দুর্ঘটনায় একের পর এক হরিণ মৃত্যু রুখতে জঙ্গল সংলগ্ন রাস্তার ধারে বেড়া দিতে উদ্যোগী হল বন দফতর। নাইলন সুতোর জাল দিয়ে এই বেড়া দেওয়া হবে। একইসঙ্গে জঙ্গল লাগোয়া রাস্তাগুলিতে গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ করতে সচেতনতা শিবির করবে বন দফতরের রূপনারায়ণ বিভাগ। রাস্তার ধারে লাগানো হবে সাইনবোর্ডও। বন দফতরের ডিএফও অর্ণব সেনগুপ্ত বলেন, “জালের বেড়া দেওয়ার জন্য দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে। আগামী মাস থেকেই গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণে শিবির শুরু হবে। বসানো হবে সাইনবোর্ডও।”
বন দফতর সূত্রে খবর, বছর দশেক আগে বধর্মান থেকে বেশ কিছু হরিণ এনে গোয়ালতোড়ের খাপরিডাঙার জঙ্গলে ছাড়া হয়েছিল। তারপর থেকে ধীরে ধীরে হরিণের সংখ্যা বাড়তে শুরু করে। গোয়ালতোড়ের বিভিন্ন জঙ্গলে ছড়িয়ে পড়ে হরিণের দল। এখন খাপরিডাঙা সংলগ্ন কেড়ুমারা, জিরাপাড়া, সুবলবাঁদি, গাঙদুয়ারি, গোপীনাথপুর, কুমারী-সহ ১০-১২টি জঙ্গলে শতাধিক হরিণ রয়েছে। এগুলির বেশিরভাগই চিতল হরিণ। বন দফতর সূত্রে খবর, হরিণ সাধারণত জঙ্গলের ভিতরে গুল্ম জাতীয় কুড়চি, ডোঁকা ভুড়ুর প্রভৃতি গাছই বেশি খাই। এ ছাড়াও শাল গাছের পাতা সহ জঙ্গলের লতা-পাতা খেয়েই বাঁচে হরিণ।
বন দফতর সূত্রে খবর, বনাঞ্চলে পর্যাপ্ত খাবার না পেয়ে ইদানীং জঙ্গল থেকে বেরিয়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে হরিণের দল। সব মরসুমেই এই সমস্ত এলাকার খেতে নানা ধরনের সব্জি চাষ হয়। হরিণ এইসব সব্জি গাছের পাতা খেতে ভালবাসে। স্বাভাবিকভাবেই হরিণদের লোকালয়ে আসার প্রবণতা বাড়ছে। রাস্তা পার হতে গিয়েই দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে হরিণগুলি। দুর্ঘটনায় পরপর হরিণের মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বিগ্ন বন দফতরের কর্তারা। বন দফতরের হিসেব অনুযায়ী, গত এক বছরে দুর্ঘটনায় ছ’টি হরিণের মৃত্যু হয়েছে। জখম হয়েছে বহু হরিণ। জঙ্গল লাগোয়া গোয়ালতোড়-চন্দ্রকোনা রোড, পিড়াকাটা-গোয়ালতোড় ও হুমগড়-গোয়ালতোড় রাস্তায় হরিণের মৃত্যু এড়াতে লাইলনের সুতো দিয়ে জাল তৈরি করে বেড়া দেওয়া হবে বলে বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
বন দফতরের ডিএফও অর্ণব সেনগুপ্তর কথায়, “বেড়া থাকলে হরিণ মূল রাস্তায় যাওয়ার আগেই বাধা পাবে। দু’একবার বাধা পেলেই জঙ্গল থেকে বেরনোর প্রবণতা কমবে হরিণের। এরফলে দুর্ঘটনায় হরিণের মৃত্যুর সংখ্যাও কমবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy