খালে ঢুকে ডলফিনের মৃত্যু।
পুরো একদিন কেটে গিয়েছে। ভগবানপুর-২ ব্লকের নেতুড়িয়ায় উদবাদাল খালে ঢুকে পড়া একটি ডলফিন মারা যায়। ওই ঘটনায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বন দফতরকে কাঠগড়ায় তুলেছিল প্রশাসনের একাংশ। এমনতী অতি স্পর্শকাতর ডলফিনকে নিয়ে বন দফতরের ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ মনোভাব নিয়ে অসন্তুষ্ট ছিলেন মৎস্যজীবীরাও। তা সত্ত্বেও বিষয়টি নিয়ে বন ফতরের কাছে এখনও কৈফিয়ৎ চাওয়া হয়নি। এমনকী দফতরে কাউকে শাস্তিও দেওয়া হয়নি।
জেলা বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, উদবাদাল খালে সাঁতার কাটার সময় মারা যাওয়া ডলফিনটির ময়নাতদন্ত শনিবার শেষ হয়েছে। বন দফতরের রেঞ্জ অফিসে এই ময়নাতদন্তের পর রিপোর্ট তুলে দেওয়া হয় বনাধিকারিকদের হাতে। হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে ডলফিনটি মারা গিয়েছে বলে রিপোর্টে জানানো হয়েছে। গত তিন দিন ধরে নাসিক খালে সাঁতার কাটতে থাকা ডলফিনটির পর্যাপ্ত খাবারের অভাব ঘটেছিল। তার উপর বনকর্মীরা স্পিডবোট নিয়ে ডলফিনটিকে সমুদ্রে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাড়া করায় সেটি হাঁপিয়ে পড়েছিল। ডলফিন যে ক্রমশ ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল ময়নাতদন্তের রিপোর্টেও তা জানা গিয়েছে বলে বন দফতর সূত্রে খবর।
সামুদ্রিক পরিবেশে থাকা ডলফিনটিকে নাসিক খাল থেকে বড় ক্যানাল হয়ে সমুদ্রে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য কেন বন্যপ্রাণী সংরক্ষণকারী টিমের পরামর্শ নেওয়া হয়নি, ডলফিনের মৃত্যুকে সেই প্রশ্ন তুলেছে মৎস্য দফতর। এই অবস্থায় ডলফিন-মৃত্যু নিয়ে বিতর্ক থামাতে একটি টাস্কফোর্স গঠন করেছে জেলা বন দফতর। অতিরিক্ত জেলা বনাধিকারিকের নেতৃত্বে সমস্ত রেঞ্জ অফিসার ওই দলে থাকছেন। তাঁরা ডলফিনটির ময়নাতদন্তের রিপোর্ট নিয়ে এলাকায় গিয়ে ঘুরে দেখে একটি রিপোর্ট তৈরি করবেন। সেই রিপোর্ট আঞ্চলিক বনবিভাগের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলে।
প্রসঙ্গত, ৭৮ কিলোমিটার দীর্ঘ বঙ্গোপসাগরের উপকূল এলাকায় ইদানীং হামেশাই মৎস্যজীবীদের জালে মৃত শুশুক উদ্ধারের ঘটনা প্রকাশ্যে আসছে। তা ছাড়াও বিভিন্ন প্রকার বিরল প্রজাতির কচ্ছপ, বন বিড়ালের মতো প্রাণী উদ্ধারের ঘটনা মাঝেমধ্যেই নজরে আসে। কিন্তু উপকূল এলাকায় ডলফিনের মতো স্পর্শকাতর বিরল প্রজাতির প্রাণী উদ্ধারের ঘটনা ইদানীং বেড়েছে। সেখানে কেন বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে অভিজ্ঞ লোকজন রাখা হয়নি, তা নিয়ে সব মহলেই প্রশ্ন উঠেছে।
যাঁরা বনের রক্ষণাবেক্ষণ করেন মূলত তাঁরাই ন্যূনতম প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এই সব প্রাণী উদ্ধারে নামেন বলে বন দফতরের কর্মীরাই জানিয়েছেন। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বনধিকারিক স্বাগতা দাস বলেন, ‘‘বন্যপ্রাণী সংরক্ষণেকারী টিম এখানে প্রয়োজন কিনা তা খতিয়ে দেখার জন্য উচ্চ পর্যায়ের টাস্কফোর্স কমিটি গঠন করা হয়েছে। খুব দ্রুত ওই কমিটি রিপোর্ট দেবে। তার ভিত্তিতে আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy