গত বছরে বাসুদেবপুরে জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রার দৃশ্য। নিজস্ব চিত্র।
বাধা করোনা। তাই গত বছরের মতো এ বারেও টান পড়বে না রথের রশিতে। কারণ মাসীর যেতে রথে চড়বেন না প্রভু জগন্নাথ, সুভদ্রা ও বলরাম। শুধুই আচার মেনে জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রার পর রথের দিন সেবাইতদের কোলে চড়ে মাসির বাড়ির গুন্ডিজা মন্দিরে আসবেন তাঁরা। রথের দিনে ভক্তদের মন্দিরে প্রবেশের কোনও অনুমতি নেই। পুজোর জন্য মন্দিরে কেবল সেবাইতরাই প্রবেশ করতে পারবেন। রথযাত্রা না হওয়ায় বসছে না মেলাও।
এগরা মহকুমার তিন শতাব্দীর প্রাচীন বাসুদেবপুর রথযাত্রা ঘিরে এলাকার মানুষের উৎসাহ থাকে বরাবরই। কথিত আছে বাসুদেবপুরের রাজা জগন্নাথের মন্দির তৈরি করেছিলেন। বাসুদেবপুরে শেষ রাজা দুর্গাদাস রায়ের উত্তরসূরিদের সঙ্গে পুরীর রাজ পরিবারের সুসম্পর্ক ছিল। সেই থেকে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের আচার মেনেই বাসুদেবপুরেও জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা পূজিত হন। পুরীর মন্দিরের রীতি মেনেই বাসুদেবপুরে আজ জগন্নাথ দেবের স্নান যাত্রার যাবতীয় আয়োজন প্রস্তুত রাখা হয়েছে। স্নানযাত্রায় কেবল মন্দিরের সেবাইতরাই থাকবেন। আগে জগন্নাথদেবের সুবিশাল মন্দির থাকলেও এখন তা ভগ্নস্তূপে পরিণত। মন্দিরের পাশে অস্থায়ী মন্দিরে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা অধিষ্ঠান করেন। সম্প্রতি মন্দির পরিচালন কমিটি নতুন মন্দির তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে।
আগে সোজা ও উল্টো রথের দিন এলাকায় জমাটি মেলা বসতো। মেলায় হাজার হাজার মানুষের সমাগম হত। করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় গত বছর প্রশাসনের নির্দেশে মেলা বন্ধ ছিল। এবারও করোনা দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে প্রশাসন ও রথ পরিচালনা কমিটি মেলা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রথে চড়ে মাসির বাড়িও যাওয়া হবে না জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার। পরিবর্তে রথের দিন সেবাইতদের কোলে চড়ে মাসির বাড়ি গুন্ডিজা মন্দিরে আসবেন তিন ভাইবোন। বাসুদেবপুর জগন্নাথ মন্দির পরিচালন সমিতির সভাপতি পার্থসারথি দাস বলেন, ‘‘করোনার জন্য ভিড় এড়াতে মেলা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে সমস্ত রীতিনীতি মেনেই জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার পুজো হবে। রথের দিন মন্দিরে সেবাইতরা ছাড়া ভক্তদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
পটাশপুরে টেপরপাড়া নন্দ পরিবারের রথও প্রায় দেড়'শো বছরের পুরনো। প্রশাসনের নির্দেশ মেনে এখানেও রথের মেলা বসবে না। টেপরপাড়া রথের মেলা ঘিরে এলাকার মানুষের রুটি রুজি জড়িয়ে থাকে। মাদুর ও ফলের চারা বিক্রিতে জেলার মধ্যে এই মেলার সুনাম রয়েছে। দূরদূরান্ত থেকে নার্সারি মালিকেরা মেলায় ফল ও ফুলের চারা বিক্রির জন্য আসেন। পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং এলাকার অধিকাংশ মানুষ মাদুর শিল্পের উপর নির্ভরশীল। টেপরপাড়া রথের মেলার মাদুর বিক্রির জন্য তাঁরাও সারা বছর ধরে অপেক্ষা করে থাকেন। কিন্তু করোনার কারণে মেলা বন্ধ থাকায় সকলেই হতাশ। টেপরপাড়া জগন্নাথ মন্দিরের সেবাইত মৃণালকান্তি নন্দ বলন, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে মানুষের সুরক্ষায় মেলা বন্ধ থাকবে। শুধুই আচার মেনে রথযাত্রার অনুষ্ঠান পালন করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy