ঝাড়গ্রাম শহরের বাণীতীর্থ স্কুলে মাধ্যমিক উত্তীর্ণদের আড্ডা। মুখে নেই মাস্ক। মঙ্গলবার। ছবি: দেবরাজ ঘোষ
পরীক্ষা না দিয়েই উত্তীর্ণ! তবু ফল জানার উৎসাহ তো থাকেই। কোথাও অতি উৎসাহের কাছে হার মানল করোনা বিধি। আবার বিধি মানার ছবিও দেখা গেল পশ্চিম ও ঝাড়গ্রাম জেলার কিছু স্কুলে।
মঙ্গলবার প্রকাশিত হয় মাধ্যমিকের ফল। পর্ষদের তরফে কড়া ভাবে বলে দেওয়া হয়েছিল করোনা পরিস্থিতির জন্য ছাত্রছাত্রীরা নয়, অভিভাবকেরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুলে গিয়ে মার্কশিট, শংসাপত্র নিয়ে আসবেন। এদিন বেলা বাড়তেই দুই জেলার কিছু স্কুলে দেখা গেল বিপরীত ছবি। অভিভাবকেরা নন। স্কুলে স্কুলে ভিড় করল ছাত্রছাত্রীরাই। শালবনির জয়পুর হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক প্রশান্ত মণ্ডল বলেন, ‘‘মার্কশিট নিতে অভিভাবকেরা আসেন। বেশ কয়েকজন ছাত্রছাত্রীও এসেছিল।’’ তাঁর যুক্তি, "কারও কারও বাবা-মা চাষের কাজে মাঠে ছিলেন।’’ ঘাটালের বিদ্যাসাগর হাইস্কুলের প্রধানশিক্ষক পঙ্কজ ভুঁইয়া, বসন্তকুমারী বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষিকা বীনা মান্না বলেন, ‘‘বিধি মেনেই এদিন অভিভাবকদের হাতে মার্কশিট তুলে দেওয়া হয়েছে।’’ গোয়ালতোড়ের আমলাশুলি ইন্দ্রনারায়ণ উচ্চবিদ্যালয়ে প্রধানশিক্ষক অভিজিৎ শিকদার মানছেন, ‘‘উৎকন্ঠায় থাকা কিছু ছাত্রছাত্রী উৎসাহে চলে আসে স্কুলে, তবে আমরা বিধি মেনে অভিভাবকদের হাতেই মার্কশিট তুলে দিয়েছি।’’ প্রায় একই ছবি খড়্গপুর মহকুমাতেও। এদিন খড়্গপুর আইআইটি চত্বরে অবস্থিত হিজলি হাইস্কুলে করোনা বিধি লঙঘন করে মার্কশিট বিলি করা হয়েছে বলে অভিযোগ। স্কুলের প্রধানশিক্ষক রবিশঙ্কর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অভিভাবকেরা হুড়োহুড়ি করায় করোনা বিধি পালনে ফাঁক থেকে গিয়েছে।’’
ঝাড়গ্রাম শহরের কুমুদকুমারী ইনস্টিটিউশনের অভিজিৎ মান্না, সাগর শ্যামলরা বিনা মাস্কেই স্কুলে হাজির হয়েছিল মার্কশিট নিতে। দু'জনের জবাব, ‘‘বাড়িতে কেউ না থাকায় এসেছি।’’ মাস্ক কোথায়? তড়িঘড়ি স্কুটি চালিয়ে স্কুল চত্বর ছাড়ার আগে দু'জনেরই সাফাই, ‘‘এই মাত্র মাস্ক খুলে পকেটে রেখেছি।’’ এই স্কুলের বটতলাতেও অনেকে স্কুলের পোশাক পরে জড়ো হয়। ইনস্টিটিউশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক নিরঞ্জন মান্নার দাবি, ‘‘পরীক্ষার্থীদের আসতে বারণ করা হয়েছিল। কেউ এসেছিল কিনা আমার কাছে খবর নেই।’’ তিনি জানান, এই স্কুল চত্বরেই করোনার প্রতিষেধক দেওয়ার শিবির হয়েছে, তাই মূল গেট খুলে রাখতে হয়েছে। বাণীতীর্থ হাইস্কুল, ননীবালা হাইস্কুলেও দেখা যায় ছাত্রছাত্রীদের। গোপীবল্লভপুরের নয়াবসান জনকল্যাণ বালিকা বিদ্যাপীঠে এদিন অভিভাবকদের তুলনায় ছাত্রীরা বেশি চলে। অনেকের মাস্কও ছিল না।
ব্যতিক্রমী ছবিও দেখা গিয়েছে। ‘রানি বিনোদমঞ্জরী রাষ্ট্রীয় বালিকা বিদ্যালয়ে’র দরজার ছিল কড়া পাহারা। কেবলমাত্র রেজিষ্ট্রেশন সার্টিফিকেট দেখে একজন করে অভিভাবককে ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হয়। প্রধানশিক্ষিকা পুষ্পলতা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নির্দেশ মতো পদক্ষেপ করা হয়েছে। সমাজমাধ্যমে বলে দেওয়া হয় কোনও ছাত্রীর স্কুলে আসা চলবে না।’’ অরণ্যশহরের শ্রীরামকৃষ্ণ সারদাপিঠ গার্লস হাইস্কুলে এ দিন মার্কশিট দেওয়া হয়নি। আজ, বুধবার অভিভাবকদের স্কুলে আসতে বলা হয়েছে। দূরবর্তী হওয়ায় যোগাযোগের অসুবিধার জন্য গড়বেতার নোহারি হাইস্কুলেও এ দিন মার্কশিট দেওয়া হয়নি। স্কুলের প্রধানশিক্ষক দেবনারায়ণ দত্ত বলেন, ‘‘দূরবর্তী হওয়ায় যোগাযোগের সমস্যার জন্য এদিন মার্কশিট দেওয়া হয়নি। বুধবার অভিভাবকদের আসতে বলেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy