নিকাশি নালার জল জমে রয়েছে খড়্গপুরের আনন্দপুরে। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।
ডেঙ্গির প্রকোপ বেড়ে চলেছে পশ্চিম মেদিনীপুরে। মশাবাহিত এই রোগে এ বার পাঁচ বছরের এক শিশুও আক্রান্ত হয়েছে। শিশুটি এখন মেদিনীপুর মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন। পাশাপাশি, আরও দুই ডেঙ্গি আক্রান্ত যুবতী মেডিক্যালে ভর্তি রয়েছেন।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক সূত্রে খবর, নতুন করে ডেঙ্গি আক্রান্ত এই তিনজনের মধ্যে দু’জনই গড়বেতা-৩ ব্লকের বাসিন্দা। পাঁচ বছরের শিশুটির বাড়ি নবকোলায়। পঁচিশ বছরে এক যুবতীর বাড়ি মেটাডহরে। আর সাতাশ বছর বয়সী আর এক যুবতী খড়্গপুর-১ ব্লকের বাসিন্দা। জ্বর নিয়ে বেশ কয়েকদিন আগে এই তিনজন মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি হন। রক্ত পরীক্ষার পরে দেখা যায়, তিন জনই ডেঙ্গি আক্রান্ত। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “ডেঙ্গির রক্তপরীক্ষায় তিনজনের ‘পজিটিভ রিপোর্ট’ এসেছে। তিনজনই এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। যা যা ব্যবস্থা নেওয়ার সবই নেওয়া হচ্ছে।”
এই নিয়ে চলতি বছরে পশ্চিম মেদিনীপুরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ২৫। এর মধ্যে সম্প্রতি আক্রান্ত হয়েছেন ১৪ জন। সপ্তাহখানেক আগে গড়বেতা-৩ ব্লকের নবকোলায় জ্বরে দুই বালিকার মৃত্যু হয়। তারপর জ্বর আক্রান্তদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে কলকাতার স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনে পাঠানো হয়। গত সপ্তাহে রিপোর্ট আসার পরে জেলায় হইচই শুরু হয়। ১৮ জনের নমুনা পাঠানো হয়েছিল। দেখা যায়, এর মধ্যে ১১ জনেরই ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে।
তারপরও ডেঙ্গি আক্রান্তের রোগ যে ভাবে ছড়াচ্ছে তাতে উদ্বিগ্ন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের একাংশ। বিশেষ করে এক শিশু ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হওয়ায় উদ্বেগ আরও বেড়েছে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বৃহস্পতিবার জরুরি বৈঠক হয়েছে জেলা স্বাস্থ্য ভবনে। সেখানে ছিলেন সরকারি হাসপাতালগুলোর সুপার, বিভিন্ন এলাকার বিএমওএইচরা। বৈঠকে ডেঙ্গি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। জল জমা ঠেকাতে ব্যবস্থা নিতে বলেন। জেলার সব এলাকায় সচেতনতা শিবির করার উপরও জোর দেওয়া হয়। সেই মতো শিবির শুরু হয়েছে। শুক্রবার গড়বেতা-৩ এবং খড়্গপুর-১ ব্লকে শিবির হয়। খড়্গপুরে ডেঙ্গি মোকাবিলা নিয়ে এক বৈঠকও হয়। সেখানে ছিলেন জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান। তাঁর আশ্বাস, “এখনই উদ্বেগের কিছু নেই। পরিস্থিতির দিকে সতর্ক নজর রাখা হয়েছে।”
ডেঙ্গি ঠেকাতে এলাকা পরিচ্ছন্ন রাখতে বলেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। সব পঞ্চায়েত সমিতি এবং পুরসভাকে সতর্ক করা হয়েছে। কোনও ভাবে যাতে জল বেশিক্ষণ জমে না থাকে এবং জমা জলে মশার লার্ভা না জন্মাতে পারে সেই বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। শুক্রবারও স্বাস্থ্য দফতরের উদ্যোগে বিভিন্ন এলাকায় লিফলেট বিলি করা হয়। জেলার এক স্বাস্থ্য-কর্তার স্বীকারোক্তি, “মানুষ সচেতন না হলে এই রোগ প্রতিরোধ করা কঠিন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy