কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মৃতের স্ত্রী আলপনা ঘোড়ই। নিজস্ব চিত্র।
‘পুলিশ আমার স্বামীকে মেরে ফেলেছে গো। দোষী পুলিশের শাস্তি চাই’। বাড়ির উঠোনে স্বামীর নিথর দেহের সামনে এভাবেই কান্নায় ভেঙে পড়লেন আলপনা। বাবার দেহের পাশে ধুতি পরে ছলছল চোখে দাঁড়িয়েছিল বছর চোদ্দোর দিব্যেন্দু।
বৃহস্পতিবার রাতে ঘড়ির কাঁটা তখন সাড়ে ১০টা পেরিয়ে গিয়েছে। মেঠো পথ ধরে কনকপুর গ্রামে মদনের দেহ ঢুকতেই আট থেকে আশি অনেকেরই তখন চোখে জল। পুলিশ-র্যাফের কড়া নিরাপত্তায় গভীর রাতে শেষ হল মদনের শেষকৃত্য।
নাবালিকা অপহরণের ঘটনায় অভিযুক্ত ভাইপোকে না পেয়ে কাকা কালিপদ ওরফে মদন ঘোড়ইকে গত ২৬ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার করে নিয়ে যায় পুলিশ। চোদ্দো দিনের জেল হেফাজতে থাকাকালীন অসুস্থ হয়ে ১৩ অক্টোবর কলকাতার হাসপাতালে মৃত্যু হয় স্থানীয় বিজেপি কর্মী হিসেবে পরিচিত মদনের। বিজেপি করার জন্য পুলিশ মিথ্যা অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করে পিটিয়ে মেরেছে বলে অভিযোগ করে পরিবার। দোষী পুলিশের শাস্তিও দাবি করা হয়। দলীয় কর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় দোষী পুলিশের শাস্তির দাবিতে হাইকোর্টে মামলা করে রাজ্য বিজেপি। ফের দ্বিতীয় দফায় ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। আদালতের নির্দেশে মৃত্যুর ২২ দিনের মাথায় বৃহস্পতিবার ফের মদনের দেহের ময়নাতদন্ত হয়। ওই দিনই সন্ধ্যায় পরিবারের হাতে দেহ তুলে দেয় এসএসকে এম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
পুলিশি নিরাপত্তায় কলকাতা থেকে রাত পৌনে দশটা নাগাদ পটাশপুরের কনকপুর বাসস্ট্যান্ডে দেহ পৌঁছয়। আগাগোড়া দেহের সঙ্গে ছিলেন জেলার বিজেপি নেতারা। দেহ আসার খবরে কনকপুর বাসস্ট্যান্ডে প্রচুর বিজেপি কর্মী-সমর্থক জমায়েত হন। অশান্তি এড়াতে মোতায়েন ছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী, র্যাফ ও জলকামান। বিজেপি কর্মীরা প্রথমে মিছিল করতে চাইলে বাধা দেয় পুলিশ। কনকপুর বাসস্ট্যান্ডে দেহ পৌছলে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। দোষী পুলিশের শাস্তি দাবিতে স্লোগান দেন তাঁরা। পরে মিছিল করে মৃতদেহ গ্রামে নিয়ে যান বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। কনকপুর শীতলা মন্দির মাঠে মদনকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয় দলের তরফে। গভীর রাতে গ্রামের শ্মশানে মদনের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
শেষকৃত্যে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি কাঁথি সাংগঠনিক যুব মোর্চার সভাপতি অরূপ দাশ, জেলা সংগঠনের সম্পাদক কৌশিক মণ্ডল, আশিস দাস, মোহনলাল শী প্রমুখ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy