—প্রতীকী চিত্র।
তাঁর নির্বাচনী এলাকায় একটি পথবাতি বসাতে চেয়েছিলেন জেলা পরিষদের এক সদস্য। অর্থ কমিশনের বরাদ্দ থেকে। বছর খানেক আগে লিখিত প্রস্তাবও জমা করেছিলেন তিনি। অবশ্য কাজটি হয়নি। কেন হয়নি, খোঁজখবর করতে গত মাসে জেলা পরিষদের সংশ্লিষ্ট বিভাগে এসেছিলেন তিনি। এতদিন ধরে কেন প্রস্তাব পড়ে রয়েছে, তার সদুত্তর পাননি। ‘এ বার কাজটি হয়ে যাবে’- এই আশ্বাস শুনেই ফিরতে হয় তাঁকে।
কাজের অগ্রগতি কেমন, সেটা খতিয়ে দেখতে গত মাসের শেষের দিকে এক পর্যালোচনা বৈঠক হয়েছিল জেলা পরিষদে। দেখা গিয়েছিল, পঞ্চদশ অর্থ কমিশন থেকে ২০২২- ’২৩ সালে প্রথম কিস্তিতে ১৫ কোটি ১ লক্ষ ১৪ হাজার পেয়েছে জেলা পরিষদ। এর মধ্যে তখনও পর্যন্ত ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ দেওয়া হয়েছে ৫ কোটি ৫৫ লক্ষ ১৫ হাজার টাকার প্রকল্পের। অর্থাৎ, বরাদ্দের ৩৭ শতাংশের। ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ দেওয়া হয়েছে ৩৭ শতাংশের। তখনও পর্যন্ত এর মধ্যে খরচ হয়নি এক টাকাও! অর্থাৎ, প্রস্তাবিত প্রকল্পগুলির মধ্যে একটি প্রকল্পের কাজও সম্পূর্ণ হয়নি। দেখা গিয়েছিল, ওই আর্থিক বছরে দ্বিতীয় কিস্তিতে ১৪ কোটি ৮৪ লক্ষ ৬৮ হাজার পেয়েছে জেলা পরিষদ। এর মধ্যে তখনও পর্যন্ত ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ দেওয়া হয়েছে ৪ কোটি ৮৯ লক্ষ ৭৯ হাজার টাকার প্রকল্পের। অর্থাৎ, বরাদ্দের ৩৩ শতাংশের। কেন কাজের গতি ব্যাহত হয়েছে, প্রশ্ন উঠছে। সামনে এসেছে সমন্বয়ের অভাবের দিকটিও। অনুযোগ, জেলা পরিষদে অন্তর্বর্তী সমন্বয়ের অভাবে কিছু ক্ষেত্রে অহেতুক কাজ ব্যাহত হয়েছে।
কাজের গতি কেন শ্লথ? পর্যালোচনা বৈঠকে দেখা গিয়েছে, জেলা পরিষদ অনেক ছোট ছোট প্রকল্প ধরেছে। ফলে, কাজ এগোতে সমস্যা হচ্ছে। গ্রাম পঞ্চায়েতের যে সব প্রকল্প ধরার কথা, সে সব প্রকল্প ধরে ফেলেছে জেলা পরিষদ। অথচ, জেলা পরিষদের বড় প্রকল্প ধরার কথা। কেন এত ছোট প্রকল্প ধরা হল, প্রশ্ন উঠছে। সামনে আসছে ‘কোটা’ পদ্ধতি, সকলকে সন্তুষ্ট করতে যাওয়ার বিষয়টি। জানা যাচ্ছে, জেলার কর্মাধ্যক্ষ এবং জেলা পরিষদ সদস্যদের ‘কোটা’ বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। জেলার প্রত্যেক কর্মাধ্যক্ষের কাছ থেকে ১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকার প্রকল্পের প্রস্তাব চাওয়া হয়েছিল। প্রত্যেক জেলা পরিষদ সদস্যের কাছ থেকে ৪০ লক্ষ টাকার প্রকল্পের প্রস্তাব চাওয়া হয়েছিল। বেশিরভাগ জেলা পরিষদ সদস্যের কাছ থেকে ছোট ছোট প্রকল্পের প্রস্তাব এসেছে। কেউ তাঁর নির্বাচনী এলাকায় পথবাতি বসানোর প্রস্তাব দিয়েছেন, কেউ নলকূপ তৈরির প্রস্তাব দিয়েছেন, কেউ ছোট রাস্তা তৈরির প্রস্তাব দিয়েছেন। এমন অনেক কাজের প্রস্তাব এসেছে, যে সব কাজে খরচ মাত্র দেড় থেকে দু’লক্ষ টাকা।
বিজেপির রাজ্য নেতা তুষার মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কেন্দ্র কোটি কোটি টাকা পাঠাচ্ছে। উন্নয়ন না করে টাকা ফেলে রাখা হচ্ছে। উন্নয়নে মনই নেই তৃণমূল সরকারের!’’ জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরার অবশ্য দাবি, সমন্বয় রেখেই কাজ হয়েছে। প্রকল্প রূপায়ণে এমন কিছু শর্ত বেঁধে দেওয়া ছিল, যাতে ঠিকঠাক করে কাজ করতে গিয়ে গতি কিছুটা শ্লথ হয়েছে। পরে অবশ্য ঠিক করা হয়েছে। কমিশনের বরাদ্দে কাজে গতি এসেছে। (চলবে)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy