করোনা-কালে কমেছে শিশুশ্রম। এমনই দাবি পশ্চিম মেদিনীপুরের চাইল্ড লাইনের এক সূত্র। করোনা ভীতিই এর অন্যতম কারণ দাবি করে ওই সূত্র জানিয়েছে, কোথাও শিশুশ্রমিক আছে বা কাজ করছে, এমন খোঁজ দিয়ে একটি ফোনও চলতি বছরে জেলা চাইল্ড লাইনে আসেনি। অথচ, গত বছরও জেলার নানা জায়গা থেকে ২০ জন শিশুশ্রমিককে উদ্ধার করা হয়েছিল।
চাইল্ড লাইনের জেলা কো-অর্ডিনেটর বিশ্বনাথ সামন্ত মানছেন, ‘‘এ বছর এখনও পর্যন্ত আমরা একজন শিশুশ্রমিকও পাইনি। কোনও অভিযোগও আসেনি। তবে শিশুশ্রমিক উদ্ধারে আমাদের ও পুলিশের তৎপরতা আছে। জেলা শিশু সুরক্ষা সমিতি এবং জেলা শিশু কল্যাণ সমিতির নজরদারি আছে।’’ জেলা শিশু কল্যাণ সমিতির এক সদস্যের মতে, ‘‘কমবয়সীদের করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। তাই করোনা-কালে অভাবী পরিবারের বাবা-মায়েরাও তাঁদের ছেলেমেয়েদেরকে বাড়িতে রাখার চেষ্টা করছেন।’’
ভয়ে উল্টো ছবি কোথায় কত দাসপুর ৫ ঘাটাল ৪ চন্দ্রকোনা ১ মেদিনীপুর ৩ খড়্গপুর ৩ মোহনপুর ১ পিংলা ১ সবং ২ (গত বছর পশ্চিম মেদিনীপুরের এলাকা ভিত্তিক শিশুশ্রমিক উদ্ধারের তথ্য। সূত্র: চাইল্ডলাইন)
জেলা প্রশাসনের এক সূত্র আরও মনে করিয়ে দিচ্ছে, জেলায় যে সমস্ত শিশুশ্রমিকের খোঁজ মেলে তাদের অনেকেই ভিন্ জেলার বাসিন্দা। বাবা-মা কাজে এলে ছেলে-মেয়েকেও নিয়ে আসেন। করোনা-পরিস্থিতিতে পরিযায়ীরা নিজ নিজ জেলায় ফিরে গিয়েছেন। সেটাও শিশু শ্রমিকের সংখ্যা কমার একটি কারণ হতে পারে।
পশ্চিম মেদিনীপুরে ৪১টি শিশুশ্রমিক স্কুলে প্রায় ১,৬০০ পড়ুয়া পড়ে। সেই স্কুলগুলিও বন্ধ। তবে সেখানে এখন পড়ুয়াদের মাসে একবার করে চাল, ডাল, আলু দেওয়া হচ্ছে। হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ারও দেওয়া হয়েছে এ মাসে। ‘স্টাফ অ্যাসোসিয়েশন অফ ন্যাশনাল চাইল্ড লেবার ওয়েলফেয়ার স্কুল’-এর জেলা শাখার সম্পাদক তথা পিঁড়াকাটা শিশুশ্রমিক স্কুলের ইনস্পেক্টর গোপালচন্দ্র বসু বলেন, ‘‘স্কুল বন্ধ। তবে আমরা অভিভাবকদের থেকে পড়ুয়াদের খোঁজখবর রাখছি।’’ তিনিও মানছেন, যাঁরা শিশুশ্রমিকদের কাজে রাখতেন, সংক্রমণের আশঙ্কায় তাঁরাও এখন কাজে রাখছেন না।
তবে শিশুশ্রম একেবারে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে তা নয়। করোনা-কালে ঘরবন্দি এক শিশুশ্রমিকের কথায়, ‘‘বাড়িতে টাকার দরকার হয়। না হলে খাওয়া জোটে না। তাই দিনমজুরি করতে বাধ্য হই।’’ করোনা-ভীতি কাটলেই ফের শিশুশ্রমিক পাওয়া যাবে বলে আশঙ্কা অনেকের। স্কুলছুট থেকেই মূলত শিশুশ্রমিক তৈরি হয় মনে করিয়ে শালবনির মৌপাল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রসূনকুমার পড়িয়া বলেন, ‘‘শিশুশ্রম নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি শিশুদের স্কুলমুখী করতে আরও সক্রিয়তার প্রয়োজন।’’
জেলা শিশু কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান শান্তনু ভুঁইয়া জানালেন, শিশুশ্রমিক উদ্ধার করে তার পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়। শিশুশ্রম রোধে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। নানা পদক্ষেপ ফলপ্রসূও হয়েছে। আর জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘স্কুলছুটের সংখ্যা প্রতি বছরই কমছে। তবে একটি সংখ্যায় স্কুলছুট থাকে। তাদের স্কুলে ফেরাতে নানা পদক্ষেপও করা হয়।’’
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy