ফাইল চিত্র।
নিজেদের দাবি পূরণের আন্দোলন করতে গিয়ে বিষ পান করেছিলেন মহিষাদলের শিক্ষিকা। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। রাজ্য সরকারের তরফে সব রকম সহযোগিতার আশ্বাসও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু হাসপাতাল থেকে ওই শিক্ষিকার কোনও খোঁজখবর পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন পরিবারের সদস্যরা।
দিন কয়েক আগে কলকাতায় বিকাশ ভবনের সামনে আন্দোলন করার সময় যে পাঁচজন শিক্ষিকা বিষ পান করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন মহিষাদলের ইটামগরা-২ পঞ্চায়েতের কাঞ্চনপুর এসএসকে-র শিক্ষিকা শিখা দাস। অবিবাহিত শিখাদেবী মহিষাদলের কাপাসএড়ায় বাড়িতে একাই থাকেন। ভাই দিলীপ দাস সেনাবাহিনীতে কাজ করেন। এলাকায় সক্রিয় বাম কর্মী হিসেবে পরিচিত শিখা ২০০০ সালে কাঞ্চনপুর এসএসকে স্কুলে শিক্ষিকা হিসাবে যোগ দেন। ২০১৩ সালে ইটামগরা-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের কাপাসএড়া এলাকায় পঞ্চায়েত বামপ্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। হেরে গেলেও এখনও সক্রিয়ভাবে বাম রাজনীতির সাথে যুক্ত।
পাঁচ শিক্ষিকার বিষ পানের ঘটনায় শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু দাবি করেছিলেন, যাঁরা বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন তাঁরা বিজেপি সমর্থক। মন্ত্রীর দাবি উড়িয়ে এলাকাবাসী ও বামকর্মীদের দাবি, শিখা বাম রাজনীতির সাথে যুক্ত। তিনি কোনওদিনই বিজেপি করেননি। সরকার নিয়ম বহির্ভূতভাবে বদলি করছে ওই শিক্ষকদের, এই অভিযোগ শুক্রবার বামেরা মহিষাদলের তেরপেক্ষ্যা মোড় থেকে সিনেমা মোড় পর্যন্ত মিছিল করে। মিছিলে ছিলেন যুবনেতা পরিতোষ পট্টনায়ক প্রমুখ।
শিখার পরিবারের সদস্যদের দাবি, নবান্নে যেদিন বেতন বৃদ্ধির দাবিতে শিক্ষিকারা বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন, সেই বিক্ষোভে সক্রিয় অংশ নিয়েছিলেন শিখা। সেদিন গভীর রাতে শিখার বাড়িতে আসে মহিষাদল থানার পুলিশ। শিখা সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করে তারা। পরদিন বাড়ি ফেরেন শিখা। দাবি, তার পরেই হাতে পান দক্ষিণ দিনাজপুরে বদলির চিঠি। চিঠি পেয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন শিখা। বদলির বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ করতে কলকাতায় যান। পরিবার সূত্রের খবর, কলকাতা পৌঁছনোর পরেই শিখা এবং তাঁর সহকর্মীদের লালবাজারে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে আইনজীবিদের সাহায্যে ফের হোটেলে ফেরেন শিখা ও তাঁর সহকর্মীরা।
পরদিন বিকাশ ভবনের সামনে প্রতিবাদের সময় শিখা বিষ পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় এনআরএস হাসপাতলে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু পরে তাঁর পরিবারের সদস্যরা যখন হাসপাতালে শিখা দেবীর স্বাস্থ্যের ব্যাপারে খোঁজ নিতে যান, তখন তাঁদের সঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনও কথা বলতে রাজি হননি বলে অভিযোগ।
হাসপাতাল থেকে কোনও খবর না পেয়ে এখন দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন শিখার পরিবার। ভাই দিলীপ কুমার দাস ১৬ জুলাই সপরিবারে মহিষাদলের বাড়িতে এসেছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘এনআরএসে আমরা যখন খোঁজ নিতে যাই, তখন আমাদের সঙ্গে কোনও কথা বলা হয়নি। দিদির শারীরিক অবস্থা কেমন সে ব্যাপারেও কিছু জানায়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বা পুলিশ। জানতে পারলে বেসরকারি হাসপাতালে দিদির চিকিৎসা করাতে পারতাম। কিন্তু সেই সুযোগও পাওয়া যাচ্ছে না। মাঝখানে এতগুলো দিন কেটে গেলেও দিদি কেমন আছে তা আজও জানতে পারলাম না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy