প্রতীকী ছবি
আশঙ্কা ছিল। শেষমেশ তা সত্যি করেই বন্ধ হয়ে গেল মেদিনীপুর শহরের ৮টি প্রাথমিক স্কুল।
জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকে ওই স্কুলগুলোয় পঠনপাঠন বন্ধ হয়েছে। আর তার শিক্ষকদের শহর, শহরতলির অন্য স্কুলে বদলি করা শুরু হয়েছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি নারায়ণ সাঁতরা মানছেন, ‘‘ওই স্কুলগুলোর শিক্ষকদের অন্য স্কুলে বদলি করা হচ্ছে।’’
এক দিকে প্রাথমিক স্কুলে পঞ্চম শ্রেণি চালু করছে সরকার। পশ্চিম মেদিনীপুর জুড়ে প্রায় ন’শো স্কুলে পঞ্চম শ্রেণি শুরু হয়েছে। তার মধ্যে মেদিনীপুর শহরেও বেশ কিছু স্কুল রয়েছে। এরই মধ্যে ৮টি প্রাথমিক স্কুলের ঝাঁপ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শোরগোল পড়েছে। জেলা শিক্ষা দফতরের এক সূত্রের দাবি, সব দিক খতিয়ে দেখেই ওই ৮টি প্রাথমিক স্কুল বন্ধ করা হয়েছে। জেলার এক শিক্ষা আধিকারিকের ব্যাখ্যা, ‘‘মেদিনীপুর শহরে পর্যাপ্ত প্রাথমিক স্কুল রয়েছে। ওই ৮টি স্কুলে কিছু সমস্যা ছিল। সব দিক দেখেই ওই স্কুলগুলো উঠিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’ তিনি জানাচ্ছেন, ‘‘জেলা থেকে রাজ্য স্কুলশিক্ষা দফতরে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। রাজ্য থেকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ এসেছে। তারপরই জেলা থেকে যে পদক্ষেপ করার করা হয়েছে।’’ ওই সূত্র মনে করিয়ে দিচ্ছে, গত ডিসেম্বরে জেলায় এক বৈঠকে ওই স্কুলগুলো উঠিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। মেদিনীপুরে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাকক্ষে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) তরুণ সরকার, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান নারায়ণ সাঁতরার উপস্থিতিতে ওই বৈঠকে ছিলেন ওই স্কুলগুলোর প্রধান শিক্ষকেরাও।
বস্তুত শহর মেদিনীপুরে এখন বেসরকারি বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের রমরমা। অধিকাংশ অভিভাবকই ছেলেমেয়েদের সেখানে ভর্তি করছেন। ফলে, সরকারি প্রাথমিক স্কুলগুলি পড়ুয়া হারাচ্ছে। চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকে শহ মেদিনীপুরের যে ৮টি প্রাথমিক স্কুলে পঠনপাঠন বন্ধ হয়েছে, ২টি স্কুল পড়ুয়াশূন্য হয়ে পড়েছিল। ওই ২টি স্কুলে শিক্ষকেরা ছিলেন, কিন্তু ছাত্রছাত্রী ছিল না। শিক্ষা দফতরের পরিভাষায় স্কুল দু’টি ‘জিরো এনরোলমেন্ট’ হয়ে পড়েছিল। আর বাকি ৬টি স্কুল ভাড়া বাড়িতে চলত। জানা যাচ্ছে, ভাড়া বাড়িতে চলা প্রাথমিক স্কুলগুলোয় নানা সমস্যা হচ্ছিল। জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, ওই স্কুলগুলোর পরিকাঠামোই প্রশ্নের মুখে পড়েছিল। পরিদর্শনে গিয়ে দেখা গিয়েছিল, কোথাও কোথাও ঘুপচি ক্লাসঘরে গাদাগাদি করে বসে পড়ুয়ারা। একাধিক স্কুলে একটিই ক্লাসঘর ছিল। কয়েকটি স্কুলে মিড ডে মিলের রান্নাঘর, পানীয় জল, শৌচালয়ের অভাব ছিল। স্কুলগুলি ভাড়া বাড়িতে চলত। তাই স্কুলগুলোর প্রয়োজনীয় পরিকাঠামোও তৈরি করা যাচ্ছিল না। জেলার এক শিক্ষা আধিকারিকের কথায়, ‘‘বাড়া বাড়িতে চলত। তাই এ ক্ষেত্রে শিক্ষার কাঠামো এবং স্কুলগুলোর পরিকাঠামো নতুনভাবে তৈরি করা সম্ভব হচ্ছিল না।’’ বাড়ির মালিকেরা ভাড়া বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছিলেন। তাও বাড়ানো যাচ্ছিল না।
অন্য দিকে, স্কুলগুলোর নিজস্ব ভবন তৈরির ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় জমি। আশেপাশে পর্যাপ্ত সরকারি জমি নেই। সব দিক দেখেই শহরে ভাড়া বাড়িতে চলা ৬টি প্রাথমিক স্কুল উঠিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জেলা শিক্ষা দফতরের ওই সূত্রের দাবি, বন্ধ হয়ে যাওয়া স্কুলগুলোর ছাত্রছাত্রীদের আশপাশের স্কুলে ভর্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে। সূত্রের খবর, ওই ৮টি স্কুলে ২১ জন শিক্ষক ছিলেন। তাঁদের সকলকেই শহর, শহরতলির আশেপাশের স্কুলে বদলি করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy