ফুল-মালায় বরণ ভারতীকে। সঙ্গে তন্ময় ঘোষ (পিছনে গেরুয়া পাঞ্জাবি)। কেশপুরের আমড়াকুচিতে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল
দুরন্ত ঘূর্ণি।
লোকসভা ভোটের প্রচারে কেশপুরে গিয়েছেন বিজেপি প্রার্থী ভারতী ঘোষ। তাঁকে ঘিরে শুরু হল স্লোগান।
মঙ্গলবার দুপুর। ঘাটালের পরাজিত বিজেপি প্রার্থী ভারতী কেশপুর গেলেন। স্লোগান উঠল ‘ভারতী ঘোষ ওয়েলকাম’। শুধুই কি স্বাগতম বার্তা! ফুল, মালা, শঙ্খধ্বনি কী নেই! কেশপুরের আমড়াকুচি থেকে ভারতীর গাড়ি যখন চরকার দিকে যাচ্ছে তখন চড়া রোদেও রাস্তার দু’পাশে ঠায় দাঁড়িয়ে ভিড়।
দুরন্ত ঘূর্ণি।
সময়টা নব্বইয়ের দশকের শেষ। সবে তৈরি হয়েছে তৃণমূল। কেশপুর তখন যেন যুদ্ধক্ষেত্র। সেসময় সিপিএমের দাপুটে নেতা সদ্য প্রয়াত এন্তাজ আলি যাঁর উপর সবচেয়ে বেশি ভরসা রাখতেন তাঁর নাম তন্ময় ঘোষ। প্রায় সবসময় লাল পোশাকে দেখা যাওয়া এই নেতারও নাম-বদনাম কম ছিল না।
মঙ্গলবার দুপুর। কেশপুরে ভারতীকে পথ দেখাচ্ছিলেন সেই তন্ময়ই। সিপিএমের এরিয়া কমিটির সম্পাদক তন্ময়ের গায়ে এ দিন ছিল গেরুয়া পাঞ্জাবি। মুখে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান। চরকার সভাতেই যোগ তন্ময় যোগ দিলেন বিজেপিতে। দলবদলের ব্যাখ্যা দিলেন, ‘‘সন্ত্রাসের মোকাবিলা করতে, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতেই বিজেপিতে এলাম।’’
তন্ময় সিপিএমের জেলা সম্পাদক তরুণ রায়ের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত। স্থানীয় সূত্রের খবর, লোকসভা ভোটের ফলের পরে কেশপুরে যে ভাবে একের পর এক এলাকায় বিজেপির পতাকা তোলা হচ্ছিল তাতে নেপথ্যে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন তন্ময়। তাঁর এই দলবদল সম্পর্কে সিপিএমের জেলা সম্পাদক বলেন, ‘‘ওকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’’ কবে? তরুণের জবাব, ‘‘আগেই! দলের নীতি- আদর্শ থেকে যারা সরে যায়, আমরা তাদের বহিষ্কারই করি।’’
দুরন্ত ঘূর্ণি।
লোকসভা ভোটের পর কেশপুরে এসেছিলেন ঘাটাল কেন্দ্রের জয়ী তৃণমূল প্রার্থী দেব। সেসময় কেশপুরে সাধারণ মানুষের মধ্যে তেমন উৎসাহ দেখা যায়নি। আর এ দিন ভারতীর সফরে ছিল উল্টো ছবি। পুলিশের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন জেলার এই প্রাক্তন পুলিশ সুপার। চরকার সভায় ভারতীকে বলতে শোনা যায়, ‘‘পুলিশকে বলছি, নিরীহদের অত্যাচার করা যাবে না। ন্যায় করবেন। ইউনিফর্ম পরে অন্যায় করবেন না। আমরা যখন ক্ষমতায় আসব, তখন সুদে- আসলে ফেরত দিয়ে দেব।’’ অদূরে তখন কেশপুরের ওসি হীরক বিশ্বাস। কেশপুর যে তাঁর অগ্রাধিকারে থাকবে তাও বুঝিয়ে দিয়েছেন ঘাটালের বিজেপি প্রার্থী। তাঁর কথায়, ‘‘কেশপুর আমাদের অগ্রাধিকার। যতটা পারব, নজর দেব। যতটা করার করব। কেশপুর পিছিয়ে পড়ছে। এখানে কোনও উন্নয়ন হয়নি। নিজের জমিতে চাষ করতে গেলেও তৃণমূলের সিন্ডিকেটকে পয়সা দিয়ে খুশি করতে হয়। এটা চলতে পারে না। আমরা চলতে দেবও না।’’
তন্ময়ের বিজেপিতে যোগদান নিয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির প্রতিক্রিয়া, ‘‘বামেরাই রাম হচ্ছে। এ আর নতুন কি!’’ বিজেপির সভা থেকে পুলিশকেও তো হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে? পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার বলেন, ‘‘ভিডিয়ো খতিয়ে দেখে যা পদক্ষেপ করার পুলিশ করবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy