Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
থাকছে কোল্ড চেন পয়েন্ট
Coronavirus in Midnapore

টিকা সংরক্ষণে বিশেষ কুলার

জেলায় সবমিলিয়ে ৩টি ‘ওয়াক ইন কুলার’ তৈরি হচ্ছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

বরুণ দে
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২০ ০২:৫৩
Share: Save:

করোনা টিকা (কোভিড ভ্যাকসিন) সামনের জানুয়ারিতেই চলে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই মতোই জেলায় টিকা সংরক্ষণ করে রাখার মতো জায়গা ঠিক করার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। টিকা সংরক্ষণের জন্য বিশেষ কুলার তৈরি হচ্ছে পশ্চিম মেদিনীপুরেও। পোশাকি নাম ‘ওয়াক ইন কুলার’। এতে প্রচুর সংখ্যক টিকা সংরক্ষণ করে রাখা যাবে।

জেলায় সবমিলিয়ে ৩টি ‘ওয়াক ইন কুলার’ তৈরি হচ্ছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। জেলাশাসক রশ্মি কমল মানছেন, ‘‘করোনা টিকা সংরক্ষণে ওয়াক ইন কুলার সহ জেলায় প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে।’’ জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গীর আশ্বাস, ‘‘দ্রুতই এই প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরির কাজ শেষ হবে।’’ জানুয়ারির যে কোনও সপ্তাহে করোনা টিকা জেলায় পৌঁছনোর সম্ভাবনা রয়েছে। তাই টিকা আসার আগেই তা যথাযথ সংরক্ষণের ব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় প্রয়োজনীয় অনান্য প্রস্তুতি সেরে ফেলা হচ্ছে।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, একাধিক ধাপে এই কুলার তৈরি হয়। এ ক্ষেত্রে শুরুতে মেঝেতে মোটা করে ঢালাই দেওয়া হয়। তার উপরে একটি ঘর তৈরি করা হয়। এই ঘরের তাপমাত্রা ২ থেকে ৮ ডিগ্রি পর্যন্ত রাখা যেতে পারে। এর কম নয়, বেশিও নয়। ঠান্ডা ঘরের থেকে গরম হাওয়া বেরোনোর সম্ভাবনা থাকেই। তাই ঘরে বড় এগজ়স্ট ফ্যান লাগানো হয়। অত্যাধুনিক জেনারেটর বসাতে হয়। জানা যাচ্ছে, এই বিশেষ কুলারে ন্যূনতম ১০-১৫ হাজার টিকা সংরক্ষণ করে রাখা যেতে পারে। ঘরটি আকারে বড় হলে টিকার সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এই বিশেষ কুলারে ন্যূনতম দুই থেকে আড়াই মাস পর্যন্ত টিকা সংরক্ষণ করে রাখা যেতে পারে। পশ্চিম মেদিনীপুরে এর আগে একটিও ‘ওয়াক ইন কুলার’ ছিল না। করোনা টিকা সংরক্ষণের জন্যই এই বিশেষ কুলার তৈরি হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে রাজ্যের নির্দেশও ছিল।

প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, সম্প্রতি মেদিনীপুরে করোনা মোকাবিলায় গঠিত জেলাস্তরের টাস্কফোর্সের এক বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে ছিলেন জেলাশাসক তথা ওই টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান রশ্মি কমল। ছিলেন স্বাস্থ্য দফতর, আইএমএ-র কর্তারাও। জেলায় টিকা বন্টনের এবং সংরক্ষণের পদক্ষেপ কী হবে, সে নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কোল্ড চেন পয়েন্ট, ডিপ ফ্রিজ প্রভৃতিতেও কিছু সময়ের জন্য টিকা রাখা যেতে পারে। জানা যাচ্ছে, পশ্চিম মেদিনীপুরে কোল্ড চেন পয়েন্ট রয়েছে ৪৫টি, রেফ্রিজারেটর রয়েছে ২১৮টি, ডিপ ফ্রিজ রয়েছে ৯৭টি। প্রায় সব ব্লকেই কোল্ড চেন পয়েন্ট রয়েছে। টিকা দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রশিক্ষণ শুরুও হয়েছে। টিকা দেওয়া শুরু হওয়ার আগে সাধারণ মানুষের সুবিধার জন্য একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হতে পারে। একটি পোর্টাল তৈরি করা হতে পারে। সেখানে টিকার তথ্য নথিভুক্ত রাখা হতে পারে।

জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিক মানছেন, ‘‘টিকা মজুত করতে কোথায় কোথায় কী পরিকাঠামো রয়েছে তা দেখা হয়েছে। জেলায় পর্যাপ্ত কোল্ড চেন পয়েন্ট রয়েছে। এখানে টিকা সংরক্ষণ করে রাখা যায়।’’ টিকাগুলি প্রথম পর্যায়ে বিশেষ কুলারেই রাখার কথা। শুরুতে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের টিকা দেওয়া হবে।

এঁদের নাম নথিভুক্ত হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরে সরকারি এবং বেসরকারি, দুই ক্ষেত্র মিলিয়ে চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন ২৫,৭৫০ জন। এর মধ্যে ফিল্ড লেভেল হেলথ ওয়ার্কার রয়েছেন ৬,৯৪৭ জন, নার্স এবং সুপারভাইজার ২,১৫৫ জন, মেডিক্যাল অফিসার ৭৪১ জন, মেডিক্যাল পড়ুয়া ৩২২ জন, প্যারামেডিক্যাল স্টাফ ৭৪৮ জন, সাপোর্ট স্টাফ ২,৫৩১ জন, অন্য কর্মী ৭,৭৫৮ জন, ক্লারিক্যাল স্টাফ ৮৯৯ জন এবং ভিলেজ লেভেল ওয়ার্কার রয়েছেন ৩,৬৪৯ জন। এক-একজনকে ২৮ দিনের ব্যবধানে দু’বার টিকা নিতে হয়। জেলায় শুরুতে ৪৫-৫০ হাজার করোনা টিকা আসতে পারে। জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘যে পরিকাঠামো রয়েছে এবং গড়ে তোলা হচ্ছে, তাতে জেলায় টিকা সংরক্ষণে কোনও রকম কোনও সমস্যা হবে না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in Midnapore COVID-19 vaccines
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy