Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

সিপিএমকে ‘রাজভোগ সৌজন্য’ পুরপ্রধানের

এ দিন শহরের ৩৫টি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের নিয়ে পুরসভায় অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি ছিল সিপিএমের। অবস্থান শেষে পুরপ্রধানকে স্মারকলিপি দিতে যান সিপিএমের নেতৃত্ব।

সিপিএমের প্রতিনিধিদের রাজভোগ বাড়িয়ে দিচ্ছেন পুরপ্রধান। নিজস্ব চিত্র

সিপিএমের প্রতিনিধিদের রাজভোগ বাড়িয়ে দিচ্ছেন পুরপ্রধান। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:০১
Share: Save:

বছর পাঁচেক আগে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর নেতৃত্বে এক বাম প্রতিনিধি দল নবান্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে গেলে মমতা তাঁদের চা এবং ফিশফ্রাই খাইয়েছিলেন। সেই ফিশফ্রাই খাওয়ার পরে বিমানবাবুদের যথেষ্ট সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। রেলশহরে সেই বিতর্কই ফিরে এল রাজভোগের হাত ধরে। বৃহস্পতিবার নানা দাবিতে পুরসভায় স্মারকলিপি দিতে যাওয়া সিপিএম নেতৃত্বকে রাজভোগ খাইয়ে দিলেন পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার।

এ দিন শহরের ৩৫টি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের নিয়ে পুরসভায় অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি ছিল সিপিএমের। অবস্থান শেষে পুরপ্রধানকে স্মারকলিপি দিতে যান সিপিএমের নেতৃত্ব। পুরসভা সূত্রে খবর, দরিদ্রদের ১ টাকার বিনিময়ে জমির লিজ, স্টেডিয়াম নির্মাণে গতি, বিধবা-বার্ধক্য ভাতায় নতুনদের সুযোগ, পুকুর ভরাট বন্ধ-সহ ১৮ দফা দাবিতে স্মারকলিপি দেন তাঁরা। সেই সময়েই সিপিএম নেতাদের দিকে প্লেটভর্তি রাজভোগ বাড়িয়ে মিষ্টিমুখ করান পুরপ্রধান। কয়েকজন সিপিএম নেতা ওই রাজভোগ খান। এই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরেই শোরগোল ছড়িয়েছে শহরের রাজনীতিতে। দিলীপ ঘোষ সাংসদ হয়ে যাওয়ার পরে খড়্গপুর শহর বিধানসভায় উপনির্বাচন আসন্ন। সামনের বছর পুরসভার মেয়াদও শেষ হচ্ছে। তার আগে এই রাজভোগ বার্তায় নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ দেখছে জেলার রাজনৈতিক মহল। যদিওপুরপ্রধানের দাবি, রাজভোগ খাইয়ে তিনি সৌজন্য করেছেন মাত্র।

রেলশহরে রাজনৈতিক সৌজন্যের নজির আগেও রয়েছে। একসময়ে রাজনৈতিক সৌজন্যে এগিয়ে শহরে সকলের ‘চাচা’ হয়ে উঠেছিলেন প্রয়াত কংগ্রাস বিধায়ক জ্ঞান সিংহ সোহনপাল। গত বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হয়ে চাচার সঙ্গে গিয়ে দেখা করে সৌজন্যের রাজনীতিকে উস্কে দিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।গত জুলাইতে বিজেপির স্মারকলিপি কর্মসূচি চলাকালীন রেলের এলাকার উন্নয়নে বিজেপির সহযোগিতা চেয়েছিলেন পুরপ্রধান প্রদীপ। এ বার তিনিই স্মারকলিপি দিতে আসা সিপিএমকে মিষ্টিমুখ করালেন। তিনি বলেন, “আমার অফিসে সিপিএমের নেতারা এসেছিলেন। গতকাল বিশ্বকর্মা পুজো ছিল। তাই রাজভোগ খাইয়েছি। এটা সৌজন্য। আর এ দিনের স্মারকলিপির অধিকাংশ দাবি আমরা ইতিমধ্যে পূরণ করে ফেলেছি।”

যদিও বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ সিপিএম। এ দিনের কর্মসূচির নেতৃত্বে থাকা সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য সবুজ ঘোড়ই বলেন, “পুরপ্রধান হয়তো সৌজন্য রক্ষার জন্য রাজভোগ দিয়েছেন। আমি রাজভোগ খাইনি। কে খেয়েছে বলতে পারব না।’’ একই সঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘রাজভোগের বিষয়টি আমাদের কাছে বড় নয়। স্মারকলিপি জমার বিষয়টিই আসল। সেই কর্মসূচি সফল হয়েছে।”

বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। দলের রাজ্য নেতা তুষার মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কলকাতায় সিপিএমকে ফিসফ্রাই খাইয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। খড়্গপুরে এখন তৃণমূল ক্ষয়িষ্ণু হতে চলেছে। তাই সিপিএমকে সবল করতে রাজভোগ খাওয়াচ্ছেন পুরপ্রধান। আসলে দু-জনেই অস্তিত্ব টেকাতে একে-অপরকে আঁকড়ে ধরছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Kharaghpur CPM TMC BJP Municipality
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy