শুভেন্দু অধিকারী। নিজস্ব চিত্র।
মানুষের জন্য কাজ করতে গেলে কোনও পদ লাগে না। লাগে না কারও ছাড়পত্র। কোলাঘাটে ‘দাদার অনুগামী’দের আয়োজনে বিজয়া সম্মিলনীতে এসে এমনই মন্তব্য করলেন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী, যা তৃণমূলের সঙ্গে তাঁর দূরত্বের জল্পনা আরও উসকে দিল। পাশাপাশি দলেরই একটি গোষ্ঠীকে এদিন ‘ভোট পাখি’ বলে কটাক্ষও করেন শুভেন্দু।
জেলায় দলীয় কোনও কর্মসূচিতে তাঁকে তেমন দেখা যায় না। তবে নিজের মতো করে জনসংযোগের কর্মসূচি চালিয়ে যেতে তিনি অক্লান্ত। দলীয় নেত্রীর ছবি ছাড়াই নিজের ছবি-সহ সেই সব কর্মসূচি পালনে তাঁর বিরুদ্ধে দলেরই একাংশ নানা সময়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। এমনকী তাঁর এ ধরনের আচরণ দলের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব তৈরিরই নামান্তর বলেও জল্পনা শুরু হয়েছে। দলে সাম্প্রতিক সাংগঠনিক রদবদলের পর ‘দাদার ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে’ বলে শুভেন্দু অনুগামীদের ক্ষোভ সেই জল্পনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। সেই প্রেক্ষিতে এদিনের মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তা ছাড়া সাংগঠনিক রদবদলের পর জেলায় যুব সংগঠনে শুভেন্দুর বিরোধী শিবির বলে পরিচিত বিধায়ক অখিল গিরির গোষ্ঠীর লোকজন গুরুত্ব পাওয়ায় ক্ষুব্ধ ‘দাদার অনুগামীরা’। ‘ভোট পাখি’ বলে আদতে সেই বিরুদ্ধ গোষ্ঠীকেই তিনি কটাক্ষ করেছেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
দেউলিয়া হীরারাম উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে এদিনের বিজয়া সম্মিলনীতে তৃণমূলের কোলাঘাট পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তপন ঘড়া, সভাপতি রাজকুমার কুণ্ডু-সহ উপস্থিত ছিলেন কোলাঘাট ব্লকের অধিকাংশ তৃণমূল নেতৃত্ব। অনুষ্ঠানে অধিকারী পরিবারের বিরুদ্ধ গোষ্ঠী বলে পরিচিত বিপ্লব রায়চৌধুরী ও তাঁর অনুগামীদের দেখা যায়নি। কানায় কানায় ভর্তি মাঠে বিকেল সাড়ে ৪ টা নাগাদ মঞ্চে উঠে প্রায় কুড়ি মিনিট বক্তৃতা করেন শুভেন্দু। বলেন, ‘‘আমি কোভিড আক্রান্ত হয়েছিলাম। কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের গেস্ট হাউসে আইসোলেশনে থেকে সুস্থ হয়েছি। কোলাঘাট আমায় নতুন জীবন দিয়েছে।’’ আরও বলেন, ‘‘লকডাউন চলাকালীন কোলাঘাট ব্লকের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি। দুর্ঘটনায় মৃত অ্যাম্বুল্যান্স চালকের পরিবার ও মৃত একজন রোগীর পরিবারকে সাহায্য করেছি।’’ এর পরেই তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমি এসব করে বলি না। বলছি কারণ কিছু ভোট পাখি লকডাউনের সময় মানুষের পাশে দাঁড়ায়নি। তারা শুধু সজনেগাছি বাজারে সস্তার মাস্ক বিলি করেছে। আমি কোনও রাজনৈতিক দলকে বলছি না। কিছু ব্যক্তি এরকম করেন। এদের থেকে দূরে থাকতে হবে। সত্যের পথে, ন্যায়ের পথে থাকতে হবে। মানুষের জন্য কাজ করতে কারও ছাড়পত্র লাগে না। কোনও পদ লাগে না।’’
উল্লেখ্য, লকডাউন পর্বে কোলাঘাটের সজনেগাছিতে মাস্ক বিলি করেছিলেন অধিকারী পরিবারের বিপরীত মেরুর নেতা বিপ্লব রায়চৌধুরীর অনুগামীরা। চলতি মাসের ৭ তারিখ ওই একই জায়গায় তৃণমূলের কোলাঘাট ব্লক সম্মেলন করেছিলেন বিপ্লব। কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন অখিল গিরি। শুভেন্দুর এদিনের মন্তব্য সম্পর্কে জানতে চেয়ে বিপ্লবকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। রামনগরের বিধায়ক তথা তৃণমূলের জেলা কো-অর্ডিনেটর অখিল গিরি বলেন, ‘‘শুভেন্দু দল বিরোধী কাজ করছেন। যেখানে সেখানে বাজে মন্তব্য করছেন। তিনি মনে করছেন তিনি একাই দলের সবকিছু। ওঁর মন্তব্যকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy