মিলেমিশে: ঝাপেটাপুরে গণনাকেন্দ্রের সামনে তিন যুযুধান। নিজস্ব চিত্র
ভোট মিটেছে। রেলশহর ছেড়েছে টিম-পিকে। যাওয়ার আগে বলে গিয়েছে, নেতা নয়, এ বার বেটাই জিতবে!
তৃণমূলের এক সূত্রে খবর, ভোট শেষে সোমবার রাতেই ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরের সংস্থার প্রতিনিধি দল খড়্গপুর ছড়ে। খড়্গপুর ছাড়ার আগে শহরের তৃণমূল নেতৃত্বকে টিম-পিকে’র বার্তা, ভোট নিয়ে আর ভাবার কিছু নেই। কত ভোটে জয় আসবে? ওই টিমের একজনের কাছে জানতে চেয়েছিলেন এক উৎসুক তৃণমূল নেতা। ওই নেতাকে না কি শোনানো হয়েছে, ‘‘মার্জিন খুব কম হবে না। হাজার দশেকের আশপাশেই হবে।’’ মঙ্গলবার ওই নেতা বলেন, ‘‘ওরা (টিম-পিকে) সব দিক খতিয়ে দেখে নিশ্চিত হয়েছে যে, খড়্গপুরে এ বার প্রদীপ সরকারই জিতবেন। শহর ছাড়ার আগে ওরা এই পূর্বাভাসই দিয়ে গিয়েছে।’’
তৃণমূলেরই এক সূত্রে খবর, ভোটের দিন খড়্গপুরে কন্ট্রোল রুম খুলেছিল টিম-পিকে। সকাল থেকে সন্ধ্যা সেই কন্ট্রোল রুমে সক্রিয় ছিলেন ওই টিমের লোকজন। কয়েকজন শহরে ঘুরে সার্বিক পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করেছেন। বুথ-ফেরত সমীক্ষার ধাঁচে না কি সমীক্ষাও করেছেন। এক সূত্রের খবর, কোন বুথে কত ভোট পড়েছে, প্রতি ঘন্টা অন্তর সেই তথ্য চলে এসেছে ওই কন্ট্রোল রুমে। মুহূর্তে তা টিমের তথ্যভাণ্ডারে নথিভুক্ত করা হয়েছে। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে কোন দলের অনুকূলে কত ভোট যেতে পারে, দলের বুথ এজেন্ট মারফৎ সম্ভাব্য সেই তথ্যও না কি চলে এসেছে ওই কন্ট্রোল রুমে। পরে তথ্যের পর্যালোচনা হয়েছে। ওই সূত্রে খবর, খড়্গপুরের ভোটের দিকে না কি ‘বাড়তি’ নজর ছিল ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরেরও। তাঁর কাছেও না কি নির্দিষ্ট সময় অন্তর কিছু তথ্য পৌঁছনো হয়েছে।
কোন অঙ্কে জিততে পারেন প্রদীপ? মিশ্র ভাষাভাষির শহর খড়্গপুরে ভোটারদের একটা বড় অংশই অবাঙালি। গত লোকসভা ভোটেও ওই অবাঙালি ভোটের বড় অংশ বিজেপি পেয়েছিল। তৃণমূলের এক সূত্রের দাবি, এ বার ওই ভোটের ভাল অংশ প্রদীপ পাবেন। একমত টিম-পিকে'র এক সূত্রও। ওই সূত্রের দাবি, ভোটের আগে যে সব এলাকায় বিজেপির সংগঠন ভেঙেছে তৃণমূল, তারমধ্যে অবাঙালি অধ্যুষিত এলাকা অন্যতম। এর প্রভাব ভোটে পড়েছে।
খড়্গপুরে সাধারণত ভোটের হার ৭০-৭২ শতাংশের মধ্যে ঘোরাফেরা করে। উপ- নির্বাচনে ৬৮ শতাংশ ভোট পড়েছে। উপ- নির্বাচনে সাধারণ ভোটের তুলনায় খানিক কম ভোট পড়ে। ফলে, ভোটের হার খারাপ নয়। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এ বার মূলত ত্রিমুখী লড়াই হয়েছে। ফলে, প্রদত্ত ভোটের মধ্যে যে দল ৪০-৪২ শতাংশ ভোট পাবে, সেই দলই জিততে পারে। গত লোকসভা নির্বাচনে খড়্গপুরে তৃণমূল পেয়েছিল ২৯ শতাংশ ভোট। বিজেপি পেয়েছিল ৫৭ শতাংশ ভোট।
গত বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল পেয়েছিল ২২ শতাংশ ভোট। বিজেপি পেয়েছিল ৩৯ শতাংশ ভোট। তৃণমূলের পক্ষে কি ২৯ থেকে ৪০ শতাংশে পৌঁছনো সম্ভব? টিম- পিকে'র এক সূত্রের মতে, রাজনীতিতে অসম্ভব বলে কিছু নেই। ওই সূত্রের দাবি, খড়্গপুরে এ বার বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের লড়াই হয়নি! বিজেপির সঙ্গে রেলশহরের ‘বেটা’ প্রদীপ সরকারের লড়াই হয়েছে। পুরপ্রধান হয়ে যে ‘বেটা’ শহরের উন্নয়নের সব রকম চেষ্টা করেছেন।
তৃণমূল প্রার্থী প্রদীপও জেতার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। বলছেন, ‘‘শহরের মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে ভোট দিয়েছেন। মানুষের ভোটে আমিই জিতব।’’ বিজেপি প্রার্থী প্রেমচাঁদ ঝাঁয়ের খোঁচা, ‘‘ওদের (তৃণমূল) কোনও অঙ্কই মিলবে না। আমি নিশ্চিত, খড়্গপুরের মানুষ ভোটে বিজেপিকেই সমর্থন করেছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy