প্রতীকী ছবি।
পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম জেলা মিলিয়ে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ৫৪ টি কলেজ রয়েছে। এর মধ্যে ৪২টি কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে পড়ানো হয়। ওই সব কলেজে পাঠক্রম মাফিক পঠনপাঠন শেষ করা হবে কী ভাবে, তা নিয়ে রীতিমতো চিন্তিত সব মহল। কারণ লকডাউন উঠলে এক মাসের মধ্যে পরীক্ষার কথা জানানো হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বুধবার সমস্ত কলেজের অধ্যাপকদের নিয়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আলোচনায় বসতে চলেছেন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
কাঁথি প্রভাত কুমার কলেজের প্রাণিবিদ্যার ষষ্ঠ সিমেস্টারের এক ছাত্রের দাবি, লিখিত পরীক্ষার মতোই সমান সংখ্যক নম্বরের প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা রয়েছে। কিন্তু অনলাইন পড়াশোনায় প্র্যাকটিক্যালের ক্লাস হয়নি। যা কোনওভাবেই এক মাসে শেষ করা যাবে না। বাজকুল কলেজের ভূগোলের এক অধ্যাপক জানান, সাম্মানিক বিভাগ ছাড়া পাসকোর্সে একটি বিষয়ে তিন থেকে চারজন শিক্ষক পড়ান। এ ক্ষেত্রে একজন পড়ুয়ার পক্ষে খুব অল্প সময়ের মধ্যে তিনজন শিক্ষকের বক্তব্য শুনে নিজেকে তৈরি করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার রাজ্যের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের নিয়ে জরুরি বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ‘‘লকডাউন উঠে গেলে এক মাসের মধ্যে কলেজগুলিকে পরীক্ষা নিতে হবে।’’ কিন্তু কী ভাবে সেই পরীক্ষা হবে সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী। তারপর থেকেই প্রশ্ন উঠেছে ষষ্ঠ সিমেস্টারের পাঠক্রম অসম্পূর্ণ রেখে কী ভাবে কলেজের পরীক্ষা হবে? এতে পড়ুয়ারাও বঞ্চিত হতে পারেন। যদি এক মাসের মধ্যেই বাকি পাঠক্রম শেষ করতে হয় তবে কী ভাবে অধ্যাপকেরা তা করবেন তা নিয়েো প্রশ্ন চিহ্ন রয়ে গিয়েছে। এ ব্যাপারে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলোর অধ্যক্ষ সংগঠনের সম্পাদক অমিত কুমার দে বলেন, ‘‘অনলাইন পঠন-পাঠনে অনেক অধ্যাপকও স্মার্টফোন নিয়ে ব্যক্তিগত সমস্যার কথা জানিয়েছেন। বিজ্ঞান ও কলা বিভাগে কিছু কিছু বিষয়ে সমস্যা চলছে। তবে চূড়ান্ত পরীক্ষা কোন পদ্ধতিতে এবং বাকি পাঠক্রম কী ভাবে শেষ করা যাবে এখনও তা ঠিক হয়নি। সমস্ত কলেজের অধ্যক্ষকে নিয়ে মিটিং করে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে বলে শুনেছি।’’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বুধবার কলেজগুলির সঙ্গে ভিডিয়ো বৈঠক হবে।’’ কলেজগুলির সঙ্গে ওই বৈঠকে থাকবেন অধ্যক্ষেরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে থাকবেন পরীক্ষা নিয়ামক প্রমুখ। ফাইনাল সিমেস্টার পরীক্ষার সম্ভাব্য পদ্ধতি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হওয়ার কথা। সাধারণত এপ্রিলের শেষ কিংবা মে মাসের শুরুতে কলেজের চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা হয়। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) শিক্ষাবর্ষ এবং পরীক্ষা নিয়ে গাইডলাইন পাঠিয়েছে। লকডাউন শেষে সব কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় খোলার অন্তত এক মাস পরে পরীক্ষা হওয়ার কথা।
এমন ঘটনায় ছাত্রছাত্রীরা মানসিক চাপে পড়তে পারেন বলে আশঙ্কা করছে ছাত্র সংগঠনগুলিও। দেশপ্রাণ মহাবিদ্যালয়ের টিএমসিপির ইউনিট সভাপতি আবেদ আলি খানের দাবি, ‘‘প্রায় সমস্ত কলেজে পাসকোর্সে অনলাইন পঠনপাঠন হচ্ছে না। বিশাল পাঠক্রম এক মাসে শেষ করতে গেলে পড়ুয়াদের উপর প্রচণ্ড চাপ বাড়বে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও রাজ্য সরকারের বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত।’’ ডিএসওর পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কমিটির সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায় বলেন, ‘‘এক মাসের মধ্যে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত অবৈজ্ঞানিক। লকডাউন ওঠার পরে এক মাস পর্যাপ্ত সময় নয়। তা ছাড়া ছাত্রছাত্রীদের উপরে চাপ কমাতে যদি পাঠক্রম কমিয়ে দেওয়া হয় তাতেও ক্ষতি হবে। এ ব্যাপারে আমরা বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy