ক্লান্ত: ফর্মের লাইনে চাষিরা। নিজস্ব চিত্র
তখন মঞ্চে রয়েছেন কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে রাজ্যের কৃষি বিষয়ক উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার। কৃষকবন্ধু প্রকল্পের ফর্ম তোলার লাইন থেকে ক্ষুব্ধ চাষিদের বলতে শোনা গেল, ‘‘এত চড়া রোদ। আর কতক্ষণ এ ভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকব!’ তারপরেই তাল কাটল অনুষ্ঠানের। অস্বস্তিতে পড়লেন মন্ত্রী। চাষিদের ক্ষোভ সামাল দিতে মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে জেলাশাসক পি মোহন গাঁধীকে চাষিদের উদ্দেশে বলতে শোনা গেল, ‘‘আপনারা একটু ধৈর্য্য ধরুন। একে একে সবাই ফর্ম পেয়ে যাবেন।’’ পরিস্থিতি দেখে রাজ্যের কৃষি বিষয়ক উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদারকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমরা দুঃখিত। আমি ব্যক্তিগতভাবে আপনাদের কাছে ক্ষমা চাইছি। এই রোদ্দুরে আপনাদের দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। এর জন্য আমাদের ক্ষমা করবেন। এটা আমাদের কাছে বাঞ্চিত নয়।’’
বুধবার মেদিনীপুরের আবাসে জেলার কৃষি ভবনের সামনে কৃষকবন্ধু প্রকল্পের ফর্ম বিলি ও চেকপ্রদানের কর্মসূচিতে এই ঘটনা ঘটে। সেখানে ছিলেন কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যের কৃষি বিষয়ক উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার, জেলা সভাধিপতি উত্তরা সিংহ, জেলা সহ- সভাধিপতি অজিত মাইতি প্রমুখ। কৃষি ভবনের সামনেই মঞ্চ করা হয়েছিল। মঞ্চের সামনে ছোট ছাউনি ছিল। ফর্ম তোলার ব্যবস্থা ছিল ছাউনির কিছুটা দূরে। চাষিদের লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে ফর্ম তুলতে হয়। মোট তিনটে লাইন হয়। এ দিন বেশ রোদ ছিল। লাইনও এগোচ্ছিল ধীর গতিতে।
চাষিদের অসন্তোষ সামাল দিতে জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ রমাপ্রসাদ গিরিকে বলতে হয়, ‘‘যাদের রোদ লাগছে তারা ছাউনির মধ্যে চলে আসুন। আপনাদের সুবিধের জন্যই আগে ফর্ম বিলি হচ্ছে। না হলে মন্ত্রীর কর্মসূচির পরে করা হত!’’ তখন ভিড় থেকে পাল্টা প্রশ্ন ওঠে, ‘‘এইটুকু তো ছাউনি। ওখানে এত লোক ঢুকবে কী করে?’’ কৃষকদের ‘শান্ত’ করার চেষ্টা করেন বিধায়ক দীনেন রায়। তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘সবাই ফর্ম পাবেন। বিকেল পর্যন্ত ফর্ম দেওয়া চলবে।’’
ফর্ম তোলার লাইনে ছিলেন কেদার দোলই, ধরনীধর দোলইতার। তাঁদের ক্ষোভ, ‘‘তীব্র রোদ মাথায় নিয়ে ফর্ম তুলতে হচ্ছে। ফর্ম তুলতে এসে কাহিল হয়ে পড়ছি! গরম বলেই এই সমস্যা হচ্ছে। বড় ছাউনি কিংবা কোনও অফিসের মধ্যে ফর্ম দেওয়ার ব্যবস্থা থাকলে ভাল হত। ফর্ম তুলতে এসে এত কষ্ট হবে ভাবিনি!’’
এ দিনের কর্মসূচিতে সাউন্ড বক্সের ব্যবহারও হয়েছে। মাধ্যমিক চলছে। এই সময়ে সাউন্ড বক্সের ব্যবহার কেন? জেলার কৃষি কর্মাধ্যক্ষের অবশ্য যুক্তি, ‘‘খুব অল্প সাউন্ড ছিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy