রবিবার দিঘার সৈকতে ভিড়। —নিজস্ব চিত্র।
সোমবার, বড়দিন। তার সঙ্গে জুড়েছে সপ্তাহান্তের ছুটি। টানা তিনদিনের ছুটিতে শনিবার থেকেই পর্যটকদের ঢল নেমেছে সৈকত শহর দিঘায়। পূর্ব মেদিনীপুরে উপকূলের অন্য পর্যটন কেন্দ্র মন্দারমণি, তাজপুরেরও ছবিটা একই। ভিড় সামলাতে উদ্যোগী পুলিশ-প্রশাসন।
দিঘায় কেউ এসেছেন সপরিবার ছুটি কাটাতে, তো কেউ পিকনিক করতে। ভিড় দেখে বোঝার উপায় নেই যে, সপ্তাহখানেক আগেও প্রায় ফাঁকা ছিল সৈকত শহর। গত দু’দিনের তুলনায় রবিবার শীতের আমেজ খানিকটা কম ছিল। মিঠে রোদ পোহাতে পর্যটকেরা আড্ডা জমে সৈকতের ধারে। সেখানে সকাল থেকেই শিউলিরা খেজুর রসের হাঁড়ি নিয়ে হাজির। বেলা বাড়তেই কাতারে কাতারে মানুষ নেমে পড়েন সমুদ্রস্নানে। ওল্ড দিঘার হোটেল মালিক গিরিশচন্দ্র রাউত বলছেন, ‘‘শনিবার রাতে বহু পর্যটক এসেছেন। রবিবার সকাল থেকে ট্রেনে, বাসে এবং ব্যক্তিগত গাড়িতেও অনেকে এসেছেন।’’ ওল্ড এবং নিউ দিঘায় সাতশোর বেশি বড় হোটেল রয়েছে। প্রত্যেকটিই পরিপূর্ণ। দিঘা হোটেল মালিক সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘এ বছর পুরো পুজোর ছুটির মরসুম সকলকে হতাশ করেছে। একেবারেই ফাঁকা ছিল। কর্মচারীদের বেতন থেকে বোনাস দিতে গিয়ে বেজায় সমস্যায় পড়তে হয়েছে। তবে, সপ্তাহ দু’য়েক আগে থেকেই বড়দিনের ছুটিতে বুকিং আসছিল। অধিকাংশ হোটেল বুকিং পেয়েছে। সামান্য যা বাকি রয়েছে, তা-ও ভরে যাবে।’’
উৎসবের আবহে অঘটন এড়াতে সজাগ প্রশাসন। ওল্ড দিঘা থেকে নিউ দিঘা পর্যন্ত স্নানঘাটগুলিকে দড়ি দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। নুলিয়া, পুলিশের পাশাপাশি সিভিল ডিফেন্স কর্মীদের মোতায়েন রাখা হয়েছে। বিভিন্ন ওয়াচ টাওয়ার থেকে পর্যটকদের সতর্ক করা হচ্ছে। চুরি, ছিনতাই এবং মহিলাদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে সাদা পোশাকের পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। বিপদগ্রস্ত মহিলাদের পাশে দাঁড়াতে ওল্ড দিঘা থেকে নিউ দিঘার উদয়পুর পর্যন্ত ‘উইনার্স টিম’ নিয়মিত টহল দিচ্ছে। এ ছাড়া, রবিবার এবং সোমবার সারা রাত ধরে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করেছে জেলা পুলিশ। পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘পর্যটকেরা যাতে নির্বিঘ্নে বড়দিন উদ্যাপন করতে পারেন, সে জন্য প্রশাসন প্রস্তুত।’’
সৈকতের ধারে পিকনিক করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ। পর্ষদের কার্যনির্বাহী আধিকারিক সৈকত হাজরা বলেন, ‘‘নিউ দিঘাতে হেলিপ্যাড ময়দানে পর্যটকদের পিকনিক করার জন্য জায়গা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে জল সরবরাহ এবং শৌচাগারের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। প্লাস্টিকের পরিবর্তে শালপাতার থালা-বাটি ব্যবহারের জন্য বিশেষ ভাবে সচেতন করা হচ্ছে।’’
ঠাঁই নেই মন্দারমণিতেও। এ দিন সকাল থেকে মেরিন ড্রাইভ ধরে এবং ১১৬বি জাতীয় সড়ক দিয়ে সারি সারি পর্যটকদের গাড়ি ঢুকেছে। অধিকাংশ হোটেলেই তিল ধারণের জায়গা নেই বলেই জানিয়েছেন সেখানকার হোটেল এবং লজ মালিকেরা। দুপুরে ভাটার সময় জল অনেকটা দূরে থাকায় সৈকতে নামেন বহু পর্যটক। সুমন মিশ্র নামে স্থানীয় দোকানদার বলছেন, ‘‘কয়েক মাস ব্যবসায় মন্দা চলছিল। তবে বড়দিন থেকে টানা ছুটিতে ভিড় হবে ভেবেই দোকানে অনেক শৌখিন জিনিস নিয়ে এসেছি। রবিবারের ভিড় দেখে খানিকটা স্বস্তি পেয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy