Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Health

জ্বর-শ্বাসকষ্টের আবহে শিশু শয্যা বৃদ্ধির ভাবনা

অ্যাডিনো ভাইরাস নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরেও। পরিস্থিতি এমন চললে হাসপাতালগুলির শিশু ওয়ার্ডে শয্যা সঙ্কট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা।

picture of children.

মেদিনীপুর মেডিক্যালের ‘মাতৃমা’ ভবনের সামনে। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০২৩ ০৬:৩০
Share: Save:

জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্টে ভুগছে বহু শিশু। রোজই এমন উপসর্গ নিয়ে বেশ কিছু শিশু আসছে হাসপাতালগুলিতে। অ্যাডিনো ভাইরাস নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরেও। পরিস্থিতি এমন চললে হাসপাতালগুলির শিশু ওয়ার্ডে শয্যা সঙ্কট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা। সব দিক দেখে শিশু- শয্যা বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে জেলায়। জেলায় এখন শিশু- শয্যা রয়েছে সব মিলিয়ে ৩৬১টি। তা বাড়িয়ে ৪২০-৪৫০টি করা হতে পারে।

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী মানছেন, ‘‘শয্যা বাড়ানো হতে পারে। তবে সেটা প্রয়োজনে। এখন জেলায় শয্যার কোনও সমস্যা নেই। পরিস্থিতি মোকাবিলায় যে সব পদক্ষেপ করার, সে সবই করা হয়েছে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবেও বেশ কিছু পদক্ষেপ করা হয়েছে।’’ চাপ বাড়ছে মেদিনীপুর মেডিক্যালের উপরই। এখানে শিশু ওয়ার্ডে এক-একটি সাধারণ শয্যায় দু’জন করে শিশুকে রাখতে বাধ্য হচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। জেলার অন্য হাসপাতালেও শিশু ওয়ার্ডের বেশিরভাগ শয্যাই ভর্তি। এখনও পর্যন্ত জেলার এক কিশোরীই অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। কলকাতার হাসপাতালে দিন কয়েক আগে তার মৃত্যুও হয়েছে। তবে তার সংক্রমণ ধরা পড়ে কলকাতায়। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, এখনও জেলায় কারও সংক্রমণ ধরা পড়েনি।

জেলার কোন হাসপাতালে কত শিশু-শয্যা রয়েছে, জেলাস্তরে বৈঠকে ইতিমধ্যে তা খতিয়ে দেখা হয়েছে। অক্সিজেন ও ভেন্টিলেটর পরিকাঠামো ঠিকঠাক রাখতে বলা হয়েছে হাসপাতালগুলিকে। রাজ্যের নির্দেশ মেনে ‘অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশন’ (এআরআই) উপসর্গযুক্ত শিশুদের উপর জেলায় বিশেষ নজরদারি চলছে। জানা গিয়েছে, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শিশু শয্যা রয়েছে ২২৬টি। এর মধ্যে সাধারণ শয্যা ১০০টি, এসএনসিইউ শয্যা ১০২টি, ‘পেডিয়াট্রিক ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিট’ বা পিকু শয্যা ২৪টি। ঘাটাল সুপার স্পেশালিটিতে ৬০টি শয্যা রয়েছে। এরমধ্যে সাধারণ শয্যা ৪০টি, এসএনসিইউ শয্যা ২০টি। খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে শিশু বিভাগে সাধারণ শয্যা রয়েছে ৫০টি। ডেবরা সুপার স্পেশালিটিতে সাধারণ শয্যা রয়েছে ২৫টি। প্রয়োজনে খড়্গপুর এবং ঘাটালে শিশু-শয্যা বাড়ানো হতে পারে। এখানে চিকিৎসাধীন শিশুর সংখ্যা বেড়েছে।

এখন জেলার পরিস্থিতি ঠিক কেমন?

জানা গিয়েছে, এআরআই উপসর্গ নিয়ে সোমবার পর্যন্ত পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিল ৭২ জন শিশু। এর মধ্যে ২০ জন শিশু ভর্তি হয়েছে সোমবারই। ওই ৭২ জন শিশুর মধ্যে মেদিনীপুর মেডিক্যালে রয়েছে ৩৮ জন, ঘাটাল সুপার স্পেশালিটিতে ১৭ জন, শালবনি সুপার স্পেশালিটিতে ৫ জন, ডেবরা সুপার স্পেশালিটিতে ৬ জন, খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে রয়েছে ৬ জন। আর সোমবার ভর্তি হওয়া ২০ জন শিশুর মধ্যে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি হয়েছে ৯ জন, ঘাটাল সুপার স্পেশালিটিতে ৭ জন, খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে ১ জন, ডেবরা সুপার স্পেশালিটিতে ১ জন, শালবনি সুপার স্পেশালিটিতে ২ জন। তিনজন শিশুর অবস্থা সঙ্কটজনক। তিনজনই মেদিনীপুর মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন। ভেন্টিলেশনে রয়েছে ১ জন, ‘পেডিয়াট্রিক ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিট’ বা পিকু- তে রয়েছে ২ জন।

মেদিনীপুর মেডিক্যালের শিশু বিভাগের বিভাগীয় প্রধান তারাপদ ঘোষ বলেন, ‘‘মূলত ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে শিশুরা। কিছু ক্ষেত্রে তাদের কয়েকজনের শ্বাসকষ্ট দেখা দিচ্ছে।’’ জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তা মানছেন, ‘‘হাসপাতালগুলিকে জানানো হয়েছে, শ্বাসকষ্টের চিকিৎসার জন্য বাড়তি ‘পেডিয়াট্রিক বেড’-এর বন্দোবস্ত রাখতে হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Health Children Adenovirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE