বিতর্কিত সেই পোস্ট।
হোক না রাজ্য জুড়ে সম্পূর্ণ লকডাউন। করোনা সংক্রমণে রেলশহর রেকর্ড গড়লেও ক্ষতি নেই। তা বলে কি মিশ্র সংস্কৃতির শহরে গণেশ পুজোর আচারে কাটছাঁট করা যায়! শুক্রবার বিকেলে বিধি ভেঙে দোকানপাট খুলল রেলশহরে। চলল পুজোর কেনাকাটাও। বিতর্কে জড়ালেন শাসক দলের বিধায়কও।
তৃণমূল বিধায়ক প্রদীপ সরকারের কয়েকজন অনুগামী এ দিন দুপুরে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দিয়ে জানান, বিধায়কের প্রচেষ্টায় গণেশ পুজোর জন্য বিকেল ৪টে থেকে লকডাউন শিথিল হল। বিকেলে দেখা যায়, শহরের খরিদা, মালঞ্চরোড, গোলবাজারে ফলের দোকান, দশকর্মা ভাণ্ডার থেকে চা-মিষ্টির দোকানে ভিড় জমিয়েছেন ক্রেতারা। বিধায়ক নিজে কিছু বলেননি। বিধিভেঙে লকডাউন শিথিল করার ঘোষণা করেছেন তাঁর অনুগামীরা। কিন্তু দায় কি এড়াতে পারেন বিধায়ক? বিশেষ করে যেখানে করোনা সংক্রমণ চোখ রাঙাচ্ছে।
প্রদীপ সরকার বলছেন, “মিশ্র সংস্কৃতির এই শহরে গণেশ পুজো বড় উৎসব। মানুষের ভোটে আমি জিতেছি। তাই মানুষের কথা প্রশাসনের কাছে পৌঁছে দিয়ে দোকানপাট কয়েক ঘণ্টার জন্য খোলার আর্জি জানিয়েছিলাম। দোকান খুলবে কি না সেটা প্রশাসন দেখবে।’’ খড়্গপুরের মহকুমাশাসক বৈভব চৌধুরী বলেন, “লকডাউন শিথিল বা দোকানপাট খোলার বিষয়টি আমিও শুনেছি। তবে সরকারিভাবে এমন কোনও নির্দেশিকা আসেনি। আমরাও কোনও অর্ডার দিইনি।।” শুক্রবার সন্ধ্যায় খড়্গপুর শহরে দোকান খোলার জন্য ৫০ জনকে ধকা হয়েছে।
প্রশাসন নির্দেশ দেয়নি। তা হলে তাঁর অনুগামীরা তো নিয়ম ভাঙায় উৎসাহ দিলেন। ব্যবস্থা নেবেন কি? প্রদীপের মন্তব্য, ‘‘আমার কথা যদি কেউ ফেসবুকে পোস্ট করে থাকে তবে বেশ করেছে।” অনুগামীদের প্রতি নেতার সমর্থন অটুট। যদিও বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হতে এক প্রদীপ অনুগামী মালঞ্চর তৃণমূল কর্মী শৈবাল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমি জানতাম না যে সরকারি কোনও নির্দেশ নেই। আসলে সেন্টু নামে এক নেতা এমন কথা জানানোয় আমি ফেসবুকে লিখেছি।” যদিও কৌশল্যার ওই যুব নেতা বিবেকানন্দ দাসচৌধুরী ওরফে সেন্টু বলেন, “আমি শুনেছিলাম দোকান ৪টে থেকে খুলবে তাই শৈবাল চট্টোপাধ্যায়কে বলেছিলাম। যিনি লিখেছেন তিনি তাঁর দায়িত্বে লিখেছেন।”
বিধায়ক ঘনিষ্ঠদের একাংশের দাবি, পুজোর ঘিরে আবেগে দোকানপাট খুলেছে। এর সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টের সরাসরি কোনও সম্পর্ক না-ও থাকতে পারে। যদিও বাস্তব চিত্র ছিল অন্য। দোকানপাট খোলা। পথে নেমেছে মানুষ। খরিদার দশকর্মা দোকানি রাজকিরণ গুপ্ত বলেন, “সবাই দোকান খুলছে দেখে আমরাও খুলেছি। ফেসবুকেও তো কথা লেখা হয়েছে।”
বিজেপির খড়্গপুর সদর বিধানসভা পর্যবেক্ষক অভিষেক অগ্রবাল বলেন, “গণেশপুজোর আগের দিন লকডাউন প্রত্যাহারে আমরা অনেক আগেই দাবি জানিয়েছিলাম। শহরের বিধায়ক যদি এই লকডাউনের বিরোধী হতেন তবে তখন তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে জানাতে পারতেন। মানুষের চাপের মুখে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে রাজ্য সরকারের নির্দেশের তিনি বিরোধিতা করলেন।”
বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের জেলা মুখপাত্র দেবাশিস চৌধুরী বলেন, “রাজ্যের ঘোষিত লকডাউনে যদি দোকানপাট খুলে যায় তবে ঠিক হয়নি।” আর তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, “রাজ্য সরকার যে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটাই শিরধার্য। খড়্গপুরে কি হয়েছে জানি না। আমি বিধায়কের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy