বগুড়ান জলপাইয়ের মৎস্য খটি। নিজস্ব চিত্র
সৈকতে গড়া হতে পারে পর্যটন আবাস। তা নিয়ে জোর বিতর্ক। মৎস্যজীবীদের অভিযোগ, তাঁদের খটি ‘দখল’ করে ওই আবাস তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। অন্য দিকে প্রশাসনের দাবি, বন দফতরের জমি দখল করে মৎস্যজীবীরা ওই খটিটি বানিয়েছেন।
কাঁথির অদূরে বগুড়ান জলপাইয়ে গত ছ’সাত দশক ধরে বঙ্গোপসাগরের তীরে মৎস্যজীবীদের খটি রয়েছে। ১৫ একর জুড়ে থাকা ওই জমিতে মূলত এলাকার প্রান্তিক মৎস্যজীবীরা সামুদ্রিক মাছ ধরে এনে শুকিয়ে শুটকি মাছ তৈরি করেন। ওই খটির উপর অন্তত ৩০০টি পরিবার নির্ভরশীল। পাকাপাকিভাবে সেখানেই থাকেন ৩৫টি পরিবার।
ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর, ওই এলাকায় পর্যটনের প্রসার বাড়াতে পর্যটন আবাস গড়ার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। এ জন্য তারা বন দফতরের জমিতে থাকা ওই খটি এলাকা পরিদর্শন করেছে। তবে এ নিয়ে এখনও কিছু চুড়ান্ত হয়নি। বগুড়ান জলপাইয়ের ২ নম্বর মৎস্য খটির সভাপতি জলদবরণ দাস বলেন, ‘‘গত অক্টোবরে স্থানীয় বিডিও লিপন তালুকদারের নেতৃত্বে প্রশাসনের প্রতিনিধিরা এলাকায় এসেছিলেন। তাঁরা খটি সরিয়ে নেওয়ার জন্য জানান। ওই জায়গাতে পর্যটকদের জন্য আবাসন গড়ে তোলা হবে বলে আমাদের জানানো হয়েছিল।’’
পর্যটকদের জন্য আবাসন বানানোর পরিকল্পনা প্রসঙ্গে বিডিও লিপন তালুকদার বলেন, ‘‘পর্যটন দফতর আবাসন গড়ার জন্য আমাদের এলাকা চিহ্নিত করতে বলেছিল। সেই মতো আমরা স্পট ভিজিট করেছি। এর পরে দফতর থেকে আমাদের এখনও কিছু জানানো হয়নি।’’
ইতিমধ্যেই এর বিরুদ্ধে একত্রিত হতে শুরু করেছেন মৎস্যজীবীরা। গত ২১ নভেম্বর বিভিন্ন মৎস্যজীবী সংগঠনের নেতৃত্ব সেখানের প্রান্তিক মৎস্যজীবীদের নিয়ে একটি সভা হয়। ওই খটির সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত খুটিয়া বলেন, ‘‘খটির জায়গা দখল করে পর্যটন আবাস গড়ে উঠলে প্রান্তিক সম্প্রদায়ের মৎস্যজীবীদের উপার্জন বন্ধ হয়ে যাবে। এর ফলে বংশানুক্রমিক ভাবে চলে আসা মৎস্যজীবীদের পেশা লুপ্ত হবে।’’
জীবিকা সংঙ্কটে পড়ে ওই এলাকার মৎস্যজীবীরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে এ ব্যাপারে লিখিতভাবে আর্জি জানিয়েছেন। খটি দখল না করে অন্যত্র পর্যটক আবাস গড়ে তোলার দাবি জানিয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক-সহ বিভিন্ন দফতরে স্মারকলিপিও দিয়েছেন তাঁরা। মৎস্যজীবীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন কাঁথি মহকুমা খটি মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি তথা মৈতনা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ প্রধান তমালতরু দাস মহাপাত্র। তিনি বলেন, ‘‘অবিলম্বে মৎস্যজীবীদের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখার জন্য রাজ্য সরকারের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা দরকার।’’
যদিও এ ব্যাপারে কোনও আপোস করা হবে না বলে জানিয়েছেন কাঁথির মহকুমাশাসক শুভময় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘যে জায়গায় খটি তৈরি করা হয়েছে, সেটি বন দফতরের। এভাবে সরকারি জমি দখল করে খটি বানানো যায় না। সরকারি নির্দেশ মেনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’
বন দফতরের জমিতে খটি গড়া প্রসঙ্গে মৎস্যজীবীদের তরফে দেবব্রতর দাবি, ‘‘কয়েক আগে মৎস্যজীবীদের পূর্বপূরষেরা হন দফতেরর কাছ থেকে মৌখিক অনুমতি নিয়েই খটি শুরু করেছিলেন।’’ কাঁথি রেঞ্জের বন আধিকারিক প্রদীপ সোরনের অবশ্য দাবি, ‘‘ওই জায়গায় খটি গড়তে বন দফতর কোনও অনুমতি দেয়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy