প্রতীকী চিত্র। ছবি: শাটারস্টক
আজ, রবিবার সূর্যগ্রহণ। ভ্রান্ত ধারণা ঝেড়ে ফেলে করোনা বিধি মেনে এই মহাজাগতিক ঘটনা উপভোগের ডাক দিচ্ছেন বিজ্ঞান আন্দোলনের কর্মীরা। তবে গ্রহণ দেখানোর জন্য শিবির এ বার করোনার জেরে হচ্ছে না।
রবিবার সকাল ১০.৪৬ থেকে দুপুর ২.১৭ মিনিট পর্যন্ত চলবে বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণ। ভারতের বিভিন্ন এলাকায় তা দৃশ্যমান হবে। তবে এ বার কাঁটা হচ্ছে করোনা। জেলার বিভিন্ন স্থানে শিবির করে গ্রহণ দেখানোর আয়োজন করছে না বিজ্ঞান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত সংস্থা গুলি। যেমন ‘ব্রেক থ্রু সায়েন্স সোসাইটি’ শিবির করে ছাত্রছাত্রী ও সাধারণ মানুষকে সূর্যগ্রহণ দেখাচ্ছে না। অথচ গত ডিসেম্বরে সূর্যগ্রহণ দেখাতে গোটা পশ্চিম মেদিনীপুরে ৫২টি শিবির করেছিল সংগঠনটি। সোসাইটির জেলা সম্পাদক সিদ্ধার্থ ঘাটা বলেন, ‘‘করোনা সংক্রমণ আটকাতে দূরত্ব বজায় রাখা জরুরি। তাই শিবিরের ঝুঁকি নিচ্ছি না।’’
তবে এই সংস্থার পক্ষ থেকে ছাপানো প্রচারপত্র বিলি করে, সমাজ মাধ্যমে প্রচার করে এই মহাজাগতিক ঘটনা প্রত্যক্ষ করতে বলা হচ্ছে। সূর্যগ্রহণের নির্ঘণ্ট উল্লেখ করে প্রচারপত্রে সচেতনতার আর্জিও জানানো হয়েছে। সেখানে বার্তা— এই ঘটনার পিছনে কোনও অন্ধবিশ্বাস, কুসংস্কার নেই। আছে মহাজাগতিক নিয়ম। আর তার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা হল— নিজ অক্ষে পাক খেতে খেতে সূর্যকে কেন্দ্র করে পৃথিবী ও পৃথিবীকে কেন্দ্র করে চাঁদ উপবৃত্তাকার কক্ষপথে ঘুরতে ঘুরতে চাঁদ যখন সূর্য ও পৃথিবীর মাঝে এমনভাবে চলে আসে যে চাঁদের ছায়া পৃথিবীর যে অংশে পড়ে সেখানে সূর্য আড়ালে চলে যায়, তখনই সূর্যগ্রহণ হয়। ‘সান ফিল্টার’ দিয়ে সূর্যগ্রহণের বিরল দৃশ্য প্রত্যক্ষ করার আবেদন করেছে এই বিজ্ঞান সংস্থা।
শিবির করে এ বার সূর্যগ্রহণ দেখাচ্ছে না পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের শাখা খাকুড়দা বিজ্ঞান প্রযুক্তি মিলন মঞ্চ ও বেলদা বিজ্ঞান কেন্দ্র। উদ্যোক্তাদের সুব্রত গিরি বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতি তো আছেই। সেই সঙ্গে আকাশে মেঘের আনাগোনা। এ বার সূর্যগ্রহণ সব জায়গায় সমানভাবে দৃশ্যমানও নয়। তাই শিবির না করে ছাত্রছাত্রী-সহ উৎসুকদের বলেছি, সান ফিল্টারের সাহায্যে বাড়ির থেকেই প্রত্যক্ষ করতে।’’ গোয়ালতোড়ের আমলাশুলি হাইস্কুলে প্রতি মহাজাগতিক ঘটনা বিশেষ শিবির করে ছাত্রছাত্রীদের দেখানো হয়। এবার সূর্যগ্রহণ দেখানো হবে না করোনার জন্য। স্কুলের সহশিক্ষক রামপ্রসাদ পাল বলেন, ‘‘এ বার স্কুলে কোয়রান্টিন কেন্দ্র করেছে প্রশাসন। ভিন্ রাজ্য ফেরতরা সেখানে আছেন। তাই এ বার শিবির করে গ্রহণ দেখানো হচ্ছে না।’’
গ্রহণ নিয়ে এই সব বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যায় অবশ্য অনেকেরই বিশ্বাস নেই। তাঁরা কুসংস্কার বশে আজও গ্রহণ চলাকালীন খাবার না খাওয়া, রান্না না করার মতো প্রথা আঁকড়ে রয়েছেন। সেই অন্ধবিশ্বাসে আজও অনেকে সূর্যগ্রহণ দেখবেন না। গড়বেতার বাসন্তী সরখেল, হুমগড়ের শিখা চক্রবর্তীরা বলছিলেন, ‘‘গ্রহণ চলাকালীন খাওয়া যাবে না। গ্রহণ ছাড়লে তবেই দুপুরের খাবার খাব।’’
পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিমাইচন্দ্র মণ্ডল অবশ্য বলছেন, ‘‘গ্রহণের সময় অনেকে ভ্রান্ত ধারণার বশবর্তী হন। এর সঙ্গে বিজ্ঞানের কোনও সম্পর্ক নেই।’’ ভ্রান্ত ধারণা ঝেড়ে ফেলে করোনা বিধি মেনে সূর্যগ্রহণ উপভোগ করার আহ্বান জানিয়েছেন এই স্বাস্থ্যকর্তাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy