Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
রাশ নেই সংক্রমিতের সংখ্যায়, ভয় বাড়ছে ভাইরাসে
Coronavirus in Midnapore

আক্রান্ত প্রসূতিকে কোভিড হাসপাতালে ভর্তির আর্জি

পরিবারের আর্জি, আর্থিক কারণে মহিলাকে সরকারি করোনা হাসাপাতালে ভর্তি করানো হোক।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোলাঘাট শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২০ ০৬:৫১
Share: Save:

নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন প্রসূতি করোনায় আক্রান্ত। তাঁর চিকিৎসা ঘিরে টানাপড়েন!

পরিবারের আর্জি, আর্থিক কারণে মহিলাকে সরকারি করোনা হাসাপাতালে ভর্তি করানো হোক। প্রশাসনের আবার দাবি, প্রসূতিকে করোনা হাসপাতালে রেখে চিকিৎসায় সমস্যা রয়েছে। তাই তাঁকে নার্সিংহোমে আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা করানো হোক। আবার নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, তাঁদের করোনা চিকিৎসার মতো পরিকাঠামো নেই।

বৃহস্পতিবার কোলাঘাটের খন্যাডিহি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার এক অন্তঃসত্ত্বাকে কোলাঘাটে একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করান তাঁর পরিজন। মহিলার কোনও করোনা উপসর্গ ছিল না। তবে তাঁর অস্ত্রোপচারের সম্ভাবনা থাকায় নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ করোনা পরীক্ষার জন্য লালারসের নমুনা সংগ্র করেন। কর্তৃপক্ষের দাবি, তাঁরা ওই রিপোর্ট আসার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু মহিলার শারীরিক অবস্থার অবনিত হওয়ায় শনিবার দুপুরে অস্ত্রোপচার করা হয় মহিলার। তিনি এক সন্তানের জন্ম দেন।

এ দিকে, ওই সন্ধ্যায় প্রসূতির করোনা পজ়িটিভ রিপোর্ট আসে। এর পরেই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ তাঁকে করোনা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। প্রসূতির পরিবারের দাবি, কোনও বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে রেখে করোনা চিকিৎসা করানোর তাঁদের সামর্থ্য নেই। সে জন্য তাঁরা কোলাঘাটের বিডিও’র কাছে যান, যাতে প্রসূতিকে সরকারি কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করানোর ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু অভিযোগ, ব্লক প্রশাসন তাতে সাড়া দেয়নি। ওই প্রসূতির স্বামী বলেন, ‘‘আমি হোসিয়ারি শ্রমিক। লকডাউনে হাতে কাজ নেই। এখন নার্সিংহোমে রেখে করোনা চিকিৎসা করানোর টাকা আমার নেই। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ আমার স্ত্রীকে সরকারি কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করানো হোক।’’ ওই প্রসূতিকে সরকারি কোভিড হাসপাতালে ভর্তির ব্যাপারে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং জেলাশাসককে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে আবেদন জানিয়েছে হাসপাতাল ও জনস্বাস্থ্য রক্ষা সংগঠন।

প্রসূতির পরিবারের আর্জি প্রসঙ্গে কোলাঘাটের বিডিও মদন মণ্ডল বলেন, ‘‘ওই প্রসূতি করোনা পজ়িটিভ ঠিকই, কিন্তু ওঁর শরীরে কোনও উপসর্গ নেই। তাই ওঁকে নার্সিংহোমের আইসোলশন ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে। তাছাড়া, সরকারি কোভিড হাসপাতালে সদ্য প্রসূতিকে রেখে চিকিৎসা করার ক্ষেত্রে অসুবিধা রয়েছে। কারণ, ওই হাসপাতালে শুধু করোনারই চিকিৎসা হয়। যদি প্রসূতির অন্য কোনও সমস্যা হয়, সে ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসায় অসুবিধা হতে পারে।’’

বিডিওর নির্দেশের পর রবিবার দুপুর থেকে ওই নার্সিংহোমেই প্রসূতির করোনার প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু হয় বলে দাবি পরিবারের। নার্সিংহোমের স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ বেলাল হোসেন বলেন, ‘‘কোরোনা রিপোর্ট না দেখে কোনও রোগীকে আমরা সিজার করি না। কিন্তু ওই সন্তানসম্ভবা মহিলার শারীরিক অবস্থার এতটাই অবনতি হয়েছিল যে আমরা শনিবার সিজার করতে বাধ্য হই। পরে তাঁর পজ়িটিভ রিপোর্টের ব্যাপারে বিডিও-কে জানাই। উনি জানিয়েছেন যে, আমাদের এখানে রেখেই চিকিৎসা করতে হবে। আমাদের নার্সিংহোমে কোভিড চিকিৎসার কোনও পরিকাঠামো নেই। আপাতত প্রসূতি আইসোলেশনে রেখে করোনা প্রাথমিক শুশ্রূষা করা হচ্ছে।’’ গোটা ব্যাপারে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘ওই পরিবারের প্রথমেই সরকারি হাসপাতালে আসা উচিত ছিল। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in Midnapore Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE