Advertisement
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Dilip Ghosh

‘তৃণমূল মুক্ত’ জঙ্গলমহল গড়ার ডাক, বিদ্ধ মমতাও

বুধবার কেশিয়াড়ির লালুয়া ও গগনেশ্বর, দু’টি বিজেপি পরিচালিত পঞ্চায়েত এলাকায় একাধিক কর্মসূচি তথা উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দেন দিলীপ।

dilip ghosh.

কেশিয়াড়িতে দিলীপ ঘোষ। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কেশিয়াড়ি ও খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২৩ ০৬:৪৬
Share: Save:

জাতিসত্তার আন্দোলনে পথে কুড়মিরা। তাঁদের ডাকা বন্‌ধে ‘ভাল’ সাড়া পড়েছে জঙ্গলমহলে। ঠিক এমন সময়েই কেশিয়াড়িতে পৌঁছে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাসরি দুর্নীতি ও কাটমানি প্রসঙ্গে বিঁধলেন মেদিনীপুরের বিজেপি সাংসদ তথা বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর ভাষায়, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কাটমানি খাচ্ছেন। চাকরির নামে হাজার হাজার কোটি টাকা তুলছেন।’’ সেই সঙ্গে আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে জঙ্গলমহলকে তৃণমূলকে শূন্য করারও ডাক দেন দিলীপ। তিনি বলেন, ‘‘কেশিয়াড়িতে তৃণমূলকে শূন্য করতে হবে। তৃণমূল মুক্ত জঙ্গলমহল করতে হবে।’’

দিলীপ মানেই শাসকদলকে বাছা বাছা শব্দে আক্রমণ! তা সে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হন কিংবা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে মুখ্যমন্ত্রীকে শেষ কবে ‘এ ভাবে’ সরাসরি দুর্নীতি প্রসঙ্গে বিঁধেছিলেন দিলীপ, তার খোঁজে স্মৃতির পাতা উল্টোচ্ছেন অনেকে! আবার যে জায়গায় দাঁড়িয়ে দিলীপের এই তোপধ্বনি, সেই ঘটনাস্থলের নাম কেশিয়াড়ি। এই কেশিয়াড়িতেই গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে গেরুয়া শিবির সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়েও বোর্ড গড়তে পারেনি বিজেপি। তবে তাঁর নিজের লোকসভা কেন্দ্রে পৌঁছে স্থানীয় একঝাঁক মহিলার অভিযোগের মুখে পড়তেই ‘চেনা’ দিলীপ কেমন যেন অচেনা! বুধবার কার্যত এক ‘অসহায়’ দিলীপকেও দেখল রেলশহর।

বুধবার কেশিয়াড়ির লালুয়া ও গগনেশ্বর, দু’টি বিজেপি পরিচালিত পঞ্চায়েত এলাকায় একাধিক কর্মসূচি তথা উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দেন দিলীপ। অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে কালিয়াগঞ্জ, তুফানগঞ্জের ঘটনাকে সামনে রেখে নিশানা সাধেন তৃণমূল সরকার এবং পুলিশের বিরুদ্ধে। কেশিয়াড়ির কর্মসূচি সেরে বুধবার খড়্গপুর শহরের বুলবুলচটি সংলগ্ন গ্রামীণের মীরপুরে চা-চক্রে যোগ দেন দিলীপ। সেখানে গিয়ে কার্যত অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয় মেদিনীপুরের সাংসদকে। খড়্গপুর শহরের সীমানা এই এলাকায় থাকা একটি খাল ঘিরে সমস্যা দীর্ঘ বছরের। সামান্য বৃষ্টি হলেই মজে যাওয়া খাল উপচে ভেসে যায় শহরের বুলবুলচটি ও গ্রামীণের মীরপুর এলাকা। এ দিন এলাকায় সাংসদ দিলীপের উপস্থিত হওয়ার খবরে প্রস্তুত ছিলেন এলাকার মহিলারা। দিলীপের কর্মসূচি শেষ হতেই ঘিরে ধরেন মহিলারা। তাঁদের অভিযোগ শুনে দিলীপ বলেন, “বুঝতে পারছি। আমি সব এলাকায় ঘুরেছি।” মহিলারা পাল্টা বলে ওঠেন, “আপনি সব এলাকায় ঘুরেছেন, কিন্তু আমরা তো সমস্যায় ভুগছি।” এমন ঘটনায় কার্যত অস্বস্তি বাড়ে ‘নিরুপায়’ দিলীপের। ক্ষোভ সামলাতে তিনি বলেন, “আমার তো কিছু করার নেই। এই এলাকার এ-পাশেও (পঞ্চায়েত) তৃণমূল ও-পাশেও (পুরসভায়) তৃণমূল। আমার তো এত টাকা নেই যে, এখানকার সমস্যার সমাধান করব।”

দিলীপের এমন মন্তব্যের আবার তাঁকে বিঁধেছেন তৃণমূলের জেলা কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি। তিনি বলেন, “একমন তেলও পুড়বে না, আর রাধাও নাচবে না। পঞ্চায়েতে দিলীপ ঘোষদের জিততেও হবে না। আর ওঁকে কাজও করতে হবে না। সাংসদ ও বিধায়ক তো বিজেপির। ওঁদের যে তহবিল রয়েছে, তাতেই তো সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।’’ তিনি জুড়ছেন, ‘‘দিলীপ ঘোষ মোমবাতি নেভার আগে যেমন দপ করে জ্বলে ওঠে সেই পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছেন। মানুষ ওঁর এই কুৎসার জবাব দিয়ে দেবে।"

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dilip Ghosh BJP Mamata Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE