Advertisement
E-Paper

পঠনপাঠনের সঙ্গে প্রশ্ন স্কুলের দৈনন্দিন কাজেও

এক সূত্রে খবর, চাকরিহারাদের মধ্যে িশক্ষক ও শিক্ষাকর্মী মিলিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রায় ১,৭০০ জন রয়েছেন।

যোগ্যদের স্কুলে ফেরানো-সহ নানা দাবিতে  বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মেদিনীপুরে এবিটিএ-র মিছিল।

যোগ্যদের স্কুলে ফেরানো-সহ নানা দাবিতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মেদিনীপুরে এবিটিএ-র মিছিল। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২৫ ১০:০৭
Share
Save

নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি গিয়েছে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের। কোন স্কুলে দশ জন, কোথাও আট জন শিক্ষকের চাকরি গিয়েছে এই রায়ে। দুই-তিন জন শিক্ষকের চাকরি গিয়েছে এমন স্কুলও কম নয়। এরপরে পঠনপাঠন কীভাবে চলবে সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। একই সঙ্গে প্রশ্ন উঠেছে স্কুলের দৈনন্দিন কাজ কীভাবে চলবে সেই নিয়েও।

এক সূত্রে খবর, চাকরিহারাদের মধ্যে িশক্ষক ও শিক্ষাকর্মী মিলিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রায় ১,৭০০ জন রয়েছেন। ঝাড়গ্রামে সংখ্যাটা ৫২৭। গড়বেতার উমাদেবী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের দশ জনের চাকরি গিয়েছে। এরমধ্যে আট জনই শিক্ষক। দু’জন শিক্ষাকর্মী। গড়বেতার ব্যানার্জিডাঙা হাইস্কুলে শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী মিলিয়ে আট জনের চাকরি গিয়েছে। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রদ্যোত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘অঙ্ক বিষয়ের শিক্ষক একেবারেই শূন্য হয়ে গেল।’’ গড়বেতা হাইস্কুলেও সেখানে ইংরেজি ও রসায়নবিদ্যার দুই শিক্ষক আছেন বাতিলের তালিকায়।

কেশিয়াড়ির নছিপুর আদিবাসী হাইস্কুলের দশজন এই তালিকায় আছেন। তার মধ্যে আট জন শিক্ষক। দু’জন শিক্ষাকর্মী। প্রধান শিক্ষক স্বপন পৈড়া বলেন, ‘‘কীভাবে বিদ্যালয় চালাব বুঝতে পারছি না।’’ নারায়ণগড়ের শশিন্দা সাগরচন্দ্র বিদ্যাভবনের আটজন শিক্ষক এ দিনের রায়ে বাতিল হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ছয়জন এ দিন বিদ্যালয়ে এসেছিলেন। রায় শোনার পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তাঁরা। সেখানকার প্রধান শিক্ষক দীপঙ্কর তেওয়ারির আক্ষেপ, ‘‘বিজ্ঞান বিভাগে কোনও শিক্ষক থাকলেন না।’’

পিংলার মুণ্ডুমারি ঊষানন্দ বিদ্যাপীঠের বাংলা-সহ দু'টি বিষয়ের শিক্ষকের চাকরি বাতিল হয়েছে। সবংয়ের মশাগ্রাম শিবানন্দ বিদ্যাপীঠে মাত্র ১১ জন শিক্ষক। তার মধ্যে তিন শিক্ষক ও একমাত্র শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হয়েছে। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক অশোককুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘অফিসের কাজকর্ম ও পঠনপাঠন দুই জায়গাতেই প্রভাব পড়বে।’’ ঘাটালের দুধেরবাঁধ হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সমরেন্দ্রনাথ আদক বলছিলেন, ‘‘আমাদের পাঁচজন শিক্ষক বাতিলের তালিকায় আছেন।’’

ঝাড়গ্রামের হাড়দা রামকৃষ্ণ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সুদীপ্ত গিরি বলেন, ‘‘আমার স্কুলের চারজন শিক্ষক রয়েছেন ওই তালিকায়।’’ ঝাড়গ্রাম শহরের ননীবালা বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা অরুন্ধতী সেন বলেন, ‘‘অঙ্কের এখন কে ক্লাস নেবেন, সেটা বুঝে উঠতে পারছি না।’’ বেলপাহাড়ি ব্লকের ভেলাইডিহা এসসি এসটি হাইস্কুলে চারজন শিক্ষক ও একজন শিক্ষাকর্মী ওই তালিকায় রয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষক অনাথবন্ধু দালাল। গোপীবল্লভপুর নয়াবসান জনকল্যাণ বিদ্যাপীঠে তিনজন শিক্ষক-শিক্ষিকা ও একজন শিক্ষাকর্মী ওই তালিকায় আছেন। ঝাড়গ্রাম ব্লকের চুবকা অঞ্চলের বল্লা বিদ্যাপীঠের (উচ্চ মাধ্যমিক) টিচার ইনচার্জ পলাশ চন্দ বলছেন, ‘‘উচ্চমাধ্যমিক স্তরে বিজ্ঞান শাখা কী ভাবে চলবে, বুঝতে পারছি না।’’ দু’জন শিক্ষাকর্মীর চাকরি যাওয়ায় স্কুলে ঘণ্টা বাজানো ও জল দেওয়া, মিড ডে মিল দেখাশোনার কেউ রইলেন না বলেও জানান তিনি। ঝাড়গ্রাম ব্লকের আগুইবনি অঞ্চলের বিরিহাঁড়ি বিদ্যাপীঠেও (উচ্চ মাধ্যমিক) ১৩ জন শিক্ষকের মধ্যে তিন জনের চাকরি গিয়েছে।

অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস-এর পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অমিতেশ চৌধুরীর কথায়, ‘‘অনেক স্কুলেই একাধিক বিষয়ের শিক্ষক থাকবে না।’’ এবিটিএ-এর পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক জগন্নাথ খান বলেন, ‘‘বৈধ শিক্ষকদের চাকরি যাতে বহাল থাকে, সেই দাবিতে লড়াই জারি থাকবে।’’ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি রামজীবন মান্ডি বলেন, ‘‘এই রায় চূড়ান্ত অমানবিক। মানতে পারছি না।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

midnapore SSC

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}