Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪

‘নাম জপো’ প্রয়াত, শোকের ছায়া রেলশহরের ক্রীড়ামহলে

শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন রেলশহরের প্রাক্তন জাতীয় ক্রীড়াবিদ প্রতাপ সিংহ ওরফে ‘নাম জপো’। মঙ্গলবার সকাল ৭টা নাগাদ খড়্গপুর হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, বার্ধক্যজনিত অসুখ থেকেই তাঁর মৃত্যু হয়ছে। প্রতাপ সিংহের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ রেলশহরের ক্রীড়ামহল। হাইজাম্প ও লংজাম্পে তিনি একাধিকবার জাতীয় শিরোপা ছিনিয়ে নিয়েছেন।

প্রতাপ সিংহ। —নিজস্ব চিত্র।

প্রতাপ সিংহ। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৫ ০১:১৯
Share: Save:

শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন রেলশহরের প্রাক্তন জাতীয় ক্রীড়াবিদ প্রতাপ সিংহ ওরফে ‘নাম জপো’। মঙ্গলবার সকাল ৭টা নাগাদ খড়্গপুর হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, বার্ধক্যজনিত অসুখ থেকেই তাঁর মৃত্যু হয়ছে। প্রতাপ সিংহের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ রেলশহরের ক্রীড়ামহল। হাইজাম্প ও লংজাম্পে তিনি একাধিকবার জাতীয় শিরোপা ছিনিয়ে নিয়েছেন। এ দিন খড়্গপুরের সাউথ সাইডে তাঁর বাড়ির সামনে ভিড় জমান বহু মানুষ।

১৯২৬ সালের ১ জুন খড়্গপুরেই জন্মগ্রহণ করেন প্রতাপ সিংহ। অল্প বয়স থেকেই খেলাধুলোর প্রতি তাঁর আকর্ষণ ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কলাইকুণ্ডায় প্রধান পেন্টার হিসেবে কাজ করতেন তিনি। ১৯৪৬ সালে সেই কাজ ছেড়ে খড়্গপুর রেলের ফিটার হিসেবে যোগ দেন। এর পর থেকেই রেলের হাত ধরেই খেলায় সাফল্য পান তিনি। ১৯৫১ সালে ‘হাইজাম্প’-এ বেঙ্গল নাগপুর রেলের হয়ে জাতীয় স্তরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন। ১৯৫৮ সালে জাতীয়স্তরের খেলায় রেলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করে সেরার শিরোপা ছিনিয়ে নিয়েছিলেন প্রতাপবাবু।

রেলের কোচ, আইআইটি-র কোচ হিসেবেও দীর্ঘদিন নতুন খেলোয়াড় তৈরির কাজে যুক্ত ছিলেন তিনি। ১৯৬৮ সাল থেকেই আধ্যাত্মিক চিন্তাভাবনায় তিনি মন দেন। ‘ইশ্বর এক’- এই মতাদর্শকে সকলের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে শহরের বাড়ি বাড়িতে প্রচারও চালিয়েছেন তিনি। সকল ধর্মের মানুষকে নিজ-নিজ দেবতার নাম জপ করতে প্রচার চালাতেন প্রতাপবাবু। তাঁর মূল মন্ত্র ছিল- ‘ধ্যান মেরেমে রাখখা, নাম কোই-ভি জপো’, অর্থাৎ যার নামই জপ কর না কেন, ইশ্বর মানুষের মধ্যেই বিরাজমান। এই বাণী তিনি বাংলা, হিন্দি, ইংরেজি, উর্দু ভাষায় নিজে হাতে লিখে প্রচার করতেন। তিনি ‘নাম জপো’ নামে রেলশহরের অধিক খ্যাত ছিলেন। কয়েক বছর আগে রেল বালক বিদ্যালয়ের কাছে ‘সৎসঙ্গ অল ফেথ মিশন’ নামে একটি সংস্থা গড়ে তোলেন প্রতাপবাবু। বিভিন্ন ধর্মের মানুষের সঙ্গে বসে সপ্তাহে দু’দিন ধর্মীয় আলোচনার আসর বসাতেন ওই প্রাক্তন ক্রীড়াবিদ।

প্রতাপবাবু এক পুত্র, বউমা ও চার নাতনিকে রেখে গিয়েছেন। তাঁর পুত্র রেলে কর্মরত অমরজিৎ সিংহ বলেন, “বাবার মৃত্যুতে সমাজের অনেক ক্ষতি হয়ে গেল। তাঁর হাতে প্রতিষ্ঠিত সৎসঙ্গের কাজ যতদিন পারব, চালিয়ে যাব।” আজ, বুধবার সকালে রেল হাসপাতাল থেকে প্রয়াত এই ক্রীড়াবিদের মরদেহ গিরিময়দানে গুরুদ্বারে নিয়ে যাওয়া হবে। তারপর মন্দিরতলা শ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হবে বলে জানা গিয়েছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy