাল পেতে হন্যে হয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বন দফতর। তবে পাশের জেলা ঝাড়গ্রামে বড়দিনের ভিড়ে অবশ্য তার প্রভাব পড়ল না। ঝাড়গ্রামের চিড়িয়াখানা থেকে বেলপাহাড়ি, ঘাগরা, খাঁদারানি, ঢাঙ্গিকুসুম, কাঁকড়াঝোরের মতো পর্যটনস্থলগুলিতে এ দিন ছিল ঠাসাঠাসি ভিড়। পরিস্থিতি এমনই যে কাঁকড়াঝোর লাগোয়া আমলাশোলের একটি হোম স্টের কর্ত্রী সায়ন্তনী দত্ত বলছেন, ‘‘আমার নিজের ঘরটিও পর্যটকদের জন্য ছেড়ে দিতে হয়েছে। রাতের আশ্রয়ের জন্য এখন আমার তাঁবুই ভরসা!’’
পর্যটন ব্যবসায়ীদের একাংশ বাঘিনির ভয়ে বড়দিনের পর্যটনে তাল কাটার আশঙ্কায় ছিলেন। কিন্তু এ দিন ভিড় দেখে হোটেল, রিসর্ট, হোম স্টেগুলির কর্তৃপক্ষের হাসি চওড়া হয়েছে। ঝাড়গ্রাম হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শিবাশিস চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ২৫ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত জেলার সমস্ত হোটেল, হোম স্টে, রিসর্টের সব ঘর অগ্রিম বুকিং হয়ে রয়েছে। গতবারের তুলনায় এবার বেশি সংখ্যায় পর্যটক এসেছেন।’’ বেলপাহাড়ি টুরিজ়ম অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক রাহুল অধিকারী জানাচ্ছেন, বেলপাহাড়িতেও একই পরিস্থিতি। ১ জানুয়ারি পর্যন্ত কোথাও ঘর খালি নেই। পর্যটকদের গাড়ির ভিড়ে বেলপাহাড়ি ব্লক সদরের রাস্তায় এ দিন তুমুল যানজট হয়।
এ দিন ঝাড়গ্রামের জঙ্গলমহল জুলজিক্যাল পার্কে ছিল থিকথিকে ভিড়। সকালেই জেলাশাসক সুনীল আগরওয়াল চিড়িয়াখানা পরিদর্শন করে গিয়েছিলেন। চিড়িয়াখানা সূত্রের খবর, এদিন প্রবেশমূল্য বাবদ ১ লক্ষ ১৩ হাজার টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছে। ডিএফও (ঝাড়গ্রাম) উমর ইমাম জানান, বৃহস্পতিবার চিড়িয়াখানা সাপ্তাহিক বন্ধ রাখা হয়। তবে পর্যটনের মরসুমে ২৬ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার চিড়িয়াখানা খোলা থাকবে। ডিএফও বলেন, ‘‘বড়দিনে চিড়িয়াখানায় প্রচুর দর্শক এসেছিলেন।’’ কলকাতার বাসিন্দা হেমেন সেন, কুহু রায় বলছেন, ‘‘বড়দিনের ঝাড়গ্রামে উপচে পড়া ভিড় থাকলেও বেড়ানোর মজাটাই আলাদা। শহরে পৌষ-পার্বণ মেলায় নানা ধরনের আদিবাসী পিঠে ও খাবার চেখে দেখার সুযোগ হয়েছে। সব মিলিয়ে জমজমাট আবহ।’’
এ দিন বেলপাহাড়ির জঙ্গল পাহাড়ের পিকনিক স্পটগুলিতে অবশ্য বনভোজনকারীর সংখ্যা খুবই কম ছিল। বেলপাহাড়ির বাসিন্দা পেশায় শিক্ষক শান্তনু শীট বলছেন, ‘‘পর্যটক এলেও স্থানীয়দের অনেকেই এ দিন জঙ্গল লাগোয়া এলাকাগুলিতে বনভোজন করতে যাননি। গত বছরের তুলনায় এই বার বনভোজনকারীদের সংখ্যা খুবই কম ছিল।’’ শান্তনু জানাচ্ছেন, গত বছর বড় দিনে খাঁদারানির মতো পর্যটন কেন্দ্রে বনভোজনকারীদের গাড়ির জন্য পার্কিংয়ে খুবই সমস্যা হয়েছিল। এ বছর সেখানে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা অনেকটাই ফাঁকা ফাঁকা ছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy