মেদিনীপুর শহরের একটি স্কুলে। নিজস্ব চিত্র
আশঙ্কাটা ছিলই। দিনের শেষ তাই সত্যি হল।
নির্দেশিকা অমান্য করেই পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের বেশ কিছু জায়গায় দেখা গেল, মিড ডে মিলের চাল ও আলু নিতে হাজির হল খুদে পড়ুয়ারা। বহু ক্ষেত্রে সুরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়াই বিলি হল চাল, আলু। স্কুল শিক্ষা দফতর নির্দেশ দিয়েছিল, সোমবার ৫টায় লকডাউন বা তালাবন্দি-দশা চালু হওয়ার আগেই বিলি বণ্টন সেরে ফেলতে হবে। জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, শুধুমাত্র অভিভাবকদেরই চাল আর আলু দিতে হবে। কোনওভাবেই পড়ুয়াদের হাতে দেওয়া যাবে না। কিন্তু জেলা জুড়ে একাধিক জায়গায় দেখা গিয়েছে এর উল্টো ছবি।
খড়্গপুর মহকুমার অধিকাংশ স্কুলে সতর্কতা লঙ্ঘন করেই চাল-আলু নিতে দেখা গেল অভিভাবকদের। কোথাও স্কুলগুলির পক্ষ থেকে আলাদাভাবে টেবিল করে ক্লাস অনুযায়ী বিলির সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও সেখানেও ১০-১২ জনের জমায়েত হতে দেখা গিয়েছে। জমায়েতে অধিকাংশেরই কোনও মাস্ক ছিল না। ছিল না স্যানিটাইজ়ারও। কয়েকটি স্কুল হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করলেও সেখানে সচেতনতার অভাব দেখা গিয়েছে। অবশ্য অনেকেই আতঙ্কের আবহে স্কুলে আসেনি। খড়্গপুর আইআইটি চত্বরে থাকা হিজলি জুনিয়র বেসিকে ৩৩০ জন পড়ুয়ার মধ্যে ১৫৪ জন পড়ুয়ার অভিভাবক এসে দু’কিলো করে চাল ও আলু নিয়ে গিয়েছেন। স্কুলের টিচার ইন-চার্জ প্রসেনজিৎ দে বলেন, “আমাদের স্কুল আইআইটি চত্বরে হওয়ায় অনেকেই ঢুকতে না পারার আশঙ্কায় আসেননি। তা ছাড়া কম সময়ে ফোন করে সকলকে জানানো সম্ভব হয়নি।’’
ঘাটালেও ছবিটা ছিল প্রায় এক। তবে এই মহকুমার একাংশ স্কুলে পরিস্থিতি বুঝে ছাত্রছাত্রীদের খালি হাতেই বাড়ি পাঠিয়ে দেন কর্তৃপক্ষ। পরে অভিভাবকেরা চাল-আলু সংগ্রহ করে নিয়ে যান। তৃ ঘাটালের বিডিও অরিন্দম দাশগুপ্ত বলেন, “স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিভাবকদের ডেকেছিলেন। কিন্তু ব্লক জুড়ে বিক্ষিপ্তভাবে পড়ুয়ারা হাজির হয়েছিল।”
এ দিন সকাল ১১টার আগে থেকেই গড়বেতা, গোয়ালতোড়, চন্দ্রকোনা রোড ব্লক এলাকার প্রাথমিক ও হাইস্কুলগুলিতে অভিভাবকেরা ভিড় জমান। চন্দ্রকোনা রোড, গড়বেতা এলাকার বহু স্কুলে চাল-আলু নিতে ভিড় করে পড়ুয়ারাই। শালবনির ভাদুতলা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অমিতেশ চৌধুরী বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের অভিভাবকদের চাল, আলু দেওয়া হয়েছে।’’ ঝাড়গ্রাম ব্লকের রাধানগর অঞ্চলের কিসমত ভরতপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা নিজেদের উদ্যোগে টোটো করে পড়ুয়াদের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে চাল-আলু বিলি করেছেন।
গোপীবল্লভপুরের মদনশোল প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকেরাও ট্রলিতে করে চাল-আলু পড়ুয়াদের বাড়ি-বাড়ি পৌঁছে দিয়েছেন। গোপীবল্লভপুরের করবনিয়া জুনিয়র হাইস্কুলে কোনও শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী না যাওয়ায় চাল-আলু বিলি করা নিয়ে সমস্যা হয়। পরে গোপীবল্লভপুর পশ্চিম চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের উদ্যোগে শিক্ষাবন্ধুদের দিয়ে চাল-আলু বিলি করা হয়। ওই স্কুল কর্তৃপক্ষকে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠিয়েছেন জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক। এ দিন ঝাড়গ্রামের ৯৪ শতাংশ স্কুলের অভিভাবকদের হাতে চাল-আলু তুলে দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy