শিকার করা গোসাপ। নিজস্ব চিত্র
উদ্দেশ্য ছিল শিকার উৎসবে বন্যপ্রাণী শিকার একেবারেই শূন্যতে নামিয়ে আনা। সে জন্য লাগাতার প্রচার থেকে অন্যন্য তৎপরতাও ছিল আঁটোসাটো। গত শনি ও রবিবার শিকার উৎসবের প্রথম দু’দিন সেই তৎপরতার সাফল্যে খুশি ছিলেন বন দফতরের আধিকারিকরা। কিন্তু তাল কাটল তৃতীয় দিন। বন দফতর ও রেলের কড়া নজরদারি এড়িয়ে জঙ্গল থেকে দুটি গোসাপ ও বেশ কিছু পাখি শিকার করে আনল পাঁচ আদিবাসী। বিষয়টি জানার পর দুটি স্বেছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা ওই শিকারিদের পাকড়াও করে তুলে দেন জিআরপির হাতে। পাঁশকুড়ার জিআরপি ওই শিকারিদের তুলে দেয় বন দফতরের হাতে। বন্যপ্রাণী শিকারের অপরাধে গ্রেফতার করা হয় ওই পাঁচ শিকারিকে।
বন দফতর সূত্রে খবর, ধৃত পাঁচ জন ঝাড়খণ্ডের সিংভূম জেলার বাসিন্দা। মঙ্গলবার ধৃতদের আদালতে তোলা হলে পাঁচজনের মধ্যে চারজনকে সাত দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। একজন নাবালক হওয়ায় আজ, বুধবার তাকে তমলুক জুভেনাইল আদালতে তোলা হবে।
পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া জেলার পাশাপাশি প্রতিবেশী রাজ্য ওড়িশা ও ঝাড়খণ্ড থেকে সেঁদরা পরবের দু’দিন আগে থেকে পাঁশকুড়া ও কোলাঘাট এলাকায় ভিড় জমাতে থাকেন আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ। হাউর, ক্ষীরাই,পাঁশকুড়া, ভোগপুর, কোলাঘাট স্টেশনে রাত কাটিয়ে পরের দিন সকালে ক্ষীরাই সেচ খাল, মেদিনীপুর ক্যানাল, কংসাবতী নদী, রূপনারায়ণ নদ লাগোয়া জঙ্গলগুলিতে এঁরা পশু শিকার করেন। পার্শ্ববর্তী হাওড়া জেলার বাগনান, দেউলটি, ঘোড়াঘাটা এলাকাতেও এঁরা শিকার করেন।
সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্ট উৎসবের নামে শিকার বন্ধ করার নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশকে সামনে রেখে এ বছর শিকার বন্ধ করতে ব্যাপক প্রচার অভিযান চালায় বন দফতর। পূর্ব মেদিনীপুরের ডিএফও এবং এডিএফওর নেতৃত্বে পাঁশকুড়া ও কোলাঘাটের জঙ্গল লাগোয়া প্রায় ৪৫টি গ্রামে মাইক প্রচারের পাশাপাশি শিকার বন্ধে সচেতনতায় প্রচুর পোস্টার লাগানো হয়েছিল বন দফতরের পক্ষ থকে। বন দফতরের এই উদ্যোগে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় রেলও। রেল স্টেশনগুলিতেও শিকার বন্ধে পোস্টার লাগানো হয়। এছাড়াও বন দফতরের উদ্যোগে তৈরি করা হয় ‘অ্যান্টি পোচিং টিম’ বা চোরাশিকার রোধকারী দল। সোমবার রাতে ওই দলের সদস্যরা নজরদারির কাজ শেষ করে ফিরে যাওয়ার পর দুটি গোসাপ ও বেশ কিছু পাখি শিকার করে পাঁচ শিকারিকে ক্ষীরাই স্টেশনে আসতে দেখেন স্থানীয় লোকজন। শিকার বন্ধ করতে প্রচারের বিষয়টি জানা থাকায় তাঁরা খবর পৌঁছে দেন এলাকায় কর্মরত একটি স্বেছাসেবী সংস্থার কাছে। এরপরই ওই শিকারিদের গ্রেফতার করা হয়।
জেলার অতিরিক্ত মুখ্য বনাধিকারিক বলরাম পাঁজা বলেন, ‘‘আমরা যথেষ্ট সতর্কই ছিলাম। তার মধ্যেও এই শিকার অনভিপ্রেত। তবে দু’বছর আগে এলাকায় যে ভাবে গোসাপ শিকার হত তার তুলনায় এটা কিছুই নয়। তবে আমাদের নজরদারি আরও বাড়ানো হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy