প্রতীকী ছবি।
গত ২৪ অক্টোবর পুরসভার এক ইঞ্জিনিয়ারের করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। রেলশহরের বিবেকানন্দপল্লি এলাকার বাসিন্দা বছর তিরিশের ওই যুবক বাড়িতেই হোম আইসোলেশনে থেকে সুস্থ হয়ে ওঠেন। তবে পুনরায় পরীক্ষা না হওয়ায় জানতে পারেননি, তিনি নেগেটিভ কি না! এমনকি মেলেনি সুস্থতার সরকারি শংসাপত্রও, অভিযোগ এমনটাই।
একই ঘটনা ঘটেছে শহরের ঝাপেটাপুরের বাসিন্দা গোলবাজারের আসবাবপত্রের দোকানের কর্মীর সঙ্গেও। গত ৪ নভেম্বর করোনা পরীক্ষায় তিনি পজ়িটিভ হয়েছিলেন। এর পরে মৃদু উপসর্গ থাকলেও, হোম আইসোলেশনে থেকে আপাতত তিনি সুস্থ। করোনা পরীক্ষার ১৭ দিন পর হাসপাতাল থেকে ফোন করে জানানো হয়েছে, তিনি সুস্থ। অথচ এখনও পর্যন্ত তিনিও পাননি সুস্থতার শংসাপত্র।
খড়্গপুর শহরে করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা বহু মানুষ এখনও পর্যন্ত সুস্থতার শংসাপত্র বা ‘ফিট সার্টিফিকেট’ পাননি। অনেকে চাকরিতে যোগ দিতে নিজের উদ্যোগে ফের পরীক্ষা করে নেগেটিভের রিপোর্ট নিয়েছেন। তবে স্বাস্থ্য দফতরের নিয়ম অনুযায়ী, এখন করোনা পজ়িটিভ হওয়ার ১৪ দিন পরে নতুন করে পরীক্ষার প্রয়োজন নেই। কিন্তু এ ক্ষেত্রে হোম আইসোলেশনে থাকা রোগীরা পাবেন সুস্থতার শংসাপত্র। অথচ পজিটিভ হওয়ার একমাস পরেও এখনও সেই শংসাপত্র পাননি বহু মানুষ। বিষয়টি নিয়ে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিমাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, “হোম আইসোলেশনে থাকা পজ়িটিভ রোগীদের ১৭ দিন পরে ফিট সার্টিফিকেট দেওয়ার কথা। কোথায় সমস্যা হচ্ছে, নিশ্চয়ই খতিয়ে দেখব।”
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৭ অগস্ট স্বাস্থ্য দফতর ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই সুস্থতার শংসাপত্র বা ফিট সার্টিফিকেট দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। মূলত হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীরা সুস্থ হওয়ার পরে ‘ডিসচার্জ সার্টিফিকেট’ পান। কিন্তু হোম আইসোলেশনে থাকা রোগীদের সুস্থ হওয়ার পরে প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখেই এই ‘ফিট সার্টিফিকেট’ দেওয়ার নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছিল। কথা ছিল ১৭ দিনের মাথায় বাড়িতে পৌঁছবে ওই শংসাপত্র। গত ১ নভেম্বর পজ়িটিভ হয়েছিলেন মালঞ্চর বালাজি মন্দিরপল্লি এলাকার এক মহিলা। তিনি বলেন, “আমি হোম আইসোলেশনে ছিলাম। দু’বেলা ফোন ছাড়া একটা ওষুধ পর্যন্ত স্বাস্থ্য দফতর দেয়নি। নিজেদের খরচ করে বাড়ি জীবাণুমুক্ত করতে হয়েছে। ২২ নভেম্বর পর্যন্ত কোনও সুস্থতার শংসাপত্র দেওয়া হয়নি। সুস্থতার শংসাপত্র না থাকায়, একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরবর্তী চিকিৎসার জন্য সিটি স্ক্যান করাতে গিয়েও ফিরে আসতে হয়েছে।”
এমন পরিস্থিতিতে সমস্যায় পড়েছেন বিভিন্ন কল-কারখানার কর্মীরা। নিমপুরার বাসিন্দা স্থানীয় একটি মেটালিক্স কারখানার শ্রমিক সুস্থতার শংসাপত্রের অভাবে চাকরিতে যোগ দিতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে অবশ্য খড়্গপুরের অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস পাল বলেন, “ফিট সার্টিফিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তা বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব পুরসভার স্বাস্থ্য কর্মীদের। সেটা আমি পুরসভার স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy