তমলুক পুরসভার তৃণমূল এক মহিলা কাউন্সিলরকে খুনের চেষ্টা ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে সদ্য বহিষ্কৃত তৃণমূল যুব কংগ্রেস নেতা বিশ্বনাথ হাজরাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। শনিবার রাতে তমলুক শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বিশ্বনাথবাবুকে নন্দকুমারে তাঁর এক আত্মীয় বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। রবিবার তাঁকে তমলুক আদালতে তোলা হলে বিচারক শর্তসাপেক্ষে জামিন মঞ্জুর করেন ও আগামী ২২ মে ফের আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তমলুক পুর-নির্বাচনে শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে এ বার তৃণমূলের প্রার্থী হন ওই ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর সুফিয়া বেগম। ওই প্রার্থীর বিরুদ্ধে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দাঁড়ান তমলুক শহর তৃণমূল যুব কংগ্রেস সভাপতি বিশ্বনাথ হাজরার স্ত্রী সুস্মিতা হাজরা। ভোট প্রক্রিয়ার মাঝেই দলবিরোধী কাজের অভিযোগে বিশ্বনাথবাবুকে বহিষ্কার করে তৃণমূল জেলা নেতৃত্ব। ভোটে সুস্মিতা দেবীকে হারিয়ে ফের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন সুফিয়া বেগম।
গত ২৮ এপ্রিল পুর ভোটের ফলাফল প্রকাশের পরে শহরের লালদিঘি এলাকায় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা সুফিয়া বেগমকে নিয়ে বিজয় মিছিল করার সময় বিশ্বনাথ হাজরার নেতৃত্ব কংগ্রেস সমর্থকরা সুফিয়া বেগমকে মারধর ও শ্লীলতাহানি করে বলে অভিযোগ। ওই দিন কংগ্রেস সমর্থকদের আক্রমণে ৯ জন তৃণমূল সমর্থক আহত হয় বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় বহিষ্কৃত তৃণমূল যুব কংগ্রেস নেতা বিশ্বনাথবাবু-সহ ১৭ জন কংগ্রেস সমর্থকদের বিরুদ্ধে সুফিয়া বেগমকে খুনের চেষ্টা ও শ্লীলতাহানি, টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ দায়ের করা হয় তমলুক থানায়। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ আগেই ৫ জনকে গ্রেফতার করেছিল। পরে আরও একজন পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করে। ৬ জনই শর্তসাপেক্ষে জামিন পান। ওই একই মামলায় এরপর শনিবার রাতে তমলুক থানার পুলিশ বিশ্বনাথবাবুকে গ্রেফতার করে।
রবিবার বিশ্বনাথবাবুকে তমলুক আদালতে তোলে পুলিশ। মামলার শুনানির পর বিচারক বিশ্বনাথবাবুকে সপ্তাহে দু’দিন থানায় হাজিরা ও ৩ হাজার টাকা ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন মঞ্জুর করেন ও আগামী ২২ মে ফের আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। গ্রেফতার নিয়ে বিশ্বনাথবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসাবশত আমাদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করা হয়েছে।’’