প্রতীকী ছবি
করোনা সংক্রমণের নিরিখে জ়োন ভাগ করা নিয়ে সংঘাত বেধেছে কেন্দ্র ও রাজ্যের। কেন্দ্র জানিয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুর 'রেড জ়োন' ভুক্ত। অথচ রাজ্যের দাবি, এই জেলা 'অরেঞ্জ জ়োনে' রয়েছে। সংঘাতের এই আবহে রাজ্য ও জেলার তথ্যেও ফারাক সামনে এসেছে। রাজ্যের তথ্য অনুযায়ী, পশ্চিম মেদিনীপুরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১২। কিন্তু জেলার তথ্য বলছে, করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হল ১১।
কেন এই ফারাক? সদুত্তর দেননি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা। তবে রাজ্যের তথ্য প্রকাশ্যে আসার পরেও গিরীশচন্দ্রের দাবি, ‘‘পশ্চিম মেদিনীপুরে এখনও পর্যন্ত ১১ জনই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ৩ জন ইতিমধ্যে রোগমুক্তও হয়েছেন।’’ জেলার অন্য এক স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘রাজ্যের তথ্যে ভুল রয়েছে। বিষয়টি ইতিমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হয়েছে।’’
জানা যাচ্ছে, জ়োন ভাগ নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্যের সংঘাতের আবহেই গত ৩০ এপ্রিল রাজ্যের তরফ থেকে জেলাওয়াড়ি করোনা আক্রান্তের তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। ওই দিন রাজ্য জানায়, পশ্চিম মেদিনীপুর অরেঞ্জ জ়োনে রয়েছে (ততক্ষণে কেন্দ্র অবশ্য জেলাকে রেড জ়োন ঘোষণা করেছে)। জেলা থেকে ‘কেস রিপোর্ট’ (করোনা পজ়িটিভ) হয়েছে ১২টি। সর্বশেষ ‘কেস রিপোর্ট’ হয়েছে ২৮ এপ্রিল। অথচ, ৩০ এপ্রিলই জেলায় আরও একজন আরপিএফ জওয়ান করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। রাজ্যের হিসেব অনুযায়ী, ৩০ এপ্রিলের ওই আক্রান্তকে ধরলে পশ্চিম মেদিনীপুরে এখনও পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৩। যদিও রাজ্যের তথ্যের সঙ্গে একমত নয় জেলা। জেলার স্বাস্থ্যভবন সূত্রে জানানো হয়েছে, এখনও পর্যন্ত পশ্চিম মেদিনীপুরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১১। জেলায় সর্বশেষ ‘কেস রিপোর্ট’ হয়েছে ৩০ এপ্রিল। জেলা আরও জানাচ্ছে, করোনায় এখানে এখনও একজনেরও মৃত্যু হয়নি।
জেলা স্বাস্থ্যভবনের এক সূত্রে খবর, রবিবার পর্যন্ত পশ্চিম মেদিনীপুরের করোনা আক্রান্তদের মধ্যে খড়্গপুরের ৭ জন রেলরক্ষী, দাসপুরে একই পরিবারের ৩ জন, ঘাটালের এক অ্যাম্বুল্যান্স চালক, দাঁতনের এক বৃদ্ধ এবং খড়্গপুর গ্রামীণের এক প্রৌঢ়া রয়েছেন। দাঁতনের বৃদ্ধের মৃত্যুও হয়েছে। তবে ওই বৃদ্ধের করোনা ধরা পড়েছে পড়শি রাজ্য ওড়িশায়। তাঁর মৃত্যুও সেখানে হয়েছে। অন্যদিকে, খড়্গপুর গ্রামীণের ওই মহিলার করোনা ধরা পড়েছে হাওড়ায়। তিনি সেখানেই এক হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন। নিয়মমাফিক দাঁতনের বৃদ্ধ খড়গপুর গ্রামীণের বৃদ্ধার নাম জেলার করোনা আক্রান্তের তালিকায় নেই| আর দাসপুরের ওই ৩ জন ইতিমধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। অর্থাৎ, তাঁরা রোগমুক্ত। সেই হিসেবে এখন জেলায় ‘অ্যাক্টিভ কোভিড- ১৯ কেস’-এর সংখ্যা ৮।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কয়েক দিন আগেই বিরোধীদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘এখন কেউ রাজনীতি করবেন না। আমিও রাজনীতি করব না।’ জেলায় রাজনৈতিক চাপানউতোর অবশ্য থেমে নেই। রাজ্য ও জেলার তথ্যে ফারাক নিয়ে বিঁধছে বিজেপি। বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাশের দাবি, ‘‘করোনা তথ্য লুকোচ্ছে প্রশাসন। সেই জন্যই হিসেব ঠিক রাখা যাচ্ছে না! তথ্যের কারচুপি মানুষ জেনে গিয়েছেন। করোনা পরীক্ষার হারও কম এখানে।’’ মু
খ্যমন্ত্রীর সুরেই বিজেপিকে পাল্টা বিঁধেছে তৃণমূলও। দলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, ‘‘গোটা দুনিয়ার মানুষ করোনা-ত্রস্ত। পরিজনদের নিয়ে চিন্তিত। বিজেপি ঘরে বসে রাজনীতি করছে। তবে ওরা সফল হবে না।’’
এই মুহূর্তে আক্রান্তের সংখ্যায় ফারাক ২। কার তথ্য ঠিক, কার তথ্য ভুল, রাজ্যের না জেলার, সে নিয়ে চর্চা চলছে। ভুল তথ্যের দায় কার, উঠছে সে প্রশ্নও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy