Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪

বাড়ছে শ্যামেলিয়ন পোষার ঝোঁক, সক্রিয় চক্রও

জঙ্গলে খাবার নেই। রয়েছে চোরা কারবারও। প্রাণ বাঁচাতে বেরিয়েই প্রাণ-সঙ্কট। সমস্যা ঠিক কোথায়?জঙ্গলে খাবার নেই। রয়েছে চোরা কারবারও। প্রাণ বাঁচাতে বেরিয়েই প্রাণ-সঙ্কট। সমস্যা ঠিক কোথায়?

লোকালয় থেকে মাঝে মধ্যেই উদ্ধার হচ্ছে শ্যামেলিয়ন। —নিজস্ব চিত্র

লোকালয় থেকে মাঝে মধ্যেই উদ্ধার হচ্ছে শ্যামেলিয়ন। —নিজস্ব চিত্র

বিশ্বসিন্ধু দে
দাঁতন শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:৩৯
Share: Save:

দিনকয়েক আগের কথা, বেলদা থানার সাঁঞ্যাপাড়া এলাকার যুগলকিশোর দে বন দফতরের হাতে একটি শ্যামেলিয়ন তুলে দিয়েছিলেন। বন দফতরকে তিনি জানিয়েছিলেন, উদ্ধারের পর অনেকেই নাকি প্রাণীটিকে নিতে চেয়েছিলেন। বিনিময়ে আর্থিক প্রস্তাবও পেয়েছিলেন যুগলকিশোর। পাছে হাতছাড়া হয়ে যায়, সেই ভয়ে তিনি দ্রুত প্রাণীটি বন দফতরে জমা দিয়েছিলেন। যুগলকিশোরের কথায়, ‘‘টাকার প্রস্তাব পেয়েই বুঝেছিলাম, এর পিছনে পাচার চক্র কাজ করছে।’’

বন দফতরও মানছে শ্যামেলিয়ন পাচার চক্রের অস্তিত্বের কথা। স্থানীয় সূত্রের খবর, অনেকে পোষার জন্য শ্যামেলিয়ন কিনতে চান। সেই চাহিদা মেটাতেই কাজ করছে পাচার চক্রগুলি। কারণ, জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসা শ্যামেলিয়ন বিক্রি করতে পারলেই জোটে নগদ দু’চার হাজার টাকা। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা বন দফতরের আধিকারিক অরূপ মুখোপাধ্যায় বলছিলেন, ‘‘নিছক পোষার জন্যই অনেকে এই প্রাণীটিকে কিনতে চান। তবে শ্যামেলিয়নের চাহিদাটা রাজ্যের মধ্যেই। রাজ্যের বাইরে পাচার হওয়ার তেমন খবর এখনও আমাদের কাছে নেই।’’ তাঁর মতে, দেখতে সুন্দর বলেই অনেকে শ্যামেলিয়ন পুষতে চান। তবে শ্যামেলিয়ন পোষ মানে না।

কয়েকদিন আগে মোহনপুর বৈতা মহেন্দ্রনাথ হাইস্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র, ঝাটিয়া গ্রামের রাহুল জানাও রাস্তায় একটি শ্যামেলিয়ন দেখতে পেয়েছিল। রাহুল জানায়, অনেকেই প্রাণীটিকে মেরে ফেলার জন্যে জড়ো হয়েছিলেন। কিন্তু শেষমেশ প্রাণীটিকে উদ্ধার করা গিয়েছিল। বন দফতরের এক আধিকারিকের আশঙ্কা আগামী দিনে এই শ্যামেলিয়ন লুপ্তপ্রায় প্রাণীতে পরিণত হতে চলেছে। অরূপের কথায়, ‘‘শ্যামেলিয়নের বংশবৃদ্ধি হচ্ছে এটা ঠিক। কিন্তু বাস্তুচ্যুত হয়ে অনেক সময় মারাও পড়ছে প্রাণীটি।’’

বন দফতর জানাচ্ছে, শ্যামেলিয়ন এক ফুটের বেশি লম্বা হয় না। এবং বিপদ দেখলেই সহজে রং পরিবর্তন করতে পারে। আসলে এই প্রাণীটির চামড়ার নীচে এক ধরনের কণা থাকে। যাকে ক্যারোটিন বলে। যা আসলে সালফার সমৃদ্ধ প্রোটিন কণা। কতগুলি পেপটাইড বন্ড যুক্ত হয়ে এগুলি তৈরি। যাদের রং সাদাটে, সঙ্গে হলুদ এবং কোথাও কোথাও কালো বা বাদামি রং রয়েছে। তাদের শরীরে আলো ও তাপের প্রভাবে স্বয়ংক্রিয় ভাবে রঙয়ের কণাগুলো নির্দিষ্ট অনুপাতে মিশে শরীরের রঙ পরিবেশের রঙয়ের সঙ্গে মিলিয়ে ফেলে। প্রসঙ্গত, ৩৬০ ডিগ্রি কোণে দেখতে পায় শ্যামেলিয়ন।

শ্যামেলিয়নদের বাঁচাতে প্রচার চালানো হচ্ছে বন দফতরের তরফে। মিলছে ফলও। সেই কারণেই ইদানীং শ্যামেলিয়ন নজরে এলেই, তা বন দফতরের হাতে তুলে দিচ্ছেন মানুষ— দাবি প্রাণী বিশেষজ্ঞদের। (শেষ)

অন্য বিষয়গুলি:

দাঁতন Dantan Chameleon Pet
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy