ফাইল চিত্র।
দীর্ঘদিন ধরে চলা 'অচলাবস্থা' কাটার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে মেদিনীপুর মহিলা কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কে। জানা যাচ্ছে, ‘দিদিকে বলো’-তে নাগাড়ে ফোন করে নিজেদের সমস্যার কথা জানিয়েছিলেন এই ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের অনেকে। নবান্নের 'গ্রিভান্স সেলে'ও সমস্যার কথা জানিয়েছিলেন একাংশ গ্রাহক। তারপরে রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষস্তর থেকে ব্যাঙ্কটির সমস্যা সমাধানের বার্তা পাঠানো হয় জেলায়। সেই বার্তা পেয়ে ওই ব্যাঙ্কের ঋণ খেলাপীদের উদ্দেশে এক বিজ্ঞপ্তি জারি করেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক রশ্মি কমল। সূত্রের খবর, বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে অনাদায়ী সব ঋণ শোধ করতে হবে। না হলে পশ্চিমবঙ্গ সমবায় আইন ২০০৬ ও নিয়মাবলী ২০১১ অনুযায়ী এবং ‘পাবলিক ডিমান্ড রিকোভারি’ আইন অনুযায়ী ঋণ খেলাপীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সমবায় আধিকারিক সজল রায় বলেন, ‘‘ওই বিজ্ঞপ্তির পরে ঋণ পরিশোধ করতে চেয়ে ঋণগ্রহীতারা যোগাযোগ করতে শুরু করেছেন। ব্যাঙ্ক ও গ্রাহকদের স্বার্থে যে পদক্ষেপ করার করা হচ্ছে।’’ মহিলা সমবায় ব্যাঙ্কের পরিচালন কমিটির সম্পাদিকা ফুলটুসি দাসের আশা, ‘‘আমি শুনেছি, ব্যাঙ্কের সমস্যা নিয়ে গ্রাহকদের অনেকে ‘দিদিকে বলো’-তে ফোন করেছিলেন। আশা করি, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ঋণগ্রহীতারা ঋণ পরিশোধ করে দেবেন।’’
এই মহিলা সমবায় ব্যাঙ্কের প্রায় ১ কোটি ৩১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা তছরুপের অভিযোগে এক মামলা রুজু হয়। সেই মামলায় পূর্বতন পরিচালন কমিটির কয়েকজনকে গ্রেফতারও করে সিআইডি। ওই তদন্ত এখনও চলছে। লেনদেন প্রায় বন্ধ থাকায় ব্যাঙ্কটি দীর্ঘদিন ধরে ধুঁকছিল। গ্রাহকেরা বছর কয়েক ধরেই নিজেদের টাকা তুলতে পারছিলেন না বলে অভিযোগ। প্রশাসনের এক সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি ব্যাঙ্কের বর্তমান পরিচালন কমিটির সম্পাদিকা ফুলটুসি দাসকে ডেকে পাঠিয়ে খোঁজখবর নেন জেলাশাসক রশ্মি কমল। এরপরই ঋণ খেলাপীদের উদ্দেশে ওই বিজ্ঞপ্তি জারি করেন জেলাশাসক।
ব্যাঙ্কেরই এক সূত্রে খবর, এখন এই ব্যাঙ্কে গ্রাহক সংখ্যা প্রায় সাড়ে আট হাজার আর ঋণগ্রহীতার সংখ্যা প্রায় আড়াইশো। বেশিরভাগ ঋণগ্রহীতাই ঋণ পরিশোধ করেননি। ব্যাঙ্কটির মূল কার্যালয় মেদিনীপুরে। অন্যত্র আরও দু’টি শাখা রয়েছে। জানা যাচ্ছে, শুধুমাত্র একটি শাখা থেকেই ২ কোটি ৯৩ লক্ষ টাকার ঋণ দেওয়া হয়েছিল। ওই শাখায় বর্তমানে সুদ-সহ অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ৯৭ লক্ষ টাকা। ২০১১ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে দেদার ঋণ দেওয়া হয়েছে। একজনকে না কি ১ কোটি টাকারও ঋণ দেওয়া হয়েছে! একই গ্রাহককে কম সময়ের মধ্যে একাধিকবার ঋণ দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। যেমন মেদিনীপুরের কর্ণেলগোলার রাজারপুকুর এলাকার এক বাসিন্দাকে ২০১১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ১০ লক্ষ টাকা, ২০১২ সালের ১৭ নভেম্বর ১৫ লক্ষ টাকা, ২০১৩ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০ লক্ষ টাকা এবং ২০১৫ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ১৪ লক্ষ টাকা ঋণ দেওয়া হয়। মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর সরণির এক বাসিন্দাকে ২০১৩ সালের ২৫ মে ১ লক্ষ টাকা, ২০১৩ সালের ২৪ অক্টোবর ১৮ লক্ষ টাকা এবং ২০১৪ সালের ৯ জানুয়ারি ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ঋণ দেওয়া হয়। এঁরা কেউই পরে আর সম্পূর্ণ ঋণ পরিশোধে আগ্রহ দেখাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy