Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪

হাসপাতালের কর্মীরাই রোগী দেখেন

ভরসা এজন মাত্র চিকিৎসক। তিনি যেটুকু সময় থাকেন ততক্ষণ মেলে হাসপাতালের আউটডোর পরিষেবা। কিন্তু সেই চিকিৎসকও আবার অধিকাংশ দিনই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে থাকেন না বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।

রোগী দেখছেন কর্মীরা।

রোগী দেখছেন কর্মীরা।

সুুব্রত গুহ
কাঁথি শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৬ ০০:০০
Share: Save:

ভরসা এজন মাত্র চিকিৎসক। তিনি যেটুকু সময় থাকেন ততক্ষণ মেলে হাসপাতালের আউটডোর পরিষেবা। কিন্তু সেই চিকিৎসকও আবার অধিকাংশ দিনই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে থাকেন না বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। ফলে টানা ১২ বছর ধরে বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে কাঁথির কুলবেড়িয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ইনডোর পরিবেষা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঁথি-১ ব্লকের হৈপুর, বাদলপুর অঞ্চলের স্থানীয় বাসিন্দারা কুলবেড়িয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপর নির্ভরশীল। এক সময় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ছয় শয্যার ইনডোর পরিষেবা চালু ছিল। অথচ ২০০৪ সাল থেকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ইনডোর পরিষেবা পুরোপুরি বন্ধ। গত বছর ডিসেম্বর মাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিঘায় এসে ১০ শয্যা বিশিষ্ট কুলবেড়িয়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নতুন ভবনের উদ্বোধন করেছিলেন। কিন্তু তারপর সেই ভবন চালু করা যায়নি। তালাবন্দি অবস্থায় পড়ে রয়েছে কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি ১০ শয্যার ঝাঁ চকচকে নতুন ইনডোর ভবন।

হাসপাতালের সামনে রোগীর লাইন । —নিজস্ব চিত্র

বিকেল হতে না হতেই স্বাস্থ্যকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দূর থেকে আসা রোগী ও প্রসূতিদের সবথেকে বেশি সমস্যায় পড়তে হয়। কুলবেড়িয়ার গৌরী পট্টনায়ক, সুরুন্ডিয়ার রীনা দে ও কাঁচলাগেড়িয়া গ্রামের কাজল চন্দর অভিযোগ, ‘‘অনেক সময়ই প্রসূতিদের এখানে এসে ফিরে যেতে হয়। সেটা তো খুব সমস্যার। যদি শেষ পর্যন্ত কাঁথি হাসপাতালেই যেতে হয়, তাহলে আর এই হাসপাতাল থেকে লাভ কী?’’ হৈপুর পঞ্চায়েতের প্রাক্তন তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য ও কুলবেড়িয়া হাসপাতাল বাঁচাও কমিটির নেতা কবীর খানের অভিযোগ, ‘‘কাঁথি-এগরা রাস্তার ধারে এটাই একমাত্র হাসপাতাল। রাস্তায় দুর্ঘটনা হলে আহতদের চিকিৎসা তো দূর, সামান্য অক্সিজেন সিলিন্ডারও মেলে না। অনেক সময় তো এখান থেকে ফিরিয়ে দেওয়ার পর মাঝ রাস্তাতেই অনেকে মারা যান।’’ আবার চিকিৎসকের পরিবর্তে হাসপাতালের কর্মীরাও রোগী দেখেন বলে অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা। উদ্বোধন হয়েও বন্ধ হয়ে পড়ে থাকা ১ ০শয্যার ইনডোর পরিষেবা চালু করার দাবিতে এলাকাবাসীদের নিয়ে পুজোর পর আন্দোলনে নামার কথাও জানান কবীর খান।

একজন মাত্র চিকিৎসককে দিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের আউটডোর চললেও অধিকাংশ দিনই ওই চিকিৎসককে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। সমস্যা যে রয়েছে, সেটা মানছে হাসপাতালের একমাত্র চিকিৎসক রাধাবিনোদ দাসও। তবে তাঁর সাফাই, ‘‘স্বাস্থ্যকেন্দ্রের আউটডোর সামলানো ছাড়াও এলাকায় স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজ করতে হয়। নানা বৈঠকে হাজির থাকতে হয়। ফলে হাসপাতালে ওই সময় অন্য কোনও চিকিৎসক থাকেন না। তবে অভিজ্ঞ কর্মীরাই রোগীদের না ফিরিয়ে দিয়ে ওষুধ দিয়ে থাকেন।’’ সমস্যা প্রসঙ্গে সিএমওএইচ (নন্দীগ্রাম) তুষার আচার্য বলেন, ‘‘সমস্যার কথা শুনেছি। দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করা হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Hospital Doctors
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy