Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Inner conflict

‘দূর হটো’ রব এ বার হলদিয়ায়

হলদিয়া তৃণমূল সূত্রের খবর, হলদিয়া শ্রমিকদের একাংশ ক্ষুব্ধ শ্যামলের উপরে। 

আহত শিবনাথ। নিজস্ব চিত্র।

আহত শিবনাথ। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হলদিয়া শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০২১ ০২:২৩
Share: Save:

তৃণমূল নেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিজেপি’তে যোগদানের পর থেকেই বদলে গিয়েছে জেলা রাজনীতির সমীকরণ। প্রায় প্রতিদিনই রাজনৈতিক সংঘাত দেখছে জেলার কোনও না কোনও এলাকা। শুভেন্দুর খাসতালুক নন্দীগ্রামে বিজেপি’র সভায় উঠছে দূর হটো স্লোগান, তো পর দিন সেই স্লোগান শুনতে হচ্ছে পুরনো দলে শুভেন্দুর ‘ঘনিষ্ঠ’ নেতা তথা হলদিয়া পুরসভার প্রধান শ্যামল আদককে। ‘হেনস্থা’ হচ্ছেন আইএনটিটিইউসি’র প্রাক্তন জেলা কার্যকরী সভাপতি শিবনাথ সরকার।

শনিবার হলদিয়ায় তৃণমূলেরই শ্রমিক সংগঠনের একাংশ কর্মীর হাতে শিবনাথ হেনস্থা এবং আক্রান্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ। তিনি নিজে সে কথা অস্বীকার করলেও, বিষয়টির মান্যতা দিয়েছে তাঁর পরিবার। তবে মারধরের সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শ্রমিক সংগঠনের নেতারা।

তৃণমূল সূত্রের খবর, শনিবার হলদিয়া বন্দরের অতিথি নিবাসে বৈঠক করতে এসেছিলেন শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য নেত্রী দোলা সেন। সকাল থেকে বেশ কয়েকটি শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে তিনি বৈঠক করেন। দুপুরে শ্রমিকদের একাংশ হঠাৎই দোলার বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দিতে অতিথি নিবাসের ভেতরে ঢুকে পড়েন। শ্রমিকেরা স্লোগান দেন, ‘দোলা সেনের কালো হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও, দোলা সেন দূর হটো’। ওই সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন হলদিয়ার পুরপ্রধান শ্যামলকুমার আদক, শিবনাথ সরকার। দাবি, শ্যামলের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগরে দেন শ্রমিকেরা। স্লোগান দেন, ‘শ্যামল আদক দূর হটো’। অভিযোগ, ওই শ্রমিকেরা নেতাদের মারধরও করেন। তাতে ডান হাতে চোট পান শিবনাথ। তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় বন্দর হাসপাতালে। ঘটনার পরেই ঘটনাস্থলে আসে বিশাল পুলিশবাহিনী।

শিবনাথ অবশ্য বলেন, ‘‘এ রকম কোনও ঘটনা ঘটেনি। তৃণমূলের সঙ্গেই আমি রয়েছি। তৃণমূলের সঙ্গেই থাকব।’’ যদিও শিবনাথ সরকারের পরিবারের দাবি, উত্তেজনার পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল বৈঠকে। তখন শিবনাথকে মারধর করা হয়েছে। তার পরেই তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

উল্লেখ্য, শুভেন্দু তৃণমূলের থাকার সময় তাঁর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ছিলেন শ্যামল, শিবনাথেরা। রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, বর্তমানে শুভেন্দুর দলবদলের পরে তাঁর অনুগামীদের রাজনৈতিক অবস্থান সঙ্কটে। কারণ, বহু অনুগামী বিজেপি’তে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও পুরনো বিজেপি কর্মীরা সে নিয়ে আপত্তি প্রকাশ করেছেন। যেমন, শুক্রবারই শুভেন্দুর নন্দীগ্রামের সভায় শুভেন্দু অনুগামী তৃণমূলের খেজুরির বিধায়ক রণজিৎ মণ্ডলের বিরদ্ধে স্লোগান দিয়েছিলেন বিজেপি কর্মীরা। হলদিয়া বন্দরের নেতা শ্যামলও শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। কিছুদিন আগেই তৃণমূলের একটি অনুষ্ঠানে তাঁকে তৃণমূল কর্মীরাই ‘চোর’ বলে স্লোগান দেন। এরপর থেকেই তৃণমূলের একাধিক কর্মসূচিতে শ্যামল অনুপস্থিত ছিলেন। কিছুদিন আগে পুর কাউন্সিলরদের নিয়ে তৃণমূলের দলীয় বৈঠকেও গরহাজির ছিলেন শ্যামল। ৭ জানুয়ারি নন্দীগ্রামে কর্মিসভাতেও যাননি। এর পরেই এ দিন তিনি দলের শ্রমিক সংগঠনের সদস্যদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন বলে অভিযোগ।

হলদিয়া তৃণমূল সূত্রের খবর, হলদিয়া শ্রমিকদের একাংশ ক্ষুব্ধ শ্যামলের উপরে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক বলেন, ‘‘শ্যামল আদক শ্রমিক নেতা হয়ে বন্দরে বেনামে ব্যবসা করছেন। মোটা টাকার বিনিময়ে মানুষকে কাজ দিচ্ছেন।’’ শ্রমিকদের একাংশের অভিযোগ, শুভেন্দু অনুগামীদের মতো কাজকর্ম চালাচ্ছেন দোলা। এ দিনের অশান্তি অভিযোগ প্রসঙ্গে দোলার বক্তব্য, ‘‘আমার বিরুদ্ধে স্লোগান কিছু শুনিনি। শ্রমিকেরা দিদির সঙ্গেই রয়েছেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Inner conflict Haldia TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy