প্রতীকী ছবি।
তবে কি দোরগোড়ায় অকাল ভোট! চিন্তায় পড়েছিলেন কালেক্টরেটের এক কর্মী। কারণ, ঊর্ধ্বতন আধিকারিকের নির্দেশ, চটজলদি ভোটের কালির কৌটোগুলি খুঁজে বের করতে হবে।
পরে ভুল ভাঙে। শুক্রবার ওই কর্মী বলছিলেন, ‘‘প্রথমটায় বুঝতে পারছিলাম না, করোনার সময়ে ভোটের কালির কী প্রয়োজন! এখন জানতে পেরেছি, ভোটের কোনও ব্যাপার নেই। ওই কালি দিয়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের হাতে দাগ দেওয়া হবে। তাই কালির কৌটোর খোঁজ পড়েছে।’’
ভিন্ রাজ্য ফেরত পরিযায়ীদের চিহ্নিত করতে হাতে ভোটের কালি লাগানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) প্রণব বিশ্বাস মানছেন, ‘‘অন্য রাজ্য থেকে যাঁরা আসছেন, তাঁদের হাতে কালি দেওয়া হবে। এ জন্য পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’ দলে দলে পরিযায়ী জেলায় ফিরছেন। প্রশাসন মনে করছে, হাতে কালি দেওয়া থাকলে পরবর্তী সময়ে তাঁদের খুঁজে পেতে সুবিধে হবে। কেউ কোয়রান্টিন ভাঙলে চিহ্নিত করাও সহজ হবে। কার কোন আঙুলে কালি পড়বে, তা-ও নির্দিষ্ট হয়েছে। ভিন্ রাজ্য ফেরত সকলকেই নিভৃতবাসে রাখা হচ্ছে। যাঁদের উপসর্গ নেই, তাঁদের গৃহ নিভৃতবাসে (হোম কোয়রান্টিন) আর যাঁদের উপসর্গ আছে, তাঁদের নিভৃতবাস কেন্দ্রে (ইনস্টিটিউশনাল কোয়রান্টিন) পাঠানো হচ্ছে।
ঠিক হয়েছে, ভিন্ রাজ্য থেকে ফিরে যাঁরা গৃহ নিভৃতবাসে যাবেন, তাঁদের ডান হাতের বুড়ো আঙুলে কালি দেওয়া হবে। আর যাঁরা সরকারি নিভৃতবাস কেন্দ্রে যাবেন, তাঁদের ডান হাতের বুড়ো আঙুলের পাশাপাশি ওই হাতের তর্জনীতেও কালি দেওয়া হবে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা মানছেন, ‘‘ভিন্ রাজ্য ফেরতদের চিহ্নিত করতেই ভোটের সময়ের মতো তাঁদের হাতের নির্দিষ্ট আঙুলে কালি লাগানো হবে।’’ প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, ভোটের কালি ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে নির্বাচন কমিশনে আবেদন জানানো হয়েছিল। কমিশন অনুমতি দিয়েছে। এরপরই রাজ্যের নির্দেশ মতো জেলায় পদক্ষেপ শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, কারওরই বাঁ হাতে কালি পড়বে না। যা কালি পড়ার ডান হাতেই পড়বে।
কিন্তু এই করোনা-কালে ভোটের কালি মিলবে কোথায়! সর্বত্রই তো মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ারের ভিড়! কালেক্টরেটের এক কর্মী বলছিলেন, ‘‘ভোটের কালি খোলাবাজারে বিক্রিই হয় না। বরাত দিয়ে আনাতে হয়।’’ অনেক খুঁজে মেদিনীপুর কালেক্টরেটের এক ‘সেল’ থেকে বৃহস্পতিবার ওই কালির ৬৭টি কৌটো পাওয়া গিয়েছে। গত লোকসভা ভোটের সময় ওই ‘সেল’ খোলা হয়। ভোটের কালির দশ মিলিমিটারের একটি কৌটো খুললে গড়ে ৫০০ জনের হাতে কালির দাগ পড়তে পারে। আপাতত, ৪২টি কৌটো খড়্গপুর স্টেশনে পাঠানো হয়েছে। ভোটের কালির রং বেগুনি। আঙুলে লাগানোর পরে তা রং বদলে কালচে-বাদামি হয়ে যায়।
শুধু পরিযায়ী শ্রমিক নন, ভিন্ রাজ্য থেকে যাঁরা আসছেন, তাঁদের সকলকে এই কালি দিয়ে চিহ্নিত করা হবে। শুধু ট্রেন নয়, যাঁরা বাসে বা গাড়ি ভাড়া করে আসছেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে। নতুন করে যাঁরা আসবেন, তাঁদের জেলার প্রবেশ পথেই এই কালি দিয়ে দেওয়া হবে। আর যাঁরা ইতিমধ্যে এসে গিয়েছেন, বাড়িতে বা নিভৃতবাস কেন্দ্রে রয়েছেন, ধাপে ধাপে তাঁদেরও আঙুলে কালি লাগানো হবে। এখন ফেরার দিনই পরিযায়ীদের লালারসের নমুনা সংগ্রহ সম্ভব হচ্ছে না। জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘হাতে কালি থাকলে ভিন্ রাজ্য ফেরতদের খুঁজে পেতেও সুবিধে হবে। প্রয়োজনে কোয়রান্টিন থেকেই নমুনা সংগ্রহ করা যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy