প্রতীকী চিত্র।
৩১ বছরের আইনি লড়াইয়ের পর মাদক মামলায় নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করলেন হলদিয়ার এক বৃদ্ধা। জীবনের অর্ধেক সময় মামলা লড়ে আজ সর্বস্বান্ত বৃদ্ধা। সরকারকে সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। তমলুক জেলা আদালতে মঙ্গলবার বিচারকের রায় শোনার পর বৃদ্ধা পরমা মাজি বলে ওঠেন, ‘‘এ বার শান্তিতে মরতে পারব।’’
পুলিশ সূত্রে খবর, মাদক রাখা ও কেনাবেচার অভিযোগে ১৯৮৯ সালের ৭ এপ্রিল হলদিয়ার দুর্গাচক এলাকার বাসিন্দা পরমা মাজিকে গ্রেফতার করা হয়। তখন তাঁর বয়স ছিল ৩৮। ওই ঘটনার কিছুদিন আগে মহিলার স্বামী পান্নালাল মাজি নিখোঁজ হয়ে যান। সাত বছর পর জেলা প্রশাসন তাঁর স্বামীকে মৃত ঘোষণা করে। মাদক মামলায় সাড়ে ৪ বছর জেলবন্দি থাকার পর জামিনে ছাড়া পান পরমা। অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলা ভাগ হওয়ার পর ওই মামলা মেদিনীপুর জেলা আদালত থেকে পূর্ব মেদিনীপুকে তমলুক জেলা আদালতে স্থানান্তরিত হয়।
অভিযোগ দীর্ঘ ৩১ বছরে সরকার পক্ষ মামলার কেস ডায়েরি আদালতে জমা দেয়নি। মামলার নিষ্পত্তির জন্য হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন বৃদ্ধা। হাইকোর্ট মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির নির্দেশ দেয়। মঙ্গলবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলা ও অতিরিক্ত দায়রা (তিন নম্বর) আদালতের বিচারক মৌ চট্টোপাধ্যায় এই মামলা থেকে অভিযুক্ত পরমা মাজিকে নিঃশর্ত মুক্তি দেন। পাশাপাশি তাঁকে সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন। অভিযুক্তের আইনজীবী রিতম চৌধুরী বলেন, ‘‘এই মামলা আসলে একটি মিথ্যে মামলা। সরকার পক্ষ আদালতে কেস ডায়েরি জমা দিতে পারেনি। ৩১ বছর পর মামলার রায় ঘোষণা করলেন বিচারক। আমার মক্কেলকে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়া হয়েছে।’’
ঘটনায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর আনন্দময় অধিকারী বলেন, ‘‘পরমা মাজির পরিবার সিপিএম বিরোধী ছিল। তাই তাঁকে ফাঁসানো হয়েছিল। আজ তা প্রমাণিত হল।’’ পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সিপিএম সম্পাদক নিরঞ্জন সিহির অবশ্য দাবি, ‘‘পরমা মাজি মাদক কারবারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বর্তমান সরকার পুলিশকে প্রভাবিত করে আদালতে কেস ডায়েরি জমা করেনি। তাই উনি বেকসুর খালাস হয়েছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy