অপেক্ষা: পেটুয়া মৎস্য বন্দরে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে ট্রলার। এখনও সারানোর কাজ শুরু হয়নি। নিজস্ব চিত্র
সামনেই জুন মাসে মাছ ধরার মরসুম শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু তার আগে ট্রলার, লঞ্চ তৈরি বা মেরামতি এখনও শুরুই করতে পারেননি অধিকাংশ ট্রলার মালিক। পরিস্থিতি যা, তাতে মৎস্যজীবীরা নতুন মরসুমেও সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতে পারবেন কিনা তা নিয়ে প্রবল আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দিঘা মোহনা ছাড়াও শৌলা, পেটুয়া মৎস্য বন্দর এবং শঙ্করপুরে ট্রলার কিংবা লঞ্চ তৈরি এবং মেরামত করা হয়। কিন্তু লকডাউন চলায় এবছর সেই কাজ ঠিকমতো শুরুই হয়নি। কোথাও কোথাও কাজ হলেও তা খুবই ঢিমেতালে চলছে। মৎস্যজীবী সংগঠনগুলির তরফে জানানো হয়েছে, গত ১৫ এপ্রিল থেকে সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া যাবে না বলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল কেন্দ্র সরকার। প্রতি বছর ওই নিষেধের জেরে এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে সমুদ্রে মাছ ধরা বন্ধ থাকে। ওই সময়ে মৎস্য বন্দর সংলগ্ন এলাকায় ট্রলার এবং লঞ্চ তৈরি এবং মেরামতের কাজ হয়। এবছর করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউন চলাকালীন সেই কাজ একদমই গতি হারিয়েছে।
শঙ্করপুর ফিশারমেন অ্যান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক স্বদেশ নায়ক বলেন, ‘‘কিছু ক্ষেত্রে মেরামতির কাজ হলেও খুব অল্প সংখ্যক লোক নিয়োগ করে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং মুখাবরণ পরে কাজ চলছে।’’
ট্রলার মালিকদের দাবি, বছরের এই সময়ে তাঁরা ট্রলারের কর্মচারীদের নতুন ব্যবসা শুরুর আগে অগ্রিম দাদন দেন।তারপর লঞ্চ কিংবা ট্রলার মেরামত হয়। একই সঙ্গে মাছ ধরতে যাওয়ার জাল কেনার কাজ সেরে ফেলা হয়। এবছর লকডাউনের জেরে সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া যাবে না বলে কেন্দ্র সরকারের ঘোষণার প্রায় দু সপ্তাহ আগে থেকেই বন্ধ হয়ে যায় ব্যবসা। ফলে ট্রলারের কর্মচারীদের অগ্রিম দাদন দেওয়া আটকে গিয়েছে বলে একাধিক ট্রলার মালিককের দাবি। পূর্ব মেদিনীপুরে দিঘা মোহনা এবং পেটুয়া মৎস্য বন্দর থেকে তিন হাজারের বেশি ট্রলার সমুদ্রে মাছ ধরতে যায়। এর উপরে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা-সহ নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা-সহ বেশ কয়েকটি জেলার কয়েক লক্ষ মৎস্যজীবী পরিবার নির্ভরশীল। দিঘা মোহনা ফিশারমেন অ্যান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শ্যামসুন্দর দাস বলেন, ‘‘গত মরসুমে প্রাকৃতিক দুর্যোগে মৎস্যজীবীরা অধিকাংশ সময় সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতে পারেননি। তারপর শেষ বেলায় করোনার প্রভাবে মাছ ধরার ‘ব্যান পিরিয়ড’-এর আগে থেকেই ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হয়েছে। নতুন মরসুমে ট্রলারগুলি সমুদ্রে যাওয়ার আগে মেরামত কিংবা নতুনভাবে তৈরি করা যাচ্ছে না। ব্যাঙ্ক থেকে প্রয়োজনীয় ঋণ পেতেও অসুবিধা হচ্ছে। এই অবস্থায় ট্রলার মালিক থেকে মৎস্যজীবীরা চরম সঙ্কটে পড়েছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy