মাসখানেক আগে ঝাড়গ্রাম সফরে এসে জনসংযোগ বাড়ানোর উপর জোর দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিভিন্ন প্রকল্পের কাজেও গতি আনার কথা শোনা গিয়েছিল তাঁর মুখে। আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এ বার ধুমধাম করে হবে জঙ্গলমহল উত্সবও। ইতিমধ্যে উত্সবের চূড়ান্ত প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছে। নির্বাচনের আগে এই উত্সবকে সামনে রেখে তৃণমূল সরকার জঙ্গলমহলের মানুষের মন জয়ের চেষ্টা করবে বলেই মত জেলা রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের।
জঙ্গলমহল উত্সবের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যে মেদিনীপুরে এক বৈঠকও হয়েছে। বৈঠকে জঙ্গলমহলের জেলাগুলোর জেলাশাসক, জেলা সভাধিপতিরা ছিলেন। ছিলেন পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়নমন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের উদ্যোগেই এই উত্সবের আয়োজন হবে। প্রস্তুতি বৈঠক শেষে মন্ত্রী শান্তিরামবাবু জানিয়ে দিয়েছেন, কী ভাবে এই উত্সবকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলা যায়, সেই চেষ্টা চলছে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, উত্সবের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে ফের বৈঠক হতে পারে। ইতিমধ্যে অবশ্য খসড়া পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়েছে। কী ভাবে উত্সব সম্পন্ন হবে তার প্রাথমিক রূপরেখা চূড়ান্ত হয়েছে। রাজ্যে পালাবদলের পরে ২০১৪ থেকে জঙ্গলমহল উত্সব শুরু হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগেই এই উত্সব। এ বার চতুর্থ বর্ষ। গত তিন বছরের থেকে এ বার উত্সবের আড়ম্বর আরও বেশিই থাকবে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, এ বার রাজ্যস্তরের উত্সব সপ্তাহব্যাপী হবে। সব মিলিয়ে ৮দিনের উত্সব হওয়ার কথা। উদ্বোধনী দিন বাদেও আরও ৭ দিন উত্সব চলার কথা। সেই মতোই প্রাথমিক পরিকল্পনা হয়েছে। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের মধ্যে ২৪টি ব্লক রয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম এবং পশ্চিম বর্ধমানের মধ্যে এই ব্লকগুলো রয়েছে। ঠিক হয়েছে, ২৪টি ব্লকেই শুরুতে একদিনের
ব্লকস্তরের জঙ্গলমহল উত্সব হবে। নভেম্বরের শেষ বা ডিসেম্বরের প্রথম দিকে ব্লকস্তরের উত্সব হবে। ব্লকস্তরের উত্সব শেষে জেলাস্তরের উত্সব হবে।
জেলাস্তরের উত্সব হবে মূলত তিনটি জেলায়। পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ায়। জেলাস্তরের উত্সব হবে ১০-২০ ডিসেম্বরের মধ্যে। ঝাড়গ্রামে রাজ্যস্তরের উত্সবে সবমিলিয়ে ১৩০টি স্টল থাকবে। ৫টি প্যাভেলিয়ন থাকবে। ১৩০টি স্টলের মধ্যে ৪৫টি স্টলে বিভিন্ন প্রদর্শনী হবে। ৭০টি স্টলে হস্তশিল্পের সামগ্রী থাকবে। বিক্রিও হবে। ২৪টি ব্লকের সবমিলিয়ে ৪৫০টি লোকশিল্পের দলকে ধামসা-মাদল দেওয়া হবে। এক-একটি দলকে দু’টি করে ধামসা এবং দু’টি করে মাদল দেওয়ার কথা।
জঙ্গলমহলে যে সব সাংস্কৃতিক দল রয়েছে, লোকসংস্কৃতির সেই দলগুলো উত্সবে যোগ দেবে। রাজ্যস্তরের উত্সবে জঙ্গলমহলের সব জেলার লোকসংস্কৃতির দলেরই যোগ দেওয়ার কথা। পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া এবং বাঁকুড়া জেলার জন্য পৃথক দিন বরাদ্দ থাকবে। পাশাপাশি, রাজ্যের বিভিন্ন জেলার লোকশিল্পের দলও রাজ্যস্তরের উত্সবে যোগদান করবে। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের এক কর্তার কথায়, “ঝাড়গ্রামে যেমন জঙ্গলমহল উত্সবের রাজ্যস্তরের অনুষ্ঠান হয়, এ বারও তেমনই হবে। ডিসেম্বরের শেষ বা জানুয়ারির প্রথম দিকে হবে। শীঘ্রই দিনক্ষণ চূড়ান্ত
হবে। আশা করি, এ বারও এই উত্সব সাড়া ফেলবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy