মেদিনীপুর মেডিক্যালে অপূর্ব মহন্ত ও তাঁর বাবা।—নিজস্ব চিত্র।
পুজো মণ্ডপের সামনে গাড়ি রাখা নিয়ে বচসা। তার জেরে অপূর্ব মহন্ত নামে এক এনভিএফ কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠল। মঙ্গলবার দুপুরে মেদিনীপুর শহরের ঘটনা। অপূর্ব শহরের কেরানিচটির বাসিন্দা। মারধরে অভিযুক্ত যুবকেরা অপূর্বর পাড়ারই বাসিন্দা। ঘটনায় মেদিনীপুর কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত যুবকদের খোঁজ চলছে।
পুলিশকর্মীকে মারধরের ঘটনা নতুন নয়। আগেও জেলায় পুলিশকর্মীরা প্রহৃত হয়েছেন। এ বার পুজোর সময়ও এই ঘটনা ঘটল। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “মেদিনীপুরের ওই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থাই নেওয়া হবে।”
ঘটনার সূত্রপাত সোমবার বিকেলে। মেদিনীপুর শহরের রাঙামাটিতে ট্রাফিক ডিউটি সামলাচ্ছিলেন অপূর্ব-সহ কয়েকজন পুলিশকর্মী। শহরের বড় পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম রাঙামাটি সর্বজনীন। ওই দিন পুজো মণ্ডপের মাঠের পাশে একটি গাড়ি এসে দাঁড়ায়। কয়েকজন ওই গাড়ি করে ঠাকুর দেখতে বেরিয়েছিলেন। গাড়ির চালক শিবা প্রসাদও কেরানিচটির বাসিন্দা। মাঠের পাশে গাড়ি রাখা নিয়ে আপত্তি করেন কর্তব্যরত এক পুলিশকর্মী। তিনি জানিয়ে দেন, এখানে গাড়ি রাখা যাবে না। যানজট হবে। অন্য এক জায়গায় গাড়ি রেখে আসার কথা বলেন তিনি।
অভিযোগ, শিবা গাড়ি সরাতে রাজি হননি। তিনি ওই পুলিশকর্মীর সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন। সহকর্মীর সঙ্গে ঝামেলা হচ্ছে দেখে এগিয়ে আসেন অপূর্ব। তিনিও ওখান থেকে গাড়ি সরিয়ে নেওয়ার কথা জানিয়ে দেন। শেষমেশ, স্থানীয় কয়েকজনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। মাঠের পাশ থেকে গাড়ি সরিয়ে নেন ওই চালক। তখনকার মতো গোলমাল মিটেও যায়।
পরদিন মঙ্গলবার দুপুরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পাড়ার মোড়ে গিয়েছিলেন অপূর্ব। তখন তিনি ডিউটিতে ছিলেন না। সেই সময় শিবা সহ কয়েকজন যুবক তাঁর উপর হামলা করে বলে অভিযোগ। ছেলেকে বাঁচাতে এলে অপূর্বর বাবাকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। তাঁদের দু’জনকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
অপূর্বর অভিযোগ, “রাঙামাটিতে আমার সঙ্গে ওর (শিবার) কোনও ঝামেলা হয়নি। ঝামেলা হয়েছিল আমার এক সহকর্মীর সঙ্গে। ও মাঠের সামনে গাড়ি রেখেছিল। ওটা গাড়ি রাখার জায়গা ছিল না। তাই সহকর্মী আপত্তি করেছিলেন। পরে আমিও আপত্তি করি। এতেই ওর রাগ। সে দিন কিছু বলেনি। মঙ্গলবার দুপুরে হঠাৎ কয়েকজনকে নিয়ে এসে মারধর করে।” তাঁর আরও অভিযোগ, “আমি পাড়ার ছেলে হয়েও কেন সেদিন গাড়ি রাখা নিয়ে আপত্তি করেছিলাম, এ কথাই ও বারবার বলছিল।”
ঘটনায় ক্ষুব্ধ একাংশ পুলিশকর্মীও। তাঁদের বক্তব্য, ডিউটি করতে গিয়ে কেউ সমস্যার মধ্যে পড়বেন, মার খাবেন, এটা অনভিপ্রেত। এ ক্ষেত্রে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থাই নেওয়া উচিত। কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে জেলা পুলিশও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy