জেলা পরিষদের বরাদ্দ করা টাকা নয়ছয় হয়েছে অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছিল ২০১২ সালে। উপযুক্ত নথি পেশ করতে না-পারায় সেই মামলায় অভিযুক্ত দুই ব্যক্তিকে বেকসুর খালাস দিল আদালত। কিন্তু প্রশ্নটা উঠল, টাকাটা গেল কোথায়? আর আসল দোষীই বা কে?
জানা গিয়েছে, ২০০৯ সালে খড়্গপুর-১ ব্লকের পোড়াপাড়া প্রাথমিক স্কুল, ভুকভুকিশোল শিশুশিক্ষা কেন্দ্র ও শিরশি শিশুশিক্ষা কেন্দ্রে মিড ডে মিলের রান্নাঘর ও ভাঁড়ার ঘরের জন্য অর্থ বরাদ্দ করেছিল জেলা পরিষদ। প্রতিটি কেন্দ্রের জন্য ৬০ হাজার টাকা করে ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়। কিন্তু স্কুল পরিদর্শনে গিয়ে প্রশাসনিক কর্তারা জানতে পারেন, কাজ কিছুই হয়নি। পোড়াপাড়া স্কুলের শিক্ষক তথা গ্রাম শিক্ষা কমিটির সম্পাদক সন্তোষ মুখোপাধ্যায় ও ভেটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান মদন হাঁসদার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তৎকালীন বিডিও সুবেশ বেরা। ২০১২ সালে শুরু হয় মামলা। চলতি বছর ৩০ জুন মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক সুতনুকা নাগ উপযুক্ত তথ্য প্রমাণের অভাবে দু’জনকেই বেকসুর খালাসের নির্দেশ দেন।
অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী জগন্নাথ ঘোষ বলেন, “অভিযুক্তদের টাকা দেওয়া হয়েছিল বা তাঁরা টাকা তুলেছিলেন, এমন কোনও তথ্যই দেখাতে পারেনি প্রশাসন। তাই বেকসুর খালাসের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।” সন্তোষবাবু নিজে এ দিন দাবি করেছেন, “জানি না আমাদের নামে কেন মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছিল। আমি কোনও টাকা খরচ করিনি।” তবে কি কোনও ভাবে ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁদের। সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না তাঁরা।
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, জেলা পরিষদের বরাদ্দ করা টাকা আসে পঞ্চায়েত সমিতির মাধ্যমে। তারপর গ্রাম শিক্ষা কমিটিকে দিয়েই ওই কাজ করানোর কথা। টাকা খরচের হিসাব না দিতে পারলে স্বাভাবিকভাবেই গ্রাম শিক্ষা কমিটির সম্পাদক ও গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের উপরেই দায় বর্তায়। কিন্তু তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করা যায়নি। তাহলে টাকাটা গেল কোথায়? সিপিএমের খড়্গপুর-১ জোনাল কমিটির সদস্য প্রমানন্দ পাল বলেন, ‘‘আদালতের রায় নিয়ে বলা কিছুই থাকতে পারে না। কিন্তু টাকার তো ডানা গজায়নি। আমরা প্রশাসনিক তদন্ত দাবি করছি।’’ জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিংহ বলেন, “আদালতের নির্দেশ হাতে পেলেই উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে। টাকা কী ভাবে নয়ছয় হল, তা তদন্ত করে দেখা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy