সীতারাম ইয়েচুরি। —ফাইল চিত্র।
পঁচাত্তরের গেরোয় দুই কমিউনিস্ট পার্টি। সীতারাম ইয়েচুরির প্রয়াণের পরে আপাতত প্রকাশ কারাট সিপিএমের পলিটব্যুরোয় সমন্বয়ের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। কিন্তু সিপিএমের পরবর্তী সাধারণ সম্পাদক কে হবেন, তা নিয়ে ধাঁধায় পড়েছেন দলের নেতারা। কারণ সিপিএমের দলীয় নিয়ম অনুযায়ী, ৭৫ বছর বয়সে অবসরের সময়সীমা মেনে আগামী এপ্রিলে মাদুরাই পার্টি কংগ্রেসে প্রকাশ কারাট, বৃন্দা কারাট, মানিক সরকার, সুভাষিণী আলি, পিনারাই বিজয়ন, সূর্যকান্ত মিশ্র, জি রামাকৃষ্ণণের মতো অন্তত সাত জন একই সঙ্গে পলিটব্যুরো তথা কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বাদ পড়ে যাওয়ার কথা। ইয়েচুরির উত্তরসূরী হিসেবে এঁদের মধ্যে বেশ কয়েক জন সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নিতে পারতেন। অথচ ২০২২-এই কান্নুরের পার্টি কংগ্রেসে ৭৫ বছরের অবসরের নিয়ম ঠিক হয়েছিল।
একই সমস্যায় পড়েছে সিপিআই-ও। সিপিএমের মতো সিপিআই-ও কেন্দ্র ও রাজ্য নেতৃত্ব থেকে ৭৫ বছরে অবসরের সময়সীমা ঠিক করেছিল। সেই নিয়ম মেনে এ বার সিপিআইয়ের জাতীয় কর্মসমিতি থেকে এক সঙ্গে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ডি রাজা,
আজিজ পাশা, পল্লব সেনগুপ্ত, কে নারায়ণ, নগেন্দ্র নাথ ওঝার বাদ পড়ে যাওয়ার কথা। দিল্লিতে সিপিআইয়ের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। কারণ সিপিএমের মতো সিপিআইয়েরও আগামী বছর পার্টি কংগ্রেস। তার দিনক্ষণ এই বৈঠকেই ঠিক হবে। তার উপরে সিপিআই এ বার দলের শতবর্ষ উদযাপন করবে।
এই পরিস্থিতিতে সিপিএম, সিপিআই, দুই দলেই আলোচনা শুরু হয়েছে, বর্তমান কঠিন পরিস্থিতির কথা ভেবে অবসরের নিয়ম শিথিল করা যায় কি না। সিপিএম নেতারা বলছেন, সাত জন শীর্ষ পলিটব্যুরো সদস্য সরে গেলে দলের মুখ কে হবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। কারণ সে ক্ষেত্রে এম এ বেবি এবং বি ভি রাঘাভুলু সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক পদের দৌড়ে থাকবেন। দু’জনের কেউই জাতীয় রাজনীতিতে বা দিল্লির রাজনৈতিক মহলে পরিচিত মুখ নন। কেরলের নেতা এম এ বেবি সাধারণ সম্পাদক হবেন কি না, তার সবটাই নির্ভর করবে কেরলের রাজ্য নেতৃত্বের উপরে। একটি সূত্রের মতে, কেরলের সিপিএম নেতৃত্ব বেবির বদলে এ বিজয়রাঘবনকে সাধারণ সম্পাদক পদে চাইতে পারেন। সিপিএম সূত্র বলছে, গত পার্টি কংগ্রেসের সময়ই পিনারাইয়ের বয়স ৭৫ বছর পেরিয়ে গেলেও একমাত্র বাম সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তাঁর জন্য নিয়ম শিথিল হয়েছিল। এ বার আরও কয়েক জনের জন্য নিয়ম শিথিল করতে হতে পারে।
সিপিআই-এর একাংশ নেতা মনে করছেন, ডি রাজা জাতীয় রাজনীতিতে পরিচিত মুখ। সেই হিসেবে নিয়ম শিথিল করে তাঁকে সাধারণ সম্পাদক পদে রেখে দেওয়া উচিত। কিন্তু প্রবীণ নেতাদের অনেকেই অবসরের নিয়ম মেনে সরে যাওয়ার পক্ষে। রাজার বদলে সিপিআইয়ের শ্রমিক সংগঠনের নেত্রী অমরজিৎ কউরকে অনেকেই সাধারণ সম্পাদক পদে দেখতে চান। কিন্তু তিনি এআইটিউসি-র কাজ ছেড়ে আসতে চাইবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
দুই কমিউনিস্ট পার্টির নেতারাই বলছেন, দলে নতুন মুখ তুলে আনার জন্য ৭৫ বছরের অবসরের বয়স ঠিক হয়েছিল। এখন দেখা যাচ্ছে, দলের মুখ কে হবেন, তা নিয়েই সমস্যা!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy