ছবি: সদ্যোজাতের সঙ্গে মা ও বাবা। নিজস্ব চিত্র
কাজের খোঁজে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড় থেকে বেরিয়েছিলেন এক দম্পতি। ছ’মাস অন্ধ্রপ্রদেশের একটি ইট ভাটায় কাজ করার মাঝেই লকডাউনে সমস্যায় পড়েছিলেন। ফেরার পথেই তাঁদের এক কন্যাসন্তান জন্মায়। শুক্রবার স্বাস্থ্য দফতরের মাতৃযানে চেপে বাড়ি ফিরলেন তিনজনে। দম্পতির পাশাপাশি খুশি পরিবারের লোকজনও।
দাঁতন গ্রামীণ হাসপাতাল তথা স্বাস্থ্য দফতর ও পুলিশের সহযোগিতা ভুলতে পারবেন না ওয়দুল আলি মোল্লা। তাঁর বছর কুড়ির স্ত্রী নাজিরা বিবি জন্ম দিয়েছেন এক কন্যা সন্তানের। তিনদিন ধরে গর্ভবতী স্ত্রীকে নিয়ে কখনও পায়ে হেঁটে, কখনও বা মালবাহী গাড়িতে চেপে কোনও মতে ওড়িশা সীমান্তে দাঁতনের সোনাকোনিয়ায় পৌঁছন। কাজ নেই, জমানো টাকা শেষের দিকে। তার উপরবাড়ি ফেরার তাগাদা ছিলই।
পরের দিন মঙ্গলবার জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের উদ্যোগে বাড়ি ফেরার বাসে ওঠার আগে প্রসব বেদনায় কাতর হন নাজিরা। দাঁতন থানার পুলিশ অ্যাম্বুল্যান্স ডেকে তাঁকে দাঁতন গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করায়। মঙ্গলবার দুপুরেই কন্যাসন্তানের জন্ম দেন নাজিরা। তিনদিন পরে শুক্রবার, সুস্থ মা ও মেয়েকে নিয়ে খুশি মনে বাড়ি ফিরলেন যুবক। পুলিশ ও স্বাস্থ্য দফতরের সহযোগিতা ও সাহায্যে আপ্লুত ভাঙড়ের এই দম্পতি। এ দিন দুপুরে হাসপাতাল ছুটি দেয় তাঁদের। স্বাস্থ্য দফতর মাতৃযানে চাপিয়ে তাঁদের বাড়ি পাঠায়। নাজিরা বলেন, ‘‘যে পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছিলাম ভাবতে পারিনি দু’জনেই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে পারব।’’
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শুক্রবার দম্পতির হাতে কন্যাসন্তানের জন্মের শংসাপত্র দিয়েছে। যাতে পরবর্তীতে কোনও অসুবিধায় না পড়েন দম্পতি। কী নাম রাখলেন মেয়ের ? ওয়দুল জানান, ‘‘মেয়ের নাম রেখেছি নাফিসা। বাড়িতেও সবাই খুশি। পুলিশের এই মানবিকতার কথা ভুলব না।’’
নাফিসা মানে মূল্যবান। পথেই সেই রত্নকে পেয়েছেন ওয়দুল ও নাজিরা। দম্পতির কথায়, ‘‘প্রসবের নির্দিষ্ট সময়ের আরও একমাস বাকি ছিল।’’ তবে মা ও মেয়ে দু’জনেই সুস্থ। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরিশচন্দ্র বেরা বলেন, ‘‘সদ্যোজাতের মাঝে একটু জ্বর এসেছিল। আমরা চিন্তায় ছিলাম। চিকিৎসার পরে সুস্থ হয়েছে। এদিন মাতৃযানে তাঁদের বাড়ি পাঠানো হয়েছে।’’
গত মঙ্গলবার জেলার সবাই বাড়ি ফিরেছিলেন বাসে চেপে। কিন্তু স্ত্রীর প্রসব বেদনার কারণে বাসে উঠতে পারেননি ওই দম্পতির। তবে সন্তানের মুখ দেখে পথের কষ্ট ও বাড়ি ফিরতে দেরি হওয়ার দুঃখ মিটেছে দম্পতির। হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের ব্যবহারও আপ্লুত করেছে তাঁদের। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী সামসুদ্দিন আহমেদ ও খড়্গপুর মহকুমা শাসক বৈভব চৌধুরী হাসপাতালে এসে আর্থিক সাহায্যের পাশাপাশি অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস দিয়ে ছিলেন। সেই দিন তিনজনকে সুষ্ঠুভাবে বাড়ি ফেরানোর আশ্বাসও দিয়েছিলেন। সেই মতোই এদিন ছিল সব ব্যবস্থা।
বেলদা মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সুমনকান্তি ঘোষ বলেন, ‘‘সকলে সুস্থ আছেন। এদিন গাড়ি করে তাঁদের বাড়ি পাঠানো হল’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy