বিক্ষুব্ধদের হুঁশিয়ারি, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একটি মণ্ডল ভাগে দু’ভাগ করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে। নিজস্ব চিত্র।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নির্বাচনী কেন্দ্র নন্দীগ্রামে মণ্ডল বিভাজন নিয়ে চরমে উঠেছে বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ্ব। মণ্ডল সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেওয়া পর রবিবার রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখালেন চন্দ্রকান্ত মণ্ডল ও তাঁর অনুগামীরা। তাঁদের হুঁশিয়ারি, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একটি মণ্ডল ভাগে দু’ভাগ করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে। নইলে বড় আন্দোলনের পথে হাঁটবেন তাঁরা। এ নিয়ে বিজেপিকে বিঁধতে শুরু করেছে তৃণমূল। দলের মুখপাত্র তথা পূর্ব মেদিনীপুরে দলের বিশেষ দায়িত্বে থাকা কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘শুভেন্দু অধিকারীর নীতির জন্যই আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবি অবশ্যম্ভাবী।’’
নন্দীগ্রামের ১ ও ২ ব্লক মিলিয়ে বিজেপির মোট ৪টি মণ্ডল ছিল। দলীয় সংবিধান অনুযায়ী, একটি জেলা পরিষদের আসন নিয়ে একটি মণ্ডল তৈরি হয়। কিন্তু সম্প্রতি বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্ব নন্দীগ্রাম ৪ নম্বর মণ্ডলটিকে দু’ভাগে বিভক্ত করেন। যেখানে বয়াল ১ ও ২ পঞ্চায়েতের দায়িত্বে রাখা হয় পুরনো মণ্ডল সভাপতি চন্দ্রকান্তকে। খোদামবাড়ি ১ ও ২ অঞ্চল নিয়ে তৈরি নতুন মণ্ডলের দায়িত্বে দেওয়া হয় দীপঙ্কর নায়েককে। দলের এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের একাংশ। বিরোধিতা করে শনিবার দলীয় পদ থেকে ইস্তফা দেন চন্দ্রকান্ত ও তাঁর সঙ্গীরা। তাঁদের দাবি, অখণ্ড মণ্ডল তাঁদের ফিরিয়ে দিতে হবে। তার পরেও জেলা নেতৃত্ব তাঁদের বক্তব্যকে গুরুত্ব দিয়ে না দেখায় রবিবার দফায় দফায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন চন্দ্রকান্তেরা।
চন্দ্রকান্ত বলেন, ‘‘যাঁরা নতুন এসেছেন, তাঁদের জায়গা করে দিতেই মণ্ডল বিভাজন ঘটানো হয়েছে। যাঁরা সদ্য দলে যোগ দিয়েছেন, আমরা তাঁদের মেনে নিয়েছিলাম। অনেক অত্যাচার হয়েছে আমাদের উপরে। তার পরেও ওঁদের আমরা স্বাগত জানিয়েছি। ওঁদের জন্য কাজ করেছি, বিধানসভায় জিতিয়েছি, সংগ্রাম করেছি, লড়াই করেছি। কিন্তু এটা কাদের স্বার্থে করা হল? এক এক করে সব পুরনো নেতাদের কোণঠাসা করে দেওয়া হচ্ছে।’’ শুভেন্দু এ বিষয়ে জানেন কি না, সেই প্রসঙ্গে চন্দ্রকান্ত বলেন, ‘‘শুভেন্দুবাবু সব জানেন। আমি কারও নাম বলব না। কে নির্দেশ দিয়েছেন, কেন দিয়েছেন, আমরা জানি। কিন্তু যিনি অনুমোদন দিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধেই আমাদের প্রতিবাদ। শুভেন্দুবাবু দলের কোনও সাংগঠনিক পদে নেই। উনি একজন বিধায়ক। তাই যিনি পদে আছেন, তাঁকে আমি জানিয়েছি। তবে এই বিষয়ে শুভেন্দুবাবুর সঙ্গে সরাসরি কোনও কথা হয়নি। বিষয়টিতে শুভেন্দুবাবু গুরুত্ব দেবেন কি দেবেন না, সেটা ওঁর ব্যাপার। আমরা তো ওঁর কথায় আন্দোলনে নামিনি।’’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘আমরা ২৪ ঘণ্টা সময় দিচ্ছি। ওঁরা ভাবলে ভাল। না হলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামব। নন্দীগ্রাম থেকে পদ্মফুলকে আমরা হারাতে দেব না। যাঁরা এই চক্রান্ত করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আমরা বৃহত্তর আন্দোলন করব।’’
এ নিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করে কুণাল বলেন, ‘‘শুভেন্দু অধিকারী যখন যে দলে থাকেন, সেই প্ল্যাটফর্মকে ব্যবহার করে নিজের এবং পরিবারের সুবিধা আদায় করেন। আদি বিজেপির নেতা-কর্মীরা শুভেন্দুর এই ধান্দাবাজি নেতৃত্ব পছন্দ করবেন না, এটাই স্বাভাবিক।’’ পাল্টা বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তপনকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এটা দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়। নন্দীগ্রামের সাংগঠনিক বিষয়ে যা সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা রাজ্য নেতৃত্বের অনুমোদন নিয়ে হয়েছে। এই নিয়ে যদি কোনও সমস্যা হয়ে থাকে, তা দলের অভ্যন্তরে আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy