Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

সোনা তালুকে আঁধার

সোনা মহার্ঘ। লোকের হাতেও টাকা নেই। ধনতেরাসের বাজারে আনন্দবাজারএ বার ছবিটা এক্কেবারে উল্টো। সোনার ঊর্ধ্বমুখী দাম, সার্বিক আর্থিক মন্দায় মধ্যবিত্তের পকেটে টান— সব মিলিয়ে সোনার কারিগরেদের হাতে অন্যবারের তুলনায় সিকিভাগ কাজও।

সোনার কাজ নেই। মোবাইলে ডুবে কারিগরেরা। ছবি: কৌশিক সাঁতরা

সোনার কাজ নেই। মোবাইলে ডুবে কারিগরেরা। ছবি: কৌশিক সাঁতরা

অভিজিৎ চক্রবর্তী
দাসপুর শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৯ ০০:০১
Share: Save:

সোনা-রুপোর কয়েন, সোনার কানের দুল, আংটি, নাকছাবি, রুপোর লক্ষ্মী-গণেশ। ধনতেরাসের আগে ব্যস্ততার অন্ত থাকে না ঘাটাল-দাসপুরের সোনা তালুকে। দম ফেলার ফুরসত পান না কারিগরেরা।

এ বার ছবিটা এক্কেবারে উল্টো। সোনার ঊর্ধ্বমুখী দাম, সার্বিক আর্থিক মন্দায় মধ্যবিত্তের পকেটে টান— সব মিলিয়ে সোনার কারিগরেদের হাতে অন্যবারের তুলনায় সিকিভাগ কাজও।

ঘাটাল-দাসপুর জুড়ে সোনার কাজের রমরমা বহু দিন ধরেই। সোনার খুচরো ও পাইকারি দু’ধরনের ব্যবসাই এখানে চলে। দক্ষ কারিগরের জন্য দেশ জোড়া সুনাম রয়েছে ঘাটাল-দাসপুরের। নোটবন্দিতে সোনার ব্যবসায় বড় ঘা লেগেছিল। সেই ক্ষত সামলাতে না সামলাতেই সোনার আকাশছোঁয়া দাম আর মন্দার সাঁড়াশি আক্রমণে সোনা তালুকে এখন আঁধার। বেশ কয়েক বছর ধরেই ধনতেরাসের সময় সোনার কেনাকাটার চল হয়েছে এই বঙ্গদেশেও। সোনার দোকানগুলিতে রকমারি ছাড়, অফারের সুযোগ নিতে অবাঙালিদের পাশাপাশি অনেক বাঙালিও এই সময়টায় সোনার গয়না বা গিনি কেনেন। ধনতেরাসের সময়ে কম বাজেটের ছোট জিনিসের চাহিদা থাকে। সেই মতো এই সোনা তালুকে কাজের বরাতও আসে। কিন্তু এ বছর কার্যত সোনার জিনিস তৈরির তেমন অর্ডারই আসেনি। রুপোর জিনিসের সামান্য চাহিদা রয়েছে।

দাসপুর-সোনাখালির অধিকাংশ ব্যবসায়ীর অভিজ্ঞতা, এমনিতে বিয়ে বা ছোটখাটো অনুষ্ঠানে সোনা কেনার প্রবণতা নোটবন্দির পর থেকেই কমেছে। দাসপুরের সোনাখালির এক ব্যবসায়ী কাঞ্চন বেরা বলছিলেন, “প্রথম ধাক্কাটা এসেছিল তিন বছর আগে, নোটবন্দির সময়। এখন তো আবার মন্দা। তার উপরে সোনার দাম রেকর্ড বেড়েছে। এই সময় কে সোনা কিনবে?” দিল্লির স্বর্ণকার সেবা সমিতির পক্ষে কার্তিকচন্দ্র ভৌমিকও জানালেন, সোনা ব্যবসায় এক্সাইজ ডিউটি, নোটবন্দি তার উপর ইমপোর্ট ডিউটির (সাড়ে বার শতাংশ হারে ট্যাক্স) চাপে ব্যবসার করুণ দশা। লক্ষ লক্ষ স্বর্ণশিল্পী কর্মহীন হয়ে পড়েছেন।

এই এলাকার যে সব সোনার কারিগর ভিন্‌ রাজ্যে এই সময়টায় ব্যস্ত থাকেন, তাঁদেরও অনেকের হাতে কাজ নেই। কারিগরদের একটা বড় অংশ অন্য বছর দুর্গাপুজোতেও বাড়িতে ফেরেন না। কিন্তু এ বার ঘাটাল-দাসপুর এলাকার প্রায় তিরিশ শতাংশ কারিগর বাড়িতেই দিন কাটাচ্ছেন।

দাসপুরের কারিগর উত্তম ভৌমিকের আক্ষেপ, “অন্যবার ছোট ছোট অনেক কাজের অর্ডার পেতাম। এ বার তেমনটা হচ্ছে না।” জোতঘনশ্যামের সুফল দাসের কথায়, “দিল্লিতে কাজ করি। দাম বাড়ার পরে কাজ কমেছে। মাস দুয়েক আগে

বাড়ি এসেছিলাম। মালিক আর ডাকেনি। দীপাবলি-ধনতেরাসের মরসুমে বাড়িতে বসে কাটাতে হবে কখনও ভাবিনি।”

অন্য বিষয়গুলি:

Dhanteras Goldsmith Gold
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy