Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Indigenous

কুড়মিদের দাবির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতির কাছে আদিবাসীরা

সোমবার বিকেলে ওই সংগঠনের ঝাড়গ্রাম জেলা পারগানা ঢাঙ্গা হাঁসদার নেতৃত্বে পাঁচজনের প্রতিনিধি দল রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে দেখা করে ১২ দফা দাবি সনদ দেন।

An image of  a group in front of Rastrapati Bhavan

রাষ্ট্রপতি ভবন চত্বরে ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহলের প্রতিনিধি দল। সোমবার বিকেলে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২৩ ০৮:০৬
Share: Save:

পশ্চিমবঙ্গে পৃথক সাঁওতালি শিক্ষা পর্ষদ গঠন-সহ নানা দাবিতে রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হল ‘দিশম পারগানা’ বাদল কিস্কুর নেতৃত্বাধীন ‘ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল’। কুড়মিদের জনজাতি তালিকাভুক্তির বিরোধিতাও করেছে সংগঠনটি। রাষ্ট্রপতিকে জানানো হয়েছে, কুড়মিরা জনজাতির স্বীকৃতি পেলে চিরাচরিত সংরক্ষণের আওতায় থাকা আদিবাসীরা চরমভাবে বঞ্চিত হবেন।

সোমবার বিকেলে ওই সংগঠনের ঝাড়গ্রাম জেলা পারগানা ঢাঙ্গা হাঁসদার নেতৃত্বে পাঁচজনের প্রতিনিধি দল রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে দেখা করে ১২ দফা দাবি সনদ দেন। কুড়মিদের আদিবাসী তালিকাভুক্তির দাবির কঠোর বিরোধিতার কথাও জানিয়েছে সংগঠনটি। রাষ্ট্রপতিকে তাঁরা জানিয়েছেন, কুড়মিরা আদতে ক্ষত্রিয়। তাঁরা কোনও মতেই আদিবাসী হতে পারেন না। কুড়মিদের দাবির বিরোধিতা করে সোমবারই ১২ ঘন্টা বাংলা বন্‌‌ধের ডাক দিয়েছিল ‘আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযান’ নামে একটি সংগঠন। ঝাড়গ্রামে তার মিশ্র প্রভাব পড়ে।

গত লোকসভা ভোটে বিরবাহা সরেন টুডু ঝাড়গ্রাম কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী হতেই ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহলে বিভাজন দেখা যায়। তারপর থেকে বাদল কিস্কুর নেতৃত্বাধীন ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল এবং নিত্যানন্দ হেমব্রমের নেতৃত্বাধীন ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল পৃথক কর্মসূচি করছে। বাদলদের দাবি, সামাজিক সংগঠনে তাঁরা রাজনীতির অনুপ্রবেশের বিরোধী। অন্য দিকে, নিত্যানন্দদের সংগঠনের ‘পনত পারগানা’ (রাজ্যের প্রধান) পদে হয়েছেন রবিন টুডু যিনি রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদকও। তাঁর স্ত্রী বিরবাহা সরেন টুডু জেলা তৃণমূলের চেয়ারপার্সন।

কুড়মিরা জনজাতি তালিকাভুক্তির দাবিতে জঙ্গলমহল জুড়ে আন্দোলন করছেন। এখন চলছে ‘ঘাঘর ঘেরা’- রাজনৈতিক জনপ্রতিনিধিদের ঘেরাও। এমন আবহে মৌন রয়েছেন রবিনরা। তবে ঢাঙ্গা হাঁসদারা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে তাঁদের দীর্ঘদিনের দাবিসমূহের সঙ্গে কুড়মি প্রসঙ্গে অবস্থানও জানিয়েছেন। সূত্রের খবর, সোমবার বিকেলে ঢাঙ্গার সঙ্গে রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়েছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টা তথা মানিকপাড়া কলেজের অধ্যাপক রাজীব মুর্মু, সংগঠনের জেলা গডেৎ সমায় হাঁসদা, জগ গডেৎ গৌতম সরেন এবং সদস্য পালহান সরেন। গত বিধানসভা ভোটে বিনপুরে বিজেপির টিকিটে লড়ে হেরেছিলেন পালহান। পরে বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দলে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। তারপরেও ঝাড়গ্রামের বিজেপি সাংসদ কুনার হেমব্রমের কর্মসূচিতে ইতিপূর্বে পালহানের উপস্থিতি নিয়ে গুঞ্জন ওঠে। তবে পালহানের দাবি, তিনি এখন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গেই রয়েছেন।

ঢাঙ্গা বলছেন, ‘‘রাষ্ট্রপতি আমাদের সঙ্গে মাতৃভাষা সাঁওতালিতে কথা বলেছেন। আমাদের দাবি ও আবেদন বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছেন। বছরের শেষে আমাদের সংগঠনিক সম্মেলনে আসবেন বলে আশ্বাসও দিয়েছেন।’’ ঢাঙ্গার দাবি, রাজ্য সরকার সাঁওতালি শিক্ষার বিষয়ে উদাসীন। তাই রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে কেন্দ্রের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। ঢাঙ্গা জুড়ছেন, ‘‘আমরাই আদি পারগানা মহল, সেটাও রাষ্ট্রপতির কাছে ব্যাখ্যা করেছি।’’ রবিন টুডুর পাল্টা কটাক্ষ, ‘‘ওদের সংগঠন বৈধ নয়। কেউ বেরিয়ে পাল্টা সংগঠন দাবি করলে তার বাস্তবতা নেই। ওরাও তো সামাজিক সংগঠনের নাম করে বিজেপির হাত ধরে আছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Indigenous Draupadi Murmu
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE