Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
IIT

রাস্তা নয়া প্রযুক্তিতে, পূর্তের পাশে আইআইটি

আপাতত ‘পাইলট প্রজেক্ট’ খড়্গপুরে এই পদ্ধতিতে রাস্তা তৈরি হচ্ছে।  এই পদ্ধতি কার্যকর হলে অন্য জায়গাতেও রাস্তা তৈরিতে এই নতুন পদ্ধতি ব্যবহার করবে পূর্ত দফতর।           

নতুন পদ্ধতিতে তৈরি হচ্ছে রাস্তা। নিজস্ব চিত্র

নতুন পদ্ধতিতে তৈরি হচ্ছে রাস্তা। নিজস্ব চিত্র

কৌশিক ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:১৬
Share: Save:

বিটুমিন পুড়িয়ে রাস্তা তৈরি করার ক্ষেত্রে পরিবেশ আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। পুরনো এই পদ্ধতির বিকল্প ব্যবস্থা নিতে সাদা কংক্রিটের রাস্তা (হোয়াইট টপিং) তৈরি করছে রাজ্য পূর্ত দফতর। আপাতত ‘পাইলট প্রজেক্ট’ খড়্গপুরে এই পদ্ধতিতে রাস্তা তৈরি হচ্ছে। এই পদ্ধতি কার্যকর হলে অন্য জায়গাতেও রাস্তা তৈরিতে এই নতুন পদ্ধতি ব্যবহার করবে পূর্ত দফতর।

খড়্গপুর শহরের উপকন্ঠে মকরামপুরগামী রাজ্য সড়কের মধ্যে বারবেটিয়া থেকে বেনাপুর পর্যন্ত ১ কিলোমিটার অংশে ওই পাইলট প্রকল্পের কাজ চলছে। পূর্ত দফতরের আধিকারিক শ্রীকুমার ভট্টাচার্য বলেন, “নতুন পদ্ধতি রাস্তা তৈরি কতটা সফল হবে তা জানতেই খড়গপুর আইআইটির সঙ্গে যৌথভাবে একটি পাইলট প্রজেক্ট শুরু করা হয়েছে। আপাতত খড়গপুর বাইপাসে এই পদ্ধতিতে কাজ হচ্ছে।”

পূর্ত দফতরের আধিকারিকদের দাবি, ‘হোয়াইট টপিং’ পদ্ধতি সম্পূর্ণ পরিবেশ-বান্ধব এবং অনেক বেশি টেঁকসই। রাস্তায় গর্ত প্রায় হয় না বললেই চলে। ফলে, দুর্ঘটনার সম্ভাবনাও কম থাকবে। ইতিমধ্যে মহারাষ্ট্রের পুণেতে এই পদ্ধতিতে রাস্তা তৈরি হচ্ছে। বেঙ্গালুরুতে একই পদ্ধতিতে রিং-রোডও তৈরি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পূর্ত দফতরের খড়্গপুরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার অম্বিকা পাত্র বলেন, “ঢালাই রাস্তা পিচের থেকে শক্তিশালী। এই পাইলট প্রকল্পের ক্ষেত্রে এম-৪০ কংক্রিট, ফাইবারের মতো কিছু উপকরণ ব্যবহার করা হচ্ছে। পূর্ব ভারতের মধ্যে এখানেই প্রথম এমন রাস্তা হচ্ছে।”

পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই রাস্তা গড়ার ক্ষেত্রে খড়্গপুর আইআইটি প্রযুক্তিগত দিক থেকে সাহায্য করছে। পুরনো বিটুমিন রাস্তার ওপরেই কংক্রিটের আস্তরণ দেওয়া হচ্ছে। রাস্তার সমতা বজায় রাখার জন্য পিচের আস্তরণের একাংশ তুলে ফেলা হচ্ছে। কংক্রিটের ঢালাই প্রায় ৮ ইঞ্চি পুরু হচ্ছে। আইআইটির বিশেষজ্ঞেরা জানান, উষ্ণতা, যানবাহনের চাপ, আর্দ্রতার ওপরে কোনও রাস্তার ক্ষয় নির্ভর করে। এই কংক্রিট রাস্তার নকশা তৈরির সময়ে সেই বিষয়গুলি মাথায় রাখা হয়েছে। রাস্তার প্রতি ১ মিটার অন্তর প্যানেল কেটে দেওয়া হয়েছে। রাস্তার শেষে লোহার বার দেওয়া হচ্ছে। এর পরেও খড়্গপুরের মাটিতে নতুন এই পদ্ধতি কতখানি গ্রহণযোগ্য হবে তা জানতে সাদা কংক্রিটের আস্তরণের তলায় ‘সেন্সার’ বসানো হয়েছে। তাতে গাড়ির চাপ, দিন-রাতের তাপমাত্রা, ঋতু পরিবর্তনে মতো তথ্য রাখা থাকছে।

এই পাইলট প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা আইআইটির অধ্যাপক স্বাতী মৈত্র বলেন, “খড়্গপুরে সাধারণত বিটুমিন রাস্তা ৩-৪ বছরেই বেহাল হয়ে যায়। তবে আমরা যে নকশা তৈরি করে রাস্তা গড়ছি তাতে সেটি অন্তত ২০ বছর স্থায়ী হবে বলে আশা। ভবিষ্যতে এই পদ্ধতিতে যাতে আরও উন্নতি প্রযুক্তি ব্যবহার করা যায় সে কথা মাথায় রেখে এখন সেন্সারের মাধ্যমে নানা তথ্য নিয়ে রাখা হচ্ছে।’’

(সহ প্রতিবেদন: দেবমাল্য বাগচী)

অন্য বিষয়গুলি:

IIT PWD
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy